বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে হচ্ছে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ মে ২০২১, ১০:৩২ পিএম
রবিবার (৩০ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: ভোরের কাগজ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে হচ্ছে ‘বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল’। এজন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এর মধ্যে ‘ডেভেপলমেন্ট চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
রবিবার (৩০ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমাদ কায়কাউস, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেলালুদ্দীন আহমদ, সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, প্রধানমনন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, পত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় প্রত্যাশা নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড ও মিরসরাই উপজেলা এবং ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। ইতোমধ্যে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ এখানে নিশ্চিত হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে জাপানের নিপ্পন, ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, যুক্তরাজ্যের বার্জার পেইন্টস, সিঙ্গাপুরের উইলমারসহ আরো অনেকে এবং দেশী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে পিএইচপি, বসুন্ধরা গ্রুপ, টি কে গ্রুপ ছাড়াও আরো নানা বিনিয়োগকারী।
এ শিল্পনগরে ইতোমধ্যে সরকারী বিভিন্ন সংস্থার সাথে বেজার সুসমন্বয়ের ফলে নির্মিত হয়েছে শেখ হাসিনা সরণি, দেশের সর্বপ্রথম সুপারডাইক, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গ্যাস সংযোগ, বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ। এ শিল্পনগরে বর্তমান ১৩টি শিল্প নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে আরও ১৫টি প্রতিষ্ঠান শিল্প নির্মাণের অংশ হিসেবে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। জুলাই মাস নাগাদ কমপক্ষে দুটি শিল্প কারখানা উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ শিল্পনগরে মাধ্যমে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কোভিড-১৯ মহামারীর সময়েও এ শিল্পনগরের জন্য প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব গৃহিত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে পবন চৌধুরী বলেন, বেজা এবং বেপজার মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বেজা আরেকটি মাইলফলক রচনা করেছে। এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং একটি শিল্পোন্নত, সমৃদ্ধ ও সুখী ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে আমরা আরো একধাপ এগিয়ে গেলাম। তিনি আরো বলেন, করোনাকালেও বাংলাদেশ বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে সমর্থ হয়েছে। শুধুমাত্র গত বছরেই বেজা ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে। অচিরেই বেজার অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অবস্থিত বেশ কিছু কারখানা পুরোদমে উৎপাদনে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বেজা এবং বেপজা এ মাইলফলকে অর্জনে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি আধুনিক, দ্রুত এবং মানসম্মত সেবা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বেজার কার্যক্রমের ফলে করোনাকালেও বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বের কাছে বিস্ময় বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে বেপজা ইতোমধ্যেই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ইপিজেডগুলোর মতো অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালনায়ও বেপজা সাফল্যের পরিচয় দেবে। সার্বিক সহযোগিতার জন্য তিনি বেজার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, উভয় সংস্থার মধ্যে এ সমন্বয় ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে। বেজা’র পক্ষে ডেভেলপমেন্ট চুক্তি স্বাক্ষর করেন নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী এবং বেপজা’র পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বেজা ও বেপজা’র উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারীগণ উপস্থিত ছিলেন।