×

জাতীয়

এনআইডি কার্যক্রম ইসিতে থাকা উচিত: সিইসি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২১, ০৫:৩৭ পিএম

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছ থেকে অন্য কোনো সংস্থার অধীন ন্যস্ত করা হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। তাই এটি ইসির অধীনেই থাকা উচিত। আর এনআইডি কার্যক্রম ইসি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গেলে নানা ধরনের জটিলতার বিষয়টি বিস্তারিত জানিয়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগকে আগামীকাল সোমবার (৩১ মে) চিঠি দেন সিইসি।

এ বিষয়ে আজ রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, এনআইডি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। ভোটার তালিকা ও এনআইডি কার্যক্রম আলাদাভাবে করা বাস্তবসম্মত না। এনআইডি কার্যক্রম অন্য কোনো সংস্থার হাতে গেলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে। তাই এটি ইসির অধীনেই থাকা উচিত।

তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কেবিনেটের কাছে লিখিত যুক্তি তুলে ধরবো। এজন্য এনআইডি মহাপরিচালককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাল চিঠি দেওয়া হবে।

আজ দুপুরে ইসি সার্ভিসেস এসোসিয়েশনের প্রায় ৪ শতাধিক কর্মকর্তা সিইসির সঙ্গে দেখা করে এনআইডি অন্যত্র দেবার বিরোধীতা করে দু পাতার একটি চিঠি দেন এবং এনআইডি কার্যক্রম যাতে ইসিতে থাকে তার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। এর পরে সিইসি জানান, আগামীকাল সোমবার (৩১ মে) তিনি মন্ত্রীপরিষদ বিভাগকে সব অসুবিধার বিষয়টি জানিয়ে একটি চিঠি দেবেন, যাতে এনআইডি সেবা ইসির এনআইডি উইং এর হাতে থাকে।

এ বিষয়ে ইসি সার্ভিসেস অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি নুরুজ্জামান তালুকদার ( আরইওি) ভোরের কাগজকে জানান, আমরা আজ ইসি সার্ভিসেস অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষ থেকে চারটি সংগঠনের প্রায় ৪ শতাধিক কর্মকর্তা সিইসির সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে একটি প্রতিবাদ পত্র দিয়েছি। আমরা বলেছি, যদি ইসির হাত থেকে এনআইডি সেবা স্বরাষ্ট্রে চলে যায় তাহলে সাংবিধানিক জটিলতা সৃষ্টি হবে। এতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাড়বে।

প্রতিটি উপজেলা -জেলা অফিস সেট আপসহ কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগে প্রচুর অর্থ ব্যয় হবে। তাছাড়া প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করতে সময় লাগবে। তিনি আরো বলেন, ভোটার লিস্ট তৈরি ইসির হাতে, সেক্ষেত্রে ভোটার লিস্টে দেওয়া ভোটারের তথ্য থেকে ৬-৭টি তথ্য নিয়ে এনআইডি কার্ড তৈরি করা হয়। সেক্ষেত্রে ইভিএমে ভোট দিতে সমস্যার সৃষ্টি হবে। কেননা, ভোটার লিষ্ট থাকছে ইসির হাতে আর এনঅঅইডি যদি অন্য সংস্থার কাছে থাকে তাহলে সাংবিধানিক জটিলতার সৃষ্টি হবে।

নুরুজ্জামান জানান, সিইসি আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন, তিনি এ বিষয়ে আগামীকাল সোমবার অসুবিধাগুলো তুলে ধরে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগকে চিঠি দেবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। এটি দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলে গেলে তিনি বিষয়টির সমস্যাগুলো অনুধাবন করে নিশ্চয় এনআইডি কার্ড ইসির হাতে রাখার অনুমতি দেবেন বলে জানিয়েছেন সিইসি।

গত ১৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এনআইডি কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নেওয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ মে নির্বাচন কমিশনকে এনআইডি কার্যক্রম ও লোকবল সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তর করার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এসব চিঠি চালাচালির মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে সিইসির সঙ্গে দুই দফা সাক্ষাৎ করেন। তাদের যুক্তি এনআইডি কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নিলে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটাদানে জটিলতা সৃষ্টি হবে। ভোটার সার্ভার নিয়ে তৈরি হবে সংকট। এছাড়া রাষ্ট্রের অর্থের বিরাট অপচয় হবে।

নুরুজ্জামান বলছেন, প্রায় ৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রায় ১৪ বছর ধরে এ কাজের সঙ্গে জড়িত। চাকরি জীবনের প্রায় অর্ধেক সময় ব্যয় করেছেন এর পেছনে। তারা কোনোভাবেই এটি অন্য দপ্তরের হাতে এটি দিতে চান না।

তাছাড়া নির্বাচন কমিশন ৫ শতাধিক থানা নির্বাচন অফিস, ৬৪ জেলা নির্বাচন অফিস, ১০ আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে সার্ভার বসিয়ে এনআইডি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতিমধ্যে প্রচুর প্রশিক্ষিত জনবলও তৈরি করেছে ইসি। কেনা হয়েছে কয়েক হাজার ইভিএম মেশিন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App