×

মুক্তচিন্তা

ভ্যাকসিনে শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার যৌক্তিক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২১, ১২:১৩ এএম

করোনা মহামারি থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য এক বছর দুই মাস ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে ছাত্রছাত্রীদের সাহচর্য থেকে অন্যান্য সব শিক্ষকের মতো আমিও বঞ্চিত আছি। সংক্রমণের শুরুর দিকে মনে হয়েছিল এক মাস, দুই মাস বড়জোড় তিন-চার মাসের মধ্যেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু হায়, এই ছুটি যে এত দীর্ঘ হবে তা ভাবতেই পারিনি, ভাবতে পারেনি ছাত্রছাত্রীরাও। তাই আবসিক হল ছেড়ে যাওয়ার সময় পর্যাপ্ত বইপুস্তক বা প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে তারা বাড়ি যেতে পারেনি। ক্লাসরুম, করিডোর কিংবা ফ্যাকাল্টি ভবন চত্বরের আশপাশে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ ও সৌজন্য বিনিময় থেকে বঞ্চিত থাকতে থাকতে এই দীর্ঘ সময়ে কেমন এক নিঃসঙ্গ এসে গ্রাস করেছে, দিন দিন আকণ্ঠ! ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মধ্যে কেমন এক অস্বস্তিকর দূরত্বও ঘনিয়ে এসেছে! যেসব শিক্ষাবর্ষে পাঠদানের কোনো কোর্স নেই সেসব শ্রেণির কোনো কোনো শিক্ষার্থীর নামও ভুলে গেছি এতদিনে! তাদের মুখাবয়বও বিস্মৃতির অতলে যেন হারিয়ে যেতে বসেছে! একজন শিক্ষকের কাছে এ এক প্রকার আত্মহত্যারই শামিল! যাদের সঙ্গে অনলাইন ক্লাসে ‘ভার্চুয়াল’ দেখা হয় সে দেখাও যেন ভীষণ রকমের মøান-মলিন! করোনা আতঙ্কের ছাপও আমাদের চেহারায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে! বিগত এক বছরে শিক্ষা ক্ষেত্রের এ ক্ষতি কোনোভাবেই পূরণ সম্ভব নয়। প্রি-প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির অনলাইন ক্লাস চলছে বিগত বছরের জুলাই-আগস্ট থেকে। মুখোমুখি পাঠদান থেকে অনলাইন পাঠদানে প্রথম প্রথম অনভ্যাসের জড়তা আমাদের গ্রাস করেছিল। এক বছরের চর্চায় বর্তমানে অনেকের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে এলেও বাস্তবতা হচ্ছে মুখোমুখি পাঠদান ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে অনলাইনে পাঠদান ততটা কার্যকর নয়। এই পদ্ধতিতে যাকে বলে ‘ঠেকা কাজ’ কোনো মতে হয়তো চালিয়ে নেয়া সম্ভবÑ শতভাগ ফল লাভে আরো দীর্ঘদিনের চর্চা প্রয়োজন, প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন শক্তিশালী ইন্টারনেট ব্যবস্থাও। শুধু শিক্ষকদের জন্যই নয়, শিক্ষার্থীদের জন্যও এ কথা প্রযোজ্য। উন্নত দেশেও অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষা ক্ষেত্রে শতভাগ সাফল্য নেই। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি পাঠদানে ফিরিয়ে আনায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহল চিন্তাভাবনা করছেÑ এ সংবাদ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন আশার সঞ্চার করেছে তেমনি শিক্ষকদেরও উৎসাহিত করেছে। শোনা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে। এটি অত্যন্ত ইতিবাচক উদ্যোগ। ভ্যাকসিন প্রয়োগে প্রথম থেকেই বয়সভিত্তিক ‘টার্গেট পিপল’ নির্ধারণের পরিবর্তে পেশাভিত্তিক নির্ধারণ করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যেতÑ দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে গণহারে অনিশ্চয়তার সংকট থেকেও মুক্তি পাওয়া যেত। যা হোক, শেষ পর্যন্ত পেশাভিত্তিক জনগোষ্ঠী নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট মহলের মনোযোগ দেখে আমরা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছি। এখন পেশাভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্যাকসিন প্রদানের সফল বাস্তবায়ন দেখার প্রত্যাশা আমাদের। ইতোপূর্বে শুনেছিলাম অগ্রাধিকার বিবেচনায় ‘ফ্রন্টলাইন ফাইটার’ যেমন স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে প্রয়োগ করা হবে ভারত থেকে আমদানিকৃত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনাকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত কেন কার্যকর হয়নি তা সাধারণের অজানা। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ শেষ করেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়া হবে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। শিক্ষার্থীরা এখন ‘টার্গেট পিপল’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও সম্মতি দিয়েছেন বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষাক্ষেত্রে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে এই উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নে তার নিরসন ঘটবে এমনটিই সবার আশা। ইতোপূর্বে প্রথম দিকে ভারত থেকে আমদানিকৃত ভ্যাকসিনের প্রতি যখন অনেকেই নিরুৎসাহিত ছিলেন তখন শিক্ষার্থীদের টার্গেট করা হলে এতদিনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তা প্রয়োগের মাধ্যমে নিশ্চিন্ত হওয়া যেত। কারণ ইউজিসির তথ্য মতে, সারাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ। এর মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২০টি আবাসিক হলে সংযুক্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯১ হাজার শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইউজিসিতে জমা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের এই তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসির মাধ্যমে পেয়েছে বলে গণমাধ্যমের বরাতে আমরা অবগত হয়েছি। উপরন্তু শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর তথ্যও পাওয়া গেছে ১ লাখ ৩ হাজারের মতো। এদের মধ্যে অনেকেরই দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণও সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে আবাসিক হলগুলো ফিরিয়ে আনতে গেলে খুব বেশি টিকার প্রয়োজন নেই। চীন থেকে প্রাপ্ত উপহারের প্রথম ৫ লাখ ভ্যাকসিন স্বাস্থ্যসেবাসহ স্বাস্থ্যশিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উপহারের দ্বিতীয় চালানের ৬ লাখ ভ্যাকসিন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ সম্ভব হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার পথে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া যাবে। উপহারের ভ্যাকসিন থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ সম্ভব না হলেও অন্ততপক্ষে আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে চীন থেকে যে ১ কোটি ভ্যাকসিন আমদানির প্রক্রিয়া চলছে তার অংশভাগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রয়োগপূর্বক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থায় গতি আনার চেষ্টায় সরকারের সক্রিয়তা দেখাতে হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিগত চৌদ্দ মাসে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে আমাদের অনেক সময় লাগবে। সময় লাগলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। কারণ যে সময় আমাদের জীবন থেকে চলে গেছে তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আমরা জেনেছি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ অধিকাংশ সম্পন্ন করেছে। কেবল যেসব শিক্ষার্থী জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য এখনো নিবন্ধন সম্পন্ন করেননি তারা এই পরিসংখ্যানের বাইরে রয়েছেন। আশা করা যায়, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বাদপড়া শিক্ষার্থীদের জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার বিকল্প উপায়ও তারা খুঁজে বের করবেন। এসব গেল যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের সংখ্যা বেশি অর্থাৎ যেখানে আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ। এছাড়া আবাসিক হল ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জটিলতা নেই কিংবা একটি বা দুটি মাত্র আবাসিক হল রয়েছে এমন কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের পূর্বে খুলে দেয়া যায় কি না তা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক ধরনের চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনা আছে বলেও আমরা জেনেছি। পাশাপাশি, চল্লিশোর্ধ্ব অধিকাংশ শিক্ষক ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহণও সম্পন্ন করেছেন। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘শিক্ষকদের মধ্যে যাদের বয়স চল্লিশের ঊর্ধ্বে, তাদের প্রায় সবাই টিকা নিয়েছেন। এখনো যারা বাদ আছেন, তারাও দ্রুত সময়ের মধ্যে নিতে পারবেন। সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। টিকা পাওয়ার সংকট দেখা দিয়েছিল। এখন টিকা পাওয়া গেছে, অগ্রাধিকারভিত্তিতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করা হবে।’ শিক্ষামন্ত্রীর এ প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। কেননা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে কুচক্রী মহলের এক প্রকার অপতৎপরতাও সক্রিয় আছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, সরকারি-বেসরকারি অধিকাংশ অফিস সীমিত আকারে সচল আছে। জন স্পর্শজনিত কারণে সংক্রমণ রোধ ও সীমিত রাখার জন্য সরকার বারংবার নানা রকমের কর্মপন্থা ও পরিকল্পনা করেছে। সাধারণ মানুষ তা মেনে চলেনি বলে স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ মহলে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। নিয়মকানুন, আইনশৃঙ্খলা মেনে চলায় আমাদের যে জাতিগত গণউদাসীনতা রয়েছে বিগত চৌদ্দ মাসে আমরা তা স্পষ্ট উপলব্ধি করেছি। বিভিন্ন পেশাজীবী গোষ্ঠীর মধ্যে এই প্রবণতা কেবল উদাসীনতা নয়, বরং প্রতিবাদী হিসেবেও দেখেছি। লকডাউন, কঠোর লকডাউন প্রভৃতি নামে জনসমাবেশ বা জনসমাগম পরিহারের সরকারের বিভিন্ন কৌশলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনে এসব পেশাজীবী দ্বিধা করেনি। আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণায় তাদের বরং সোচ্চারও দেখা গেছে। এ জাতীয় আন্দোলনগুলো পোস্ট-মর্টেম করলে দেখা যাবে সবগুলোর পেছনেই বিভিন্ন ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর তৎপরতাই বেশি। সে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বলি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলি, জাহাজ ব্যবসায়ী কিংবা পরিবহন ব্যবসায়ী বলি সবাই করোনা সংক্রমণ নিরোধের লক্ষ্যে প্রণীত ও প্রজ্ঞাপিত সরকারের বিধি-নিষেধ উপেক্ষাই করছেন। তাদের সব প্রকার কর্মোদ্যোগ ও আন্দোলন করোনা সংক্রান্ত সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধেই প্রবল ছিল। জীবন ও জীবিকার কথা বলে স্বাস্থ্যবিধির বিপরীতে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার দাবি নিয়ে তারা তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। করোনা মহামারির এই দুর্যোগকালে সরকারের সব সিদ্ধান্ত ও প্রজ্ঞাপনের পক্ষে শিক্ষার্থীরা নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়েছেন। এরূপ দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। বাংলাদেশের ইতিহাসে ইতিবাচক এমন কোনো ঘটনা নেই যেখানে শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ ছিল না। বাংলাদেশে করোনা মহামারির প্রথম ঢেউয়ে সাধারণ মানুষের যখন হিমশিম অবস্থা তখন অনেক শিক্ষার্থীই করোনাক্রান্ত মৃতদেহ সৎকারসহ লকডাউনে আটকেপড়া হতদরিদ্র মানুষের পাশে খাদ্য সহায়তা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। ছাত্ররাই যে কেনো দুর্যোগে সর্বাগ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েনÑ এটাই আমাদের জাতীয় ইতিহাস। তারুণ্যের শত উচ্ছ্বাস সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরাই সুবিবেচক নাগরিকের পরিচয় দিয়েছেন। তাই শিক্ষাজনিত তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ায় রাষ্ট্রেরই উচিত অগ্রাধিকারে ভ্যাকসিন নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করে তোলা। আহমেদ আমিনুল ইসলাম : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App