×

জাতীয়

স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় বাধা দিয়ে ইমামের হাতে খুন হলেন স্বামী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২১, ০৯:৪৯ এএম

স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় বাধা দিয়ে ইমামের হাতে খুন হলেন স্বামী

খুন হওয়া আজহারুল ইসলাম ও অভিযুক্ত ইমাম

স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয় সম্পর্ক ছিল জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমানের। বিষয়টি জানার পর ইমামকে নিষেধ করতে মসজিদে গিয়েছিলেন স্বামী আজহার। সেখানে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে আজহারের গলায় আঘাত করেন ইমাম। এভাবে হত্যার পর মরদেহ ছয় টুকরা করে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখেন ওই ইমাম।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর দক্ষিণখানে সরদারবাড়ি জামে মসজিদে।  মঙ্গলবার ভোরে ওই মসজিদের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় ছয় টুকরা লাশ। গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত মাওলানা আব্দুর রহমানকে। জব্দ করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত পশু জবাই করার তিনটি চাকু। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রীকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ইমাম আব্দুর রহমান মসজিদের একটি কক্ষে থাকতেন। ঐ কক্ষে আজহারুলকে হত্যার পর লাশ ছয় টুকরা করে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। র্যাব হত্যায় ব্যবহূত পশু জবাইয়ের একটি ছুরি ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করেছে।

গতকাল বিকালে কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল মোত্তাকিম বলেন, গত ১৯ মে রাতে মসজিদে ইমামের কক্ষে গিয়েছিলেন আজহারুল। সেখানে বাগিবতণ্ডার এক পর্যায়ে আজহারকে ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয়। কী নিয়ে বাগিবতণ্ডা হয়েছিল, জানতে চাইলে র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক আব্দুল মোত্তাকিম বলেন, ইমাম বলেছেন আজহারুল অভিযোগ করছিল, তার স্ত্রীর দিকে কুনজর রয়েছে।

দক্ষিণখানের স্থানীয় বাসিন্দা এরশাদ জানান, সরদারবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান ৩০ বছর ধরে এই মসজিদে ইমামতি করছেন। আজহারুলের চার বছরের ছেলে ইমামের কাছে কোরআন পড়া শিখত। ছেলেকে মসজিদ থেকে আনা-নেওয়া করতেন আসমা বেগম। এ সময় আসমার সঙ্গে ইমামের দেখা ও কথা হতো। এক পর্যায়ে ইমামের কাছে ছেলের জন্য পানিপড়া, রোগমুক্তির তাবিজ আনার কথা বলে নিয়মিত তার কাছে যেতেন তিনি। ইমামও নানা ছুতোয় তাদের বাসায় যেতেন। এভাবেই এক বছর ধরে আজহারুলের স্ত্রীর সঙ্গে ইমামের পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। আজহারুল বিষয়টি টের পেয়েছিলেন। এ জন্য পাঁচ মাস আগে আজহারুল বাসা পরিবর্তন করে দক্ষিণখানের মধুবাগ এলাকার হাজি মার্কেটের সামনে চলে যান। এতেও চিড় ধরেনি আজহারুলের স্ত্রী-ইমামের সম্পর্কে। নিয়মিত দেখা হতো তাদের। ১৫-২০ দিন আগে তাদের ছেলে মা ও ইমাম আব্দুর রহমানকে মসজিদে একসঙ্গে অস্বাভাবিকভাবে দেখতে পায় বলে তার বাবা আজহারুলকে জানিয়ে দেয়।

র‌্যাব জানায়, ছেলের কাছ থেকে বিষয়টি শুনে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাননি আজহারুল বরং স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে তার নিজ বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে চলে যান। কালিহাতী থেকে ইমামকে ফোন করেন আজহারুল। ফোনে তিনি ইমামকে বলেন, ‘হুজুর আপনাকে আমি বিশ্বাস করতাম। আপনি কীভাবে আমার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক করলেন?’ জবাবে ইমাম বলেন, ‘তুমি যা ভাবছ ঘটনা তা না, তুমি ঢাকায় আস আমি তোমাকে সব ঘটনা খুলে বলি’।

র‌্যাব আরো জানায়, ঘটনা জানতে গত ১৯ মে দক্ষিণখানের সরদারবাড়ির মসজিদে গিয়েছিলেন আজহারুল। বাগিবতণ্ডার এক পর্যায়ে কোরবানির পশু জবাইয়ের ছুরি দিয়ে আজহারুলের গলায় আঘাত করেন আব্দুর রহমান। এতে মারা যান আজহারুল। পরে মসজিদে নিজের শয়নকক্ষে আজহারুলের মৃতদেহ ছয় টুকরা করেন। এরপর মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে সেই টুকরাগুলো ফেলে দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App