×

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ২৭ উপজেলা, নিহত ২

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২১, ০৭:১৫ পিএম

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ২৭ উপজেলা, নিহত ২

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে খুলনার কয়রায় বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়। ছবি: ভোরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ২৭ উপজেলা, নিহত ২

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে খুলনার কয়রায় বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়। ছবি: ভোরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় ‘যশে’র গতিপথ পাল্টে যাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ। তবে শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অতি জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাসে দেশের উপকূলীয় ৯ জেলার ২৭ উপজেলা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ভোলা ও বরগুনায় দুই একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

বুধবার (২৬ মে) দুপুরে সচিবালয়ে সার্বিক ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, ‘যশে’র প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জেলার মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর। এর মধ্যে ভোলার লালমোহন উপজেলায় গাছচাপায় আবু তাহের (৪৯) নামে একজন মারা গেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- শ্যামনগর, আশাশুনি, কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, শরণখোলা, মোংলা, মোরেলগঞ্জ, মঠবাড়িয়া, বরগুনা সদর, পাথরঘাটা, আমতলী, পটুয়াখালী সদর, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, দশমিনা, মির্জাগঞ্জ, কলাপাড়া, চরফ্যাশন, মনপুরা, তজুমদ্দিন, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, ভোলা সদর, হাতিয়া, রামগতি ও কমলনগর।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১৪ জেলায় ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাব পড়েছে বলে আমরা জেনেছি।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় ৯টি জেলার ২৭টি উপজেলার ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা দিতে সাড়ে ১৬ হাজার শুকনা ও নরম খাবারের প্যাকেট জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এগুলো বিতরণের কার্যক্রম চলবে।

এদিকে, বরগুনার বেতাগীতে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে মায়ের কোল থেকে পানিতে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে দণি কালিকাবাড়ী এলাকার কালিকাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির নাম মো. ইমামুল হাসান (৩)। সে বেতাগী উপজেলার দণি কালিকাবাড়ি এলাকার মো. স্বপনের ছেলে।

[caption id="attachment_286347" align="aligncenter" width="720"] ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে খুলনার কয়রায় বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার গতি নিয়ে ভারতের উডিশা উপকূলে আছড়ে পড়ে তাণ্ডব শুরু করার পর শক্তি কমে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় যশ এখন প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর।

যশের প্রভাবে উডিশা উপকূলে প্রবল বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের সঙ্গে সাগর ফুলে উপকূলের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়। ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ ঝড়ের উপকূল অতিক্রম করার পর্যায় শুরু হয় বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে। তখন ইয়াসের অবস্থান ছিল ব্যালাশোর উপকূল থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে।

তবে আঘাত হানার পর শক্তি কমে। তবে উডিশা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে মূল আঘাতের আগেই অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে অন্তত পাঁচজনের প্রাণহানি ঘটেছে। জলোচ্ছাস শুরু হয়েছে উডিশা, পশ্চিমবঙ্গ ও সুন্দরবনের বিস্তির্ণ এলাকায়।

বুধবার বিকেলে যশ সম্পর্কিত ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরে ভারী থেকে অতি ভারি বৃষ্টিসহ ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে বলেও বিশেষ বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App