×

সারাদেশ

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে কয়রায় বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২১, ০৬:২৪ পিএম

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে কয়রায় বাঁধ ভেঙে ৩০ গ্রাম প্লাবিত

বুধবার খুলনার কয়রায় বাঁধ ভেঙে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে গ্রাম। ছবি: ভোরেরর কাগজ।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় যশ এর প্রভাবে খুলনার কয়রার কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলার ৪ ইউনিয়ের ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে ও বেড়িবাঁধ উপছে পানি ঢুকে পড়ায় ধসে পড়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি। বাড়ির আঙ্গিনাসহ তলিয়ে গেছে রাস্তা ঘাট, মাছের ঘের ও ফসলের মাঠ ।

বুধবার (২৬ মে) সকালে জোয়ার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুপুর ১২টা থেকে বেড়িবাঁধ উপছে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকে।

মহারাজপুর ইউপির দশালীয়া থেকে হোগলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে দশালিয়া, কালনা, মেঘের আইট, আটরা, গোবিন্দপুর, হোগলাসহ অন্তত ৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একই ইউনিয়নের মঠবাড়ি ও পবনা এলাকায়ও পানি প্রবেশ করেছে। দক্ষিণ বেদকাশী ইউপির আংটিহারা মন্দিরের পাশে বাধের প্রায় ৪০ মিটার একই ইউনিয়নের জোড়শিং বাজার হতে বীণাপাণি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধ উপচে লোকালয় পানি প্রবেশ করেছে এতে করে ৫/৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

উত্তর বেদকাশী ইউপির গাতিরঘেরী বেড়িবাঁধের প্রায় আধা কিলোমিটার ব্যাপী বাধ উপছে নোনা পানিতে এলাকা লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। এতে অন্তত চার গ্রাম সম্পূর্ণ নোনা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে, ভেঙে পড়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও মৎস্য ঘেরসহ সবকিছু। একই ইউনিয়নের কাঠকাটা বাঁধের ১৫০ মিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করেছে কয়রা সদর ইউনিয়নের ২নং কয়রা ঋষি বাড়ির পাশে ও ৪নং কয়রা লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায়। পানি প্রবেশ করেছে মহেশ্বরীপুর ইউপির নয়ানী ও খোড়লকাঠি এলাকাসহ কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদী তীরবর্তী প্রায় ৩০টির অধিক গ্রামে।

দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের (বাঁধ ভাঙন) বাসিন্দা আবু সাইদ খান জানান, ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে আমরা খুবই আতংকে থাকি। বিশেষ করে রাতে। এলাকার মানুষ ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসে থাকে। কখন বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে নদীতে চলে যায়। আজ দুপুরে হঠাৎ করে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যেভাবে পানি উঠতেছে এতে খুবই বিপদে আছে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুর রহমান জানান, দক্ষিণ অঞ্চলের  নদ-নদীতে পানির স্বাভাবিক মাত্রা থাকে তিন মিটারের কাছাকাছি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস এবং পূর্ণিমার জোয়ারের কারণে আরও দুই থেকে তিন ফুট বেশি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার প্রায় ৩০টি পয়েন্ট দিয়ে পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। কয়েক জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা জিও ব্যাগ ও বালুর বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, আগামী দুইদিনে পানির উচ্চতা আরও বাড়তে পারে। এর সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হলে পানি আটকানো সম্ভব হবে না। আমরা ২০ হাজার জিও ব্যাগ ও ৩০ হাজার  সিনটেথিক ব্যাগ মজুদ রেখেছি। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় জিও ব্যাগ দিয়ে বাধ রক্ষার কাজ করানো হচ্ছে৷

স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, দুর্যোগের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুইদিন ধরে আমি কয়রায় অবস্থান করছি। ২৫ মে থেকে আমি নিজেই কয়রার প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাউবোর স্পর্শ কাতর স্থানগুলিতে গিয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছি আজও কয়রাতে অবস্থান করছি ঘূর্ণিঝড় যশ এর প্রভাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি কয়রা বাসির সঙ্গে আছি। ভেঙে যাওয়া স্থানগুলি দ্রুত মেরামত করা হবে' এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতির পরিমাণ যাতে কম হয় সে জন্য জিও ব্যাগ সিন্থেটিক ব্যাগসহ বেড়িবাঁধ টেকানো এবং জনসাধারণের জানমাল রক্ষার্থে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App