×

জাতীয়

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ১ কোটি ২০ লাখ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২১, ০৮:৪৪ এএম

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ১ কোটি ২০ লাখ

ফাইল ছবি

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) গবেষণা অনুযায়ী, করোনা ভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে দেশে নতুন করে দরিদ্রতার শিকার হয়েছেন দেড় কোটি মানুষ। বেকার হয়েছেন দেশের মোট শ্রমশক্তির তিন শতাংশেরও বেশি মানুষ। বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে অর্থনীতির মূলস্রোতে আনতে আসন্ন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ছে। সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনা হবে ১ কোটিরও বেশি মানুষ। গত বাজেটের তুলনায় এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে ২৪ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের মতো আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেট পরিকল্পনাতেও সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। চলতি অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। ২৪ শতাংশ বাড়িয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ও বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষত বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের বেশি করে এ সুবিধার আওতায় আনার টার্গেট নেয়া হচ্ছে। দেশের ১৫০টি উপজেলার সব বয়স্ক মানুষ ও বিধবা নারীকে ভাতা দেয়া হবে। এতে ৮১ লাখ ৭৫ হাজার উপকারভোগীর কাছে মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হবে ৪ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা। বর্তমানে এই কর্মসূচির আওতায় ৪৯ লাখ উপকারভোগী সুবিধা পাচ্ছেন। এজন্যে চলতি বাজেটে বরাদ্দ রয়েছে ২ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এছাড়া নতুন করে ভাতা পাবেন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিকরা। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বাড়বে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতাও। তাদের ভাতা প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ জনকে এই সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ভোরের কাগজকে বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। করোনার কারণে দারিদ্র্যের সংখ্যা বাড়ছে, এমনটাই জানিয়েছেন দেশের গবেষকরা। সরকার ধীরে ধীরে সবাইকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নিয়ে আসা হবে। এবারের বাজেটে উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়বে, তবে প্রদেয় অর্থের পরিমাণ বাড়বে না। এক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়টি আলাদা। তাদের ভাতা ২০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, করোনা চলার সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সরকার তার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে সমর্থ হয়েছে। সরকার ভবিষ্যতে আরো বেশি গতিশীলতার সঙ্গে তার কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। বিশ্লেষকদের মতে, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি বাড়াতে হবে। করোনার কারণে অনেক লোক চাকরি হারাবে। নি¤œমধ্যবিত্ত অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাবে। এসব মানুষকে খাইয়ে-পরিয়ে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ থাকতে হবে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি কেবল গ্রামকেন্দ্রিক নয়, এবার শহরের কিছু জনগোষ্ঠীকেও এর আওতাভুক্ত করতে হবে। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. শান্তনু মজুমদার ভোরের কাগজকে বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্ববহ। এটিও এক ধরনের বিনিয়োগ। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগের মতোই সামাজিক নিরাপত্তা খাত। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলদের জন্য এটি একটি সেইফ গার্ড। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক মূলস্রোতে আনতে এর বিকল্প নেই। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে শহরের ভাসমান জনগোষ্ঠী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা প্রয়োজন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App