×

ফিচার

নাটকীয়তার আরেক ধাপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২১, ০৮:৪৪ এএম

জিন্নাহ বলেছিলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা পর বাংলার মানুষের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে। এরপর ‘এক পাকিস্তান’ প্রস্তাব করেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।

১৯৪৫ সালের নভেম্বর মাসে ভারতে কেন্দ্রীয় আইনসভা ও ১৯৪৬ সালের মার্চ মাসে প্রাদেশিক আইনসভাসমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মুসলিম লীগ লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে এসব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করে। কেন্দ্রীয় আইনসভার নির্বাচনে ৮৬.৬ শতাংশ মুসলিম ভোট পেয়ে মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত ৩০টি আসনের সব কয়টি দখল করে। বঙ্গীয় প্রাদেশিক পরিষদে মুসলিম আসন ছিল ১১৯টি; এর মধ্যে মুসলিম লীগ পায় ১১৩টি আসন।

এভাবে বাঙালি মুসলমানরা ভারতের পূর্বাঞ্চলে একটি পৃথক আবাসভূমির পক্ষে রায় প্রদান করে। কিন্তু মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে গণরায়কে উপেক্ষা করা হয়।

লীগ সভাপতি জিন্নাহ নতুন চালে এবার কাছে টানলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে। তিনি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার যুক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লিতে মুসলিম লীগ থেকে নির্বাচিত পার্লামেন্টারি পার্টির সম্মেলনে তাকে আগ্রহভরে ডাকলেন জিন্নাহ। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে দিয়ে ‘এক পাকিস্তান’ প্রস্তাব উত্থাপন করলেন। প্রস্তাব উত্থাপনের আগে সোহরাওয়ার্দী গণরায়কে সামনে রেখে জিন্নাহকে বললেন, লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে নির্বাচন হয়েছে। বাংলার মানুষ জানেন, তাদের জন্য একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠিত হবে।’ জিন্নাহ বললেন, ‘পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হোক তারপর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

[caption id="attachment_284880" align="aligncenter" width="595"] যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম বইটির কভার ফটো[/caption]

১৯৪৬ সালের এপ্রিল মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগ দলীয় নির্বাচিত প্রতিনিধি সম্মেলনে লাহোর প্রস্তাবকে সংশোধন করে বলা হয় যে, ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাসমূহ, যথা পাঞ্জাব, সিন্ধু, বেলুচিস্তান, সীমান্ত প্রদেশ এবং বাংলা ও আসামকে নিয়ে ‘একটি স্বাধীন রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। নাম হবে পাকিস্তান।

প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেন বাংলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশিম। তিনি বলেন, কাউন্সিলের পাশকৃত প্রস্তাব পার্লামেন্টারি পার্টি পাল্টাতে পারে না। জিন্নাহর নির্দেশে ‘হোম গার্ড’ তাকে চ্যাংদোলা করে প্যান্ডেলের বাইরে ফেলে দেয়।

জিন্নাহর আদেশে সংশোধনী প্রস্তাবটি প্রকাশ্য অধিবেশনে সোহরাওয়ার্দী উত্থাপন করেন এবং তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। তবে সম্মেলন শেষে সোহরাওয়ার্দী বলেন, ‘বর্তমানের মূল প্রশ্ন হলো পাকিস্তান। এই প্রশ্নের মীমাংসা হলে পাকিস্তানের অঙ্গীভ‚ত ইউনিটগুলোর মর্যাদা সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

আগামীকাল প্রকাশিত হবে ‘সংগ্রামের নামে সাম্প্রদায়িকতা’ ‘যেভাবে স্বাধীনতা পেলাম’- বইটি পাওয়া যাচ্ছে ভোরের কাগজ প্রকাশনে (ভোরের কাগজ কার্যালয়, ৭০, শহীদ সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা)। এ ছাড়া সংগ্রহ করা যাবে bhorerkagojprokashan.com থেকেও।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App