আরও ৬ লাখ ডোজ করোনা টিকা উপহার দিচ্ছে চীন
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ মে ২০২১, ০৮:২৮ পিএম
বাংলাদেশকে আরও ৬ লাখ ডোজ করোনা টিকা উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। শুক্রবার (২১ মে) সন্ধ্যার পর ঢাকায় চীনের দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, এ দিন সন্ধ্যায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেনের টেলিফোনে কথা হয়। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীনকে করোনার টিকা দিতে অনুরোধ জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীন এ ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের করোনা মহামারীর সর্বশেষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে চীন। করোনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের চলমান লড়াইয়ের এখন সংকটপূর্ণ সময় চলছে। বাংলাদেশী বন্ধুদের করোনা টিকা জরুরি প্রয়োজন। বন্ধুরাষ্ট্রের এ সংকটে উদ্বিগ্ন চীন। দেশে-বিদেশে এখন করোনা টিকার চাহিদাও বিশাল। টিকা সরবরাহে ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। এ সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন বেইজিং। বাংলাদেশকে প্রথম ব্যাচে পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার দেওয়ার মাত্র ৯ দিনের মাথায় চীন বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দ্বিতীয় ব্যাচে আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। চীন যে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে থাকে তারই প্রতিফলন এই ঘোষণা। চীন আশা করছে, উপহার হিসেবে করোনা টিকার এই দ্বিতীয় ব্যাচ বাংলাদেশের সরকার ও সাধারণ জনগণের মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও শক্তিশালী করবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামীতে চীন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য মহামারী মোকাবেলায়, বাংলাদেশের সঙ্গে মহামারী প্রতিরোধী সহযোগিতা গভীর করতে এবং কার্যকরভাবে দুই দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও জীবনের সুরক্ষা জোরদারেেআগ্রহী।
এর আগে ১২ মে চীন থেকে উপহার হিসেবে পাঠানো সিনোফার্মের ৫ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে আসে।
চীন বাংলাদেশকে আরো ৬ লাখ টিকা উপহার দেয়ায় চীনের প্রতি স্বাগত জানিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবীর ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের করোনার টিকার সংকট। কাজেই যেখান থেকে পারি আমরা সেটা সংগ্রহ করছি। তিনি বলেন, ভারত আমাদের ১ কোটি ডোজ করোনা টিকা দিয়েছে। চীন প্রথম দফায় দিয়েছে ৫ লাখ। এখন আরো ৬ লাখ ডোজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অথচ আমাদের দেশে ২৫ কোটি করোনা টিকা দরকার। এজন্য বাইরের দিকে না তাকিয়ে নিজের দেশে কিভাবে টিকা উৎপাদন করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।
এম. হুমায়ুর কবীরের মতে, ব্যবসায়িক স্বার্থ বাদ দিয়ে জনগণের স্বার্থ চিন্তা করে নিজের দেশেই টিকা উৎপাদন করা দরকার। কারণ বিশ্বে যেভাবে টিকার চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ফারাক দেখা দিচ্ছে তাতে নিজের দেশে টিকা উৎপাদন ছাড়া সম্ভব নয়।
টিকান দেওয়ার কথা ছিল ভারতের। কিন্তু তারা দিতে পারেনি। এখন টিকা দিচ্ছে চীন। এতে কি ভারসাম্যমূলক কূটনীতির হেরফের হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে মানুষের জীবন বাাঁচানো কাজ। ভারত টিকা দেওয়ার কথা ছিল, তারা পারেনি, এখন চীন দিচ্ছে। তাতেও সংকুলান হচ্ছে না। কাজেই এখানে ভূ-রাজনৈতিক হিসাব আমি খুঁজব না। একইসঙ্গে ভারত কেন টিকা দিল না তা খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।