×

সারাদেশ

বেতাগীতে টিসিবির পণ্য এনে দোকানে বিক্রি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ মে ২০২১, ০৬:৫৬ পিএম

বেতাগীতে টিসিবির পণ্য এনে দোকানে বিক্রি

টিসিবির পণ্য ডিলারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দোকানে দোকানে পাইকারি দামে বিক্রি আওয়ামী লীগ নেতার

বরগুনার বেতাগীতে ন্যায্যমূল্যের টিসিবির পণ্য সাধারণ মানুষ ক্রয়ের আগেই আওয়ামী লীগের এক নেতা ডিলারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দোকানে দোকানে পাইকারি দামে বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তার নাম মতিউর রহমান লিটন। তিনি বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১০ মে উপজেলার জলিশা বাজারে টিসিবির পণ্য ভ্রাম্যমাণভাবে বিক্রি করেন সরদার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. রবিউল ইসলাম ও তার দুই সহযোগী। বিক্রির শুরুতেই ওই আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান গিয়ে একের পর এক ৫ লিটার ওজনের তেলের বোতল নেয়া শুরু করেন। বাধা দিলে বলেন, উপজেলার সব নেতা আমার আত্মীয়স্বজন, আর আমি এই ইউনিয়নের বড় নেতা।

এরপর ডিলারের সঙ্গে জোর করে ৭৫ লিটার তৈল ও ৩০ কেজি চিনিসহ ইচ্ছেমতো পণ্য নেওয়ার পর টাকা চাইলে অনেক কথার পর প্রতিটি তেল বাবদ ৫০০ টাকা দেন। একটু পর সেই তেল ৬০০ টাকা ও চিনি স্থানীয় কয়েক ব্যবসায়ীর কাছে বাজার মূল্যে বিক্রি করেন; গোপনীয়তা রক্ষা করে স্থানীয় লোক মোবাইল ফোনে এই ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। এ ঘটনায় টিসিবির পণ্য নিতে আসা একাধিক লোক পণ্য ক্রয় করতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে আসা বশির হাওলাদার বলেন, ওই নেতা ক্ষমতার দাপটে টিসিবির পণ্য নিয়ে নেয় আবার বেশি দামে খোলা বাজারে বিক্রি করে লাভও করে। আর আমরা পণ্য কিনতে এসে কিছুই পাইনা।

টিসিবির ডিলার সরদার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, মশিউর রহমান লিটন টিসিবির পণ্য নিতে আসলে আমি তাকে বাধা দেই এবং বলি আপনি একটার বেশি নিতে পারবেন না। পরে তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বলেন, আমার যা যা লাগবে না দিলে তোর লাইসেন্স বাতিল করে দেব। আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা আমার আত্মীয়স্বজন। কথা বাড়ানোর কারণে আমাকে টাকাও দিতে চায়নি, পরে পাশের লোকজন বলে আমাকে টাকা আদায় করে দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ওই নেতা টিসিবির পণ্য নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী আশরাফ আলী, জাফরসহ বেশ কয়েক জনের দোকানে বিক্রি করেন। অনেকেই পণ্য পায়নি, মাঝখান দিয়ে তিনি লাভ করেন।

অভিযুক্ত মতিউর রহমান লিটনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন সময় এটা হলো? আমি তো আমার যা প্রয়োজন তা এনেছি। আমি কোনো পণ্য বিক্রি করিনি। ভিডিওর কথা বললে তিনি বলেন, এসব মিথ্যা কথা।

বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম গোলাম কবির বলেন, লিটন আওয়ামী লীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক, তার কাজ মানুষকে ত্রাণ দিয়ে সহায়তা করার ব্যবস্থা করা। যদি কোনো দলীয় লোক দুর্নীতি করে এবং তা প্রমাণিত হয় তবে তাকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

এ ব্যাপারে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, সে যে দলের নেতাই হোক না কেন, সরকারের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। অতি শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App