নাগরিকের সতর্কতা প্রয়োজন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২১, ১২:১১ এএম
লকডাউন উপেক্ষা করে এবারের ঈদে বাড়ি ফিরতে রাজপথ ও ফেরিঘাটে মানুষের ঢল নেমেছিল। একই অবস্থা কর্মস্থলে ফেরার পথেও দেখা যাচ্ছে। ঈদের পরের দিন থেকে ফেরিঘাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরিঘাটে যাত্রী চাপের খবর গণমাধ্যমে আসছে। গণপরিবহন না থাকায় গ্রাম থেকে ফিরতে তাদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তেমনি ব্যয়ও বাড়ছে। দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও জেলার ভেতরে বাস চলছে। এর ফলে মানুষ বাসে করে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গিয়ে ঢাকার দিকে আসছে। বাসে করে ঢাকার সীমানায় এসে এরপর হেঁটে ঢুকছে। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার সামগ্রিক যে ক্ষতি তা পুষিয়ে নেয়া সত্যিই কঠিন হবে। কারণ সংক্রমণের হার ঢাকায় বেশি এবং ঈদ উপলক্ষে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় সারাদেশেই সংক্রমণের হার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, ‘লকডাউনের’ মধ্যে ঈদ উদ?যাপনের জন্য বিপুলসংখ্যক মানুষ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে দলে দলে বাড়ি গেছে, তারা একইভাবে ফিরে এলে এর ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে এভাবে দেশের সর্বত্র মানুষের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। সরকারের সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ শঙ্কা বাড়ছে বলে তারা মনে করেন। ঈদের আগে জেলার ভেতর গণপরিবহন চলাচল শিথিল না করে ঈদের পরে করলে এ ঝুঁকি এড়ানো যেত। ফেরিঘাটগুলোয় যা হলো, এটা এড়ানো যেত। হঠাৎ ফেরি বন্ধ না করে চলাচল অব্যাহত রাখলে যাত্রীর চাপ বাড়ত না। অথবা দূরপাল্লার বাস চালু থাকলে যাত্রীরা ঢাকা থেকে সোজা গন্তব্যে পৌঁছাত। ভাবনার বিষয়। করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরনটি ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও ঢুকে পড়েছে, এটির সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি; তাই প্রথমত নিজের সুরক্ষার স্বার্থেই স্বাস্থ্যবিধির সব নিয়ম অত্যন্ত কঠোরভাবে মেনে চলা জরুরি। সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আরো সাত দিন অর্থাৎ ১৭ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত আরেক দফা বাড়াল সরকার। শুধু সরকার নয়, আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। যার যার অবস্থান থেকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের বিষয়ে এই মুহূর্তে সরকারকে মনোযোগ দেয়া দরকার। যাত্রীদের পথে পথে ভোগান্তি, ভাড়া নৈরাজ্য ও গাদাগাদি করে যাতায়াতের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ সাপেক্ষে গণপরিবহন চালু করা যেতে পারে। অবর্ণনীয় দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ট্রাক-পিকআপে, ফেরিতে করে মানুষ ঢাকায় আসছে। দূরপাল্লার বাস সার্ভিস চালু করলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমার পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকিও কমে আসবে বলে আমরা মনে করি।