রোজিনা ইসলামকে নির্যাতন করা হয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২১, ০১:১১ পিএম
মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের ওপর কোনো নির্যাতন করা হয়নি। মঙ্গলবার (১৮ মে) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, তিনি না বলে সরকারি ফাইল নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেগুলোর ছবি তুলছিলেন। অনুমতি ছাড়াই ওই রুমে প্রবেশ করেছেন। এগুলো রাষ্ট্রীয় গোপন বিষয়। তিনি অন্যায় করেছেন।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, সাংবাদিক রোজিনাকে কোনো শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। এই তথ্য সঠিক নয়। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। সাংবাদিক রোজিনা যে কাজটি করেছেন তা উচিত হয়নি। তিনি অন্যায় করেছেন।
বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। তবে আমি এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি একজন অতিরিক্ত সচিব। আমাকে তিনি টেলিফোনে বলেছেন, তিনি রোজিনাকে শারীরিক নির্যাতন করেননি। বরং রোজিনা তার উপর হামলা করেছিল। ঘটনার পর রোজিনাকে যখন আটকানোর চেষ্টা করা হয় তখন তিনি ওই অতিরিক্ত সচিবকে খামচি দিয়েছেন, থাপ্পড় মেরেছেন। এরপর পুলিশ আসলে তাকে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, কোনো নির্দোষ লোক সাজা পাক এটা আমি চাই না। দেশের ক্ষতি হোক এরকমটা আমরা চাই না। তিনি অপরাধ না করে থাকলে আইনের মাধ্যমেই তা প্রমাণ হবে। আমরা সব সাংবাদিকদের সম্মান করি। আমরা সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার চেষ্টা করি। আমার বাসার দরজায় আসলেও আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলি।
মন্ত্রী আরও বলেন, সাংবাদিক রোজিনাকে ছয় ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছে এটা ভুল। ঘটনার সময় সেখানে বিভিন্ন পদস্থ পাঁচ-ছয়জন উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার পর সেখানে পুলিশ এসেছে। ঘটনার আধাঘণ্টার মধ্যে পুলিশ এসেছে। আমার আগে এ খবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেনেছেন। বরং রোজিনা সেখানে কাউকে সাহায্য করছিল না। তাকে জোর করে কেউ রুমে নিয়ে যায়নি।
ফোনে ছবি তোলার বিষয়ে প্রমাণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফোনে ছবিগুলো পাওয়া গেলেই বুঝা যাবে তিনি তুলেছেন কি না। তাছাড়া আমি ছিলাম না সেখানে তাই এতোকিছু বলতে পারছি না।
এর আগে সচিবালয়ের ভেতরে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের ওপর হামলা ও শারীরিকভাবে হেনস্থা করে তথ্য চুরির মামলা করার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা সংবাদ সম্মেলন বর্জন করে বেরিয়ে গেলেন সাংবাদিকরা।
মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল ১১ টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ব্রিফিং আহ্বান করা হয়। সকল গণমাধ্যমকে স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রেখে সংবাদ কাভারেজের অনুরোধ জানান তারা। কিন্তু সহকর্মীর ওপর হামলা ও মামলার প্রতিবাদে বর্জনের ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনের স্থান ত্যাগ করেন ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা।
এসময় বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বলেন, আমাদের সহকর্মী রোজিনাকে হেনস্থা করার ঘটনায় বিকাল থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আমরা সচিবালয়ে ছিলাম। কিন্তু আমরা এব্যাপারে জানতে বারবার সচিবের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। অথচ তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা না করে আমাদেরকে বারবার অপমানিত করেছেন। আজকের এই সংবাদ সম্মেলন আমরা বয়কট করছি। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নেতারা ঘোষণা করবেন।