×

জাতীয়

কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না ঘরমুখো মানুষকে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মে ২০২১, ০৯:৪৮ এএম

কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না ঘরমুখো মানুষকে

শিমুলিয়া ফেরিঘাটে ফেরির অপেক্ষায় জনস্রোত। ফাইল ফটো

বৃষ্টি-মহামারী আর সড়কে ভোগান্তি উপেক্ষা করেই সব পথে এখন মানুষের বাড়ি ফেরার যুদ্ধ চলছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-পাটুরিয়া ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি এখন অনেকটা শিথিল। এই সুযোগে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি বেশকিছু দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল করছে। সুযোগ পেয়ে রাজধানীর ভেতরের গণপরিবহনগুলো এখন দূরপাল্লার পরিবহনে রূপ নিয়েছে। শুধুমাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছাড়া দেশের অন্যান্য শহরে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। দূরপাল্লার গণপরিবহন চলাচল সরকারিভাবে নিষেধ থাকলেও আজ বিভিন্ন মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল করেছে। রাজধানীর গাবতলী, সাভার, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী ও গাজীপুর থেকে যাত্রী নিয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাসগুলো ছেড়ে গেছে। ছোট ছোট পরিবহন কোম্পানিগুলির পাশাপাশি হানিফ পরিবহনের মত প্রতিষ্ঠিত বড় পরিবহন কোম্পানি ও তাদের এসি এবং ননএসি বাসগুলো যাত্রী নিয়ে রাজধানী ছেড়ে গেছে। এসব গণপরিবহন স্বাভাবিক সবার মত চলাচল করলেও সড়ক-মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেয়নি। আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ব্যস্ততম মুন্সীগঞ্জে শিমুলিয়া ফেরিঘাটে ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় লাখো মানুষ রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে অপেক্ষা অপেক্ষা করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে শিমুলিয়া যেতে সর্বোচ্চ এক ঘন্টা সময় লাগে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে পথ যেতে লাগছে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা। এই সড়কের কুচিয়ামোড়া ব্রিজ এর আগে থেকে শিমুলিয়া ঘাট পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার পর এখান থেকেই লোকজন হেঁটে ঘাটের দিকে রওনা হচ্ছে। আজ সকালের দিকে শিমুলিয়া ঘাটের যেদিকেই চোখ যায় সেদিকেই শুধু মানুষ আর মানুষ। রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখো মানুষ শিমুলিয়া ফেরিঘাটে অপেক্ষা করছে। ফেরিতে ওঠার জন্য লোকজনকে রীতিমতো যুদ্ধের পরিবেশে নামতে হয়েছে। এদিকে ঢাকা-মানিকগঞ্জ মহাসড়কে যানবাহনের চাপ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এই নৌরুটে সবগুলো ফেরি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করার পরেও যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ প্রবলভাবে বেড়ে যাওয়ায় ফেরিগুলোর পক্ষে চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শত শত যানবাহন এবং হাজার হাজার মানুষ ঘাটে এসে আটকা পড়েছে। পাটুরিয়া ঘাটে এখন হাজার হাজার মানুষের ফেরিতে ওঠার জন্য রীতিমতো যুদ্ধ চলছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ঈদযাত্রা মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে আরও জোরালো হয়েছে। উত্তরাঞ্চলগামী গাড়ির চাপে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের করোটিয়া বাস স্ট্যান্ডের আগে থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। রাত ১০ টায় ঢাকা থেকে রওনা হয় সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত টাঙ্গাইলে পৌঁছতে পারেননি সাদেকুর রহমান। পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি মাইক্রোবাস ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন বলে জানিয়েছে। রাত এগারোটার পর থেকে এই সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। ঢাকা গাজীপুর মহাসড়কেও ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। টঙ্গীর পর থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি না হলে ও যানবাহন থেমে থেমে চলছে। সাভার ও গাজীপুরে এলাকার হাজার হাজার গার্মেন্টস ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার ছুটি হয়ে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ শ্রমিক মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ঈদ সামনে রেখে ও বাড়ি ফিরতে রাস্তায় বের হয়। আজ ভোর থেকে এ বিপুল সংখ্যক শ্রমিকদের উপস্থিতি সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কে ভিড় বাড়িয়ে দিয়েছে। দূরপাল্লার পরিবহণ কোম্পানিগুলো সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই এসব শ্রমিকদের গাদাগাদি করে বাসে নিয়ে দূরপাল্লার বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App