×

জাতীয়

অধিক মুনাফার আশায় লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই স্পিডবোট চলছিলো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২১, ০৯:৩৫ পিএম

অধিক মুনাফার আশায় লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই স্পিডবোট চলছিলো

আটক স্পিডবোটের মালিক

অধিক মুনাফা লাভের আশায় লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্পিডবোটের চলাচল অব্যাহত রেখেছিলেন গ্রেপ্তার হওয়া চান মিয়া ওরফে চান্দু মোল্লা ওরফে চান্দু। তবে মাওয়া ঘাটে দুর্ঘটনা কবলিত স্পিবোটসহ তার মালিকানাধীন ৩টি স্পিডবোটের একটিরও বৈধ কোনো কাগজপত্র বা অনুমোদন নেই বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

রবিবার ( ৯ মে) বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গত ৩ মে মাওয়া ফেরিঘাট এলাকায় একটি যাত্রীবাহী স্পিডবোট দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গোঙ্গরে থাকা বালু বোঝাই বাল্ক হেডের ওপর আছড়ে পড়ে দুর্ঘটনায় ২৬ জন যাত্রী নিহত হয়। মাত্র ৫ জন যাত্রী বেঁচে ফেরেন।

এ ঘটনায় ৪ মে মাদারীপুর জেলার শিবচর থানায় একটি মামলা করা হয়। এ প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে রবিবার প্রথম প্রহরে ২টা ৩০ মিনিটের দিকে কেরানীগঞ্জ তেঘড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহার নামীয় ২নং আসামি স্পিডবোটের মালিক চান মিয়া ওরফে চান্দু মোল্লা ওরফে চান্দুকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় চান মিয়া স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করছিল। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চান্দু এবিষয়টি স্বীকার করেছে। সে জানায়, দুর্ঘটনার শিকার ওই স্পিডবোটের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয়েছিল। এছাড়া স্পিডবোটে যাত্রী পরিবহনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থাদির ঘাটতি ছিল।

'গ্রেপ্তারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে আমরা আরো জেনেছি অতিরিক্ত মুনাফা এর লোভে তারা অবৈধভাবে স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করতো। ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোট পারাপার করার বিষয়ে যাত্রীদের ও উৎসাহ ছিল।'

তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, আসামি চান মিয়া ওরফে চান্দু ৫ বছর ধরে স্পিডবোটের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহনের ব্যবসার করে আসছিলো। তার ৩টি স্পিডবোটের কোনোটির অসুমোদন ছিলো না। দুর্ঘটনার পরপরই আসামি চান্দু আত্মগোপনে চলে যায়।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, এ মামলায় চার জন আসামি। প্রধান আসামির চালক সে পুলিশের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে হাসপাতালে। মামলার বাকি দুই আসামি ইজারাদার আরেক জন পলাতক রয়েছে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অবৈধভাবে যারা স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাওয়া ও দোলোদিয়া ফেরিঘাট স্পিডবোট ব্যবসা পরিচালিত হয় তা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিআইডব্লিটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, জেলা প্রশাসক, ঘাট ইজারাদার ও মালিক সমিতির সম্মানিত তত্ত্বাবধায়নে এ ব্যবসা পরিচালিত হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে অবশ্যই যদি দেখে কোন অনুমোদনহীন বোর্ড নদী পারাপার করছে যাত্রীদের তাহলে অবশ্যই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা গেছে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনকে লুকিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করত। সাধারণ সময়ে তারা যাত্রী পারাপারের দেড়শ টাকা করে নিলেও সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের সময় তারা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

স্পিডবোটতে ২০ জন যাত্রীর ধারণ ক্ষমতা থাকলেও এই দুর্ঘটনায় আমরা দেখেছি ৩২ জন যাত্রী ছিল। তবে এক্ষেত্রে ঘাট ইজারাদার ও ঘাট মালিক সমিতির গাফেলতি লক্ষ্য করা যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App