বিতর্কিত সুপার লিগ থেকে সরে যাওয়ায় ঘোষণা কয়েকটি ক্লাব আগেই দিয়েছিল। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে উয়েফার সঙ্গে পুরনো সম্পর্কে ফেরার একটা চুক্তিপত্রও সই করেছে ৯টি ক্লাব। তবে এখনো সুপার লিগে থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা না দেওয়া রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ও জুভেন্টাস পড়তে পারে বড় বিপদে। এই তিন ক্লাবের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আভাস দিয়েছে উয়েফা।

গত ১৮ এপ্রিল ইউরোপের প্রভাবশালী ১২টি ক্লাব মিলে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নামে একটি নতুন টুর্নামেন্ট শুরু করার ঘোষণা দেয়। নিজেদের আয় বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে এক জোট হয়েছিল এই ক্লাবগুলো। ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার নিয়ন্ত্রনাধীন চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বেরিয়ে গিয়ে এই বিদ্রোহী লিগে যোগ দিয়েছিল ইংল্যান্ড , স্পেন ও ইতালির ১২টি ক্লাব।

তবে ঘোষণা দেওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই সমর্থকদের প্রতিবাদ, ফুটবল বিশ্লেষক ও বোদ্ধাদের সমালোচনা এবং উয়েফা ও ফিফার শাস্তির হুমকিতে ৯টি ক্লাব সুপার লিগ থেকে সরে দাঁড়ায়। শুরুতে ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, আর্সেনাল ও টটেনহাম- ইংল্যান্ডের এই ছয়টি ক্লাব নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় এই প্রকল্প থেকে। তাদের দেখাদেখি পরে যোগ দেয় ইতালির ইন্টার মিলান, এসি মিলান ও স্পেনের আতলেতিকো মাদ্রিদও।

এতে সুপার লিগ প্রকল্প শুরুর আগেই ধসে গেলেও এখনো সেখান থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়নি অন্যতম দুই উদ্যোক্তা ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও জুভেন্টাস এবং তাদের সঙ্গী বার্সেলোনা।

এসি মিলান আনুষ্ঠানিকভাবে সরে না গেলেও ইতালির গণমাধ্যমে জানানো হয়েছিল, সুপার লিগের সঙ্গে আর নেই মিলানের দলটি। উয়েফার এই বিবৃতিতেই তাদের সরে যাওয়ার নিশ্চিত ঘোষণা এলো।

বিবৃতিতে উয়েফা সভাপতি আলেকসান্দের চেফেরিন জানিয়েছেন, সুপার লিগ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া ৯ ক্লাব ভবিষ্যতে ইউরোপিয়ান ফুটবলের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার ঘোষণা দিয়েছে। তবে অবশিষ্ট তিন ক্লাবকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।

ভুল বুঝতে পেরে আগের অবস্থায় ফেরার সদিচ্ছার নিদর্শন স্বরূপ ক্লাবগুলোর মিলিতভাবে মোট দেড় কোটি ইউরো অনুদান দিতে হবে। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপ জুড়ে শিশু, যুব এবং তৃণমূল ফুটবলের জন্য যা ব্যবহার করা হবে।

উয়েফার এই বিবৃতির পর সুপার লিগে রয়ে যাওয়া তিন ক্লাবের কোনো বিবৃতি প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে ৯ ক্লাব সরে যাওয়ার পরও আগের অবস্থানেই থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন সুপার লিগের প্রথম চেয়ারম্যান ও রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেস।

পেরেসের যুক্তি, প্রস্তাবিত টুর্নামেন্টটি চালু হলে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর আয় বাড়বে এবং তাতে ফুটবলেরও উন্নতি হবে।

তবে উয়েফার মতে, সুপার লিগ কেবলমাত্র অভিজাত ক্লাবগুলোর শক্তি ও সম্পদ বাড়িয়ে তুলবে এবং এর কাঠামোটি ইউরোপিয়ান ফুটবলের দীর্ঘস্থায়ী মডেলের বিরুদ্ধে যাবে।