দূরপাল্লার বাসের অনুমতি না দিলে ঈদের দিন শ্রমিক বিক্ষোভ
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ মে ২০২১, ১২:৪৬ পিএম
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান এমপি।
অবিলম্বে দূরপাল্লার বাস ও পণ্য পরিবহন চালু করা না হলে ৫ দফা দাবিতে ঈদের দিন সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ শনিবার ( ৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশন এই যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, দূরপাল্লার বাস বন্ধ রেখে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যাবে না। অন্যান্য সব যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও দূরপাল্লার বাস ও পণ্য পরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা অমানবিক। এখন যেসব যানবাহনে যাত্রীরা চলাচল করছে সেগুলোই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এক্ষেত্রে কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। দূরপাল্লার বাসগুলো সরকারের নির্দেশিত শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করে থাকে। বাস মালিক শ্রমিকরা সবধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করে।
এজন্য কোম্পানিগুলোর সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। দূরপাল্লার বাস চলছে না দেওয়ায় লাখ লাখ শ্রমিক চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবহন মালিকরা পথে বসার উপক্রম। আয় না থাকায় অনেক মালিক সংশ্লিষ্ট বাসের ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। তাছাড়া দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় দামি দামি সব দূরপাল্লার বাসগুলো যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো বলেন, সব সেক্টরের সরকার থেকে প্রণোদনা দেওয়া হলেও পরিবহন শ্রমিকদের কোন ধরনের সহযোগিতা করা হয়নি। এ অবস্থায় অবিলম্বে দূরপাল্লার বাস পরিবহন চলাচল সরকার অনুমতি না দিলে ঈদের দিন পরিবহন শ্রমিকরা রাজধানীর সব টার্মিনালে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।
৫ দফা দাবিগলো হল:
১. স্বাস্থাবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার গণপরিবহন এবং স্বাভাবিক মালামাল নিয়ে পণ্য পরিবহন চলাচলের সুযোগ দিতে হবে।
২. লকডাউনের কর্মহীন সড়ক পরিবহণ শ্রমিকদের ঈদের আগে আর্থিক অনুদান ও খাদ্য সহায়তা দিতে হবে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় মালিকদের (শ্রেণিমত) যানবাহন মেরামত, কর্মচারি ও শ্রমিকের বেতন, ভাতা ও ঈদ বোনাস ইত্যাদি দেয়ার জন্য নাম মাত্র সুদে ও সহজ শর্তে পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিতে হবে।
৩. সারা দেশে বাস ও ট্রাক টার্মিনালগুলোতে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ঈদের আগে ও পরে ১০ টাকায় ওএমএস'এর চাল বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. কোডিড-১৯ এর কারণে গণপরিবহন ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগের বিপরীতে সমস্ত ব্যাংক ঋণ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফসহ কিস্তি আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করতে হবে এবং ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে ক্লাসিফাইড ঋণগুলো আনক্লাসিফাইড করতে হবে।
৫. লকভাউনে বন্ধ থাকার সময় গাড়ির ট্যাক্স টোকেন, রুট পারমিট ফি, আয় কর, ড্রাইভিং লাইসেন্স ফিসহ সবধরনের ফি, কর ও জরিমানা মওকুফ করে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাগজপত্র হালনাগাদ করার সুযোগ দিতে হবে।
এসব দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা ঈদের দিন ঈদের নামাজ শেষে সারা দেশের মালিক ও শ্রমিকরা নিজ নিজ এলাকায় বাস ও ট্রাক টার্মিনালে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান এমপি ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা ও মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ ও জেনারেল সেক্রেটারি আবু রায়হান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।