সড়ক ও মার্কেট-শপিংমলসহ সর্বত্রই মানুষের উপচেপড়া ভিড়
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২১, ০৩:৫৭ পিএম
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মার্কেটে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ছবি: মামুন আবেদীন
পোশাক কিনতে মার্কেটে ভিড় করছে ক্রেতারা। ছবি: ভোরের কাগজ
রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল শুরু, তীব্র যানজট সড়কে। ছবি: ভোরের কাগজ
রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব সড়ক, মার্কেট ও শপিংমলসহ সর্বত্রই মানুষের ঢল নেমেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে অফিসে যাওয়ার পাশাপাশি জরুরি কাজ সেরে নেওয়ার জন্য সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছেন। রয়েছে সবার মাঝেই ব্যস্ততা। ফলে আজকের রাজধানী আবার পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থার ফিরে এসেছে।
জানা গেছে, ভোর থেকেই বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার ও লেগুনা চলাচলের ফলে রাজধানীর রাস্তায় যানবাহন একেবারে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। যাতায়াতে চড়া ভাড়ার বিষয়টি বিবেচনা করে গত তিন সপ্তাহ যারা দূরের পথে চলাচল করতে পারেননি গণপরিবহন চলাচল শুরু হওয়ায় আজ তারাও বেরিয়ে পড়েছেন। এতে নগরীর সব এলাকার রাস্তায় মানুষের চাপ বেড়েছে। নগরীর মিরপুর, পল্লবী, গাবতলী, ফার্মগেট, গুলশান, বনানী, মতিঝিল, গুলিস্থানসহ সব এলাকাতেই মানুষের ঢল নেমেছে।
[caption id="attachment_282694" align="aligncenter" width="687"] পোশাক কিনতে মার্কেটে ভিড় করছে ক্রেতারা। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]উপরন্তু ঈদের কেনাকাটা করতে লোকজন এখন মার্কেট মুখি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরানা পল্টন থেকে বায়তুল মোকাররম, গুলিস্থান, ফুলবাড়ী, মতিঝিল এলাকার রাস্তাগুলোতে সব দোকানপাট খুলে যাওয়ায় লোকজন কেনাকাটা করতে আসছে। এ কারণে এসব এলাকাতেও এখন মানুষের প্রচণ্ড চাপ। ফুটপাতের দোকানের পাশাপাশি সব এলাকার মার্কেট, শপিংমলেও মানুষের ঢল নেমেছে। নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, মৌচাক, বেলীরোড, এলিফেন্ড রোড, মিরপুর ১ নম্বর,২ নম্বর, ১০ নম্বরসহ সব এলাকার পোশাক ও জুতার দোকানে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ মানুষের অনেক বেশি ভিড় হয়েছে।
এলিফ্যান্ট রোডে পরিবার পরিজনসহ জুতা কিনতে আসা আজিজুর রহমান জানান, রাত আটটা পর্যন্ত মার্কেট খোলা থাকে। ইফতারের পরে বের হলে পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায় না, তাই তিনি কেনাকাটার জন্য দুপুরের দিকে বের হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্যবিধি মেনে শপিং করছেন। তাছাড়া সকালের দিকে ভিড় একটু কম থাকে।
এদিকে, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে শাড়ির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। দশটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে সব দোকান খুলেছে। এগারোটা বারোটার দিকে মার্কেটগুলো থেকে তাদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। গণপরিবহন চালু হওয়ায় অপেক্ষাকৃত কম দামে ভালো শাড়ি কিনতে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, নিউ মার্কেট, চাঁদনী চক মার্কেটের দোকানগুলোতে এসেছেন ক্রেতারা। রাজধানীর ব্যস্ততম মৌচাক ও সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় মার্কেটগুলোতেও ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড়।
[caption id="attachment_282695" align="aligncenter" width="687"] রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল শুরু, তীব্র যানজট সড়কে। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]ধানমন্ডির রাপা প্লাজা শপিং করতে আসা শাকিলা ইয়াসমিন জানান, পরিবারের সদস্যদের ঈদের কেনাকাটা করার জন্যই তিনি মার্কেটে এসেছে। বিকেলে ইফতারের কারণে ব্যস্ত থাকতে হয়। ইফতারের পরে বের হলে কেনাকাটার জন্য বেশি সময় পাওয়া যায় না কারণ আটটার দিকে দোকান গুলো সব বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণেই তিনি সকালে শপিং করতে বের হয়েছেন। দোকানগুলো রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখলে ক্রেতাদের সুবিধা হতো।
শুধু জুতা অথবা পোশাকের দোকান নয়, ফার্নিচার, কসমেটিকস, কাঁচা বাজারেও মানুষের ভিড় বেড়েছে। পান্থপথের ফার্নিচারের দোকান গুলোতে ও ঈদের আগে প্রয়োজনীয় নতুন ফার্নিচার কিনতে আসা ক্রেতাদের ভিড় দেকা গেছে। ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সর্বত্রই মানুষের ভিড় আরও বাড়ছে।
কঠোর বিধিনিষেধের শর্ত দিয়ে গণপরিবহন মার্কেটসহ সবকিছু খুলে দেওয়া হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা কোথাও দেখা যাচ্ছে না। গণপরিবহনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও যাত্রী ও কোম্পানির লোকজনের সেদিকে কোন খেয়াল নেই। বাসে উঠার আগে যাত্রীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার কোনো ব্যবস্থা পরিবহন কোম্পানিগুলো নেয়নি। এমনকি বাসের ভেতর জীবাণুনাশক স্প্রে ছড়ানোর নির্দেশ থাকলেও তা কেউ করছে না। মার্কেট ও শপিংমলে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ এবং বেচাকিনা না করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু শেখানো স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সবারই অনীহা রয়েছে। মাস্ক ছাড়াই ক্রেতারা মার্কেটে ও শপিংমলে ঢুকে পড়ছে। তবে বিক্রেতাদেরও অনেককেই মাক্স ব্যবহার করতে দেখা যায়নি।
এভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপকৃত হওয়ায় আগামী দিনগুলোতে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।