×

সম্পাদকীয়

বিনা দোষে কারাবাস!

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২১, ১২:০১ এএম

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। কথাটি আবারো সত্য প্রমাণিত হলো। মাদকের মামলায় বিনা অপরাধে দীর্ঘ দেড় বছর কারাবাসে ছিলেন হাসিনা বেগম নামে এক নিরীহ নারী। নামের মিল থাকায় কারাভোগী টেকনাফের নারী হাসিনা ১৮ মাস পর গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। একজন সাধারণ নারীর জীবন থেকে প্রায় দেড় বছর ঝরে যাওয়ার দায়ভার কে নেবে তা বড় প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত তদন্ত কর্মকর্তাদের গাফিলতি নিরূপণে কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরাও চাই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত হোক। জানা গেছে, মাদকের মামলায় প্রায় ৬ বছর আগে চট্টগ্রামের আদালতে সাজার আদেশ হয়েছিল হাসিনা আক্তারের। তার বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ায়। কিন্তু তার জায়গায় প্রায় দেড় বছর ধরে সাজা খাটছেন একই এলাকার হাসিনা বেগম! স্বামী, মা-বাবার নাম অমিল থাকলেও নামের আংশিক ও এলাকার নাম মিল থাকায় সাজা খাটছেন হাসিনা বেগম। এভাবে নামের অদল-বদলে সাজা খাটার বিষয়টি সম্প্রতি নজরে আনেন এডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ। গত ২ মে এ বিষয়ে শুনানি হলে দেড় বছর ধরে সাজা খাটা হাসিনা বেগম প্রকৃত আসামি কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। মূল আসামি হাসিনা আক্তারের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়ায়। ওই এলাকার ইসমাইল হাজি বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী তিনি। অন্যদিকে নামের ‘আংশিক মিলে’ ফেঁসে যাওয়া হাসিনা বেগমের বাড়িও একই এলাকায়। তিনি হামিদ হোসেনের স্ত্রী। তবে অপরাধীর নামের সঙ্গে মিল থাকলেও বাবা-মায়ের নামের সঙ্গে অমিল রয়েছে বলে জানা গেছে আদালত সূত্রে। বহু নির্দোষ মানুষ বিনা কারণে বছরের পর বছর কারাভোগ করেছে। শুধু নাম বিভ্রাটের কারণে দীর্ঘ সময় কারাবাস থাকতে হলো। এর কারণ হিসেবে তার ক্ষতিপূরণ চাওয়াও প্রাসঙ্গিক। নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে আটকে রাখা দণ্ডবিধি ২১৮ ধারা অনুযায়ী মারাত্মক অপরাধ। এতে পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মেলে। পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করার আগে অবশ্যই নাম ঠিকানাসহ শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গ্রেপ্তার করবে। যা আইনে এবং পুলিশ প্রবিধানেও সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। নিরীহ হাসিনা বেগমের গ্রেপ্তার হওয়া ওয়ারেন্ট তামিলকারী পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতি ছিল। আমরা চাই, এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App