×

জাতীয়

ঈদে সোনামণিদের নজর পার্টিফ্রকে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২১, ১০:০১ এএম

ঈদে সোনামণিদের নজর পার্টিফ্রকে

ফাইল ছবি

রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলে মুখে মাস্ক পরে বাবা-মায়ের হাত ধরে হাঁটছিল সাত বছরের ছোট্ট ফাতিমা। ঘুরতে ঘুরতে দোকানের সামনে পুতুলের (ম্যানিকিন) গায়ে পরিয়ে রাখা একটা গাঢ় হলুদ রঙের ফ্রক ধরে আদুরে গলায় মাকে বলল, ‘আম্মু এইতা নিবো’। মা ফাহিমা জাহান মেয়ের বায়না করা হলুদ রঙের জামাটা কিনে নিলেন ২ হাজার টাকায়। জরি ও পুঁতিতে জড়ানো পাতলা চিকচিকে জমকালো জর্জেট কাপড়ের ফ্রকটির সঙ্গে রয়েছে একটি সুন্দর টুপিও। দোকানি জানালেন, ড্রেসটির নাম ‘মিসরি ফ্রক’। এবারের ঈদে ছোট্ট সোনামণিদের জন্য জর্জেট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কটন বেজ কাপড়ের উপরে নানা ডিজাইনের ফ্রক এসেছে। নবজাতক থেকে শুরু করে ১৬ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের পোশাক বিক্রিও হচ্ছে দেদার। রাজধানীর নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি শপিংমল, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে শিশুদের জন্য দেশি আর পাশ্চাত্য- দুই ঘরানার সমন্বয়ে ফিউশনধর্মী পোশাকের প্রাধান্য দেখা গেছে। মেয়েশিশুদের জন্য ফ্রক, লেহেঙ্গা, গ্রাইন, গারারার পাশাপাশি পালাজ্জোর সঙ্গে শর্ট টপস খুব চলছে। টপসগুলোয় থাকছে ফ্রকের ছাঁট। পালাজ্জো আর সালোয়ারের ক্ষেত্রে লিনেন কাপড়ের পাশাপাশি এবার থাকছে গামছা প্রিন্টের ব্যবহার। নতুনত্ব দেখা গেল কাটছাঁটেও। সালোয়ারের বা পালাজ্জোর ঘের তো বেশি আছেই, তার ওপর নানা লেয়ারে জুড়ে দেয়া হচ্ছে কাপড়ের নকশা। ছেলেশিশুদের পোশাকে তেমন বৈচিত্র্য না থাকলেও শার্ট আর ফতুয়ার সমন্বয়ে এক ধরনের বিশেষ পোশাক থাকছে বুটিকগুলোর আয়োজনে। এছাড়া ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবিতে কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্ডি, সিল্ক, মসলিন ও খাদি। উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন রকম হাতের কাজ দিয়ে। বয়স ও ডিজাইন অনুযায়ী শিশুদের পোশাকের দামটা ভিন্ন। কাজ অনুসারে পাঞ্জাবির দাম পড়বে ৫৫০ থেকে ২ হাজার টাকা, টি-শার্ট ১৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, ফতুয়া ২৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। মেয়েশিশুদের সালোয়ার-কামিজ ৮০০ টাকা থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে, ফ্রক পাওয়া যাবে ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো ছোটদের জন্য এবার ভিন্ন আয়োজনের পোশাক এনেছে। এবার ঈদে বৃষ্টি, প্রচণ্ড রোদ কিংবা মেঘলা আকাশের লুকোচুরির খেলা থাকতে পারে। তাই মিশ্র আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেই সোনামণিদের জন্য পোশাকের কাপড় নির্বাচন করা হয়েছে। অঞ্জনস, ওটু, আড়ং, রঙ, দেশাল, চাঁদের হাসি, অন্যমেলা, নগরদোলা, সাদাকালো, নিত্য উপহার ইত্যাদি প্রায় সব ফ্যাশন হাউসই তাদের নিজেদের ডিজাইন মেলে ধরেছে ঈদ সামনে রেখে। আড়ং মেয়েশিশুদের জন্য এনেছে ফ্রিল দেয়া পার্টি ফ্রক, হাতের জমকালো কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, ঘাঘড়া চোলি। সালোয়ার ও প্যান্টের কাজে নকশা এবং কাটে দেখা গেছে বৈচিত্র্য। মেয়েদের আনারকলি, একটু ঘের দেয়া লম্বা কামিজ যেমন চলছে, তেমনি ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবিতে এ লাইন কাটের ব্যবহার বেশি। শিশুরা যেহেতু সারা দিন জমকালো পোশাক পরে থাকতে পারে না, সেজন্য সুতি, ডেনিম বা জিনসের প্যান্ট, খাটো হাতার শার্ট, ফতুয়া, টপস পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন রং ও ডিজাইনের। ঈদে শিশুদের পোশাক নিয়ে জানতে চাইলে দেশীয় ফ্যাশন হাউস রঙের কর্ণধার ও ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা বলেন, বড়দের মতো ছোটদের পোশাকের রংয়ে রঙিন হয়ে আছে রঙ। ফতুয়া, পাঞ্জাবি, টুপি, ফ্রকসহ সব ধরনের পোশাকই করেছি আমরা। পোশাকের কাজ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিশুদের কথা মাথায় রেখে আমরা যতটা সম্ভব পোশাককে রঙিন করার চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, পোশাকগুলোয় টাইডাই, এমব্রয়ডারি ও মিক্স ফিউশনধর্মী কাজ করা হয়েছে। আর আরামের কথা ভেবে সুতি, সিল্ক ও ধুপিয়ান কাপড়ে এই কাজগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পোশাকের রঙের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্ষাকে মাথায় রেখে নীল ও নীলের বিভিন্ন শেডকে নিয়ে কাজ করেছি। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির রীহা ফ্যাশন হাউসের কর্ণধার জুয়েল বলেন, শিশুদের জন্য সুতি, লিলেন এবং টিস্যু কাপড়ের ড্রেসগুলো বেশি এসেছে। ফ্রকটাইপের মধ্যে বিভিন্ন ডিজাইন এসেছে। ভিন্ন ধাচের নতুন পোশাক এলেও বেচাবিক্রি ভালো নয় বলে জানান জুয়েল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App