×

সম্পাদকীয়

অভিনন্দন মমতা ব্যানার্জি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২১, ১২:০১ এএম

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১, ২০১৬ সালের পর ২০২১-এর নির্বাচনেও বিজয়ের পর টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। তৃণমূল সব মিলিয়ে ২১৩ আসনে জয়ী হয়েছে। ভারতের নির্বাচন কমিশন সোমবার সকালে সর্বশেষ এ তথ্য দিয়েছে। নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) জয়ী হয়েছে ৭৭ আসনে। কংগ্রেস-বাম দল ও আইএসএফের গড়া সংযুক্ত মোর্চা পেয়েছে মাত্র একটি আসন। আরেকটি আসন পেয়েছে অন্যরা। ভোটের এই ফলের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির যে বেসামাল ঢেউ শুরু হয়েছিল, তাও আপাতত বিরত হলো। মাসব্যাপী আট ধাপের বিশাল নির্বাচনযজ্ঞে শুধু ভারত নয়, সঙ্গত কারণেই প্রতিবেশী দেশগুলোরও এ নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি ছিল। তৃণমূলের বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অনেকেই মমতা ব্যানার্জিকে অভিনন্দন জানিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আমরাও তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ জয়কে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি তিস্তা চুক্তি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মমতার রয়েছে বিপরীত অবস্থা। মমতার জয়ে কাক্সিক্ষত চুক্তির ওপরও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। গত ২৭ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ভোট শুরু হয়। শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার। আট দফায় ভোট পড়ার গড় হার ৮১.৬ শতাংশ। বিজেপির হয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যেভাবে মাঠে নেমেছিলেন, তাতেই এ লড়াই শেষ পর্যন্ত মোদি বনাম মমতার যুদ্ধে পরিণত হয়। বিজেপির লক্ষ্য ছিল তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেসের পরাজয় নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৮টি এবং অমিত শাহ ২৯টি জনসভা করে গিয়েছেন। প্রচারে নেমে বাংলাদেশকেও নানা ইস্যুতে টার্গেট করেছিল বিজেপি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরা। গুজরাটের মতো সুশাসন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে ‘খেলা হবে’ স্লোগানে মাঠে নেমে তৃণমূল নেত্রী মমতা একাই মাঠ কাঁপিয়েছেন। নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে চোট পাওয়া পা নিয়ে হুইলচেয়ারে করেই জেলায় জেলায় চষে বেড়ান তিনি। নানা ইস্যুতে তিনি কথা বলেছেন। মানুষ গ্রহণও করেছে। ফলে ভোটে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মোদি-শাহর স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে। ভোটের ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাম ও কংগ্রেস কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। মাত্র ১০ বছর আগে যে দল ক্ষমতায় ছিল সেই সিপিএম তথা বাম জোট যে শূন্যে দাঁড়াবে তা কেউ ভাবতে পারেননি। নির্বাচনে দুটি বিষয় ছিল। ধর্মীয় রাজনীতি এবং বাঙালিয়ানা। এক্ষেত্রে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিপক্ষে মানুষ বাঙালিয়ানা বেছে নিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে বামদের শক্তিশালী অবস্থানের পতন হয়েছে। আর বিজেপি সেই স্থান দখল করে নিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যে ধরনের সম্পর্ক রয়েছে, তাতে কোনো পরিবর্তন আসবে বলে মনে হয় না। ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিকই থাকবে। তিস্তা ইস্যুতে মমতার আগের অবস্থানের পরিবর্তনে বাংলাদেশ সরকারকে নতুন করে উদ্যোগ নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App