×

জাতীয়

করোনা উপেক্ষা করে শ্রমিকদের মহান মে দিবস পালিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মে ২০২১, ০২:৫৮ পিএম

করোনা উপেক্ষা করে শ্রমিকদের মহান মে দিবস পালিত

শনিবার প্রেসক্লাব-পল্টন এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন

করোনা উপেক্ষা করে শ্রমিকদের মহান মে দিবস পালিত
করোনা উপেক্ষা করে শ্রমিকদের মহান মে দিবস পালিত

করোনা পরিস্থিতি উপেক্ষা করে মহান মে দিবসে শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো তাদের নায্য দাবি ‘মে দিবসের অঙ্গিকার ‘শ্রমিকের জীবন, জীবিকা ও স্বাস্থ্যের অধিকার’ আদায়ে সংক্ষিপ্ত র‌্যালি ও সমাবেশ করেছে।

এবারের মে দিবসে তারা শ্রমিকের জীবন-জীবিকা ও স্বাস্থ্য অধিকার ও নায্য মুজুরি নিশ্চিত করাসহ একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তারা শ্রমিকদের মধ্যে বৈষম্য দূর করারও আহ্বান জানান।

শনিবার (১ মে) সকালে পল্টন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত মিছিল করে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে শ্রমিক সংগঠনগুলো। র‌্যালিতে শত শত গার্মেন্ট শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা অংশ নেন।

প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষিত হয় এমন বেশ কিছু দাবি পেশ করা হয়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা শহরেও শ্রমিকরা মে দিবসে তাদের দাবি আদায়ে সোচ্চার হন।

সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ জি-স্কপ, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ, গার্মেন্টস টিউসি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, জাতীয় শ্রমিক ফ্রন্ট, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ বিভিন্ন বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন। আলাদা আলাদা সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মে দিবসের প্রক্কালে তারা শ্রমিকদের স্বার্থে আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী সুযোগ সুবিধা ও দাবি আদায়ের শপথ নেন এবং সরকার ও মালিক পক্ষকে তাদের দাবি পূরণের জন্য আহ্বান জানান।

স্কপের পক্ষ থেকে করোনায় কর্মহীনদের সহায়তা, বাঁশখালী হত্যাকাণ্ডের বিচার, জাতীয় নূণ্যতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার সকালে প্রেস ক্লাবের সামনে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতীকী শ্রমিক সমাবেশ ও র‌্যালির মাধ্যমে ১৩৫তম মে দিবস পালনকালে তারা এসব দাবি উত্থাপণ করেন।

স্কপের যুগ্ম-সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শহিদুল্লাহ চৌধুরির সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্কপ নেতা জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কামরুল আহসান প্রমুখ।

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে মহান মে দিবসের বাঁশখালী, রানা প্লাজা ও তাজরীনসহ সকল শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের বিচার করা এবং জাতীয় ন্যূনতম মজুরি বিশ হাজার টাকা ঘোষণা, নিহত শ্রমিকদের আইএলও কনভেনশন অনুসারে ক্ষতিপূরণ, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিতকরা, সংবিধান ও আইএলও কনভেনশন অনুসারে শ্রম আইন সংশোধন, গার্মেন্ট শ্রমিকদের জীবন ধারণের উপযোগী মহার্ঘ ভাতা এবং শ্রমিকের রেশন, বাসস্থান, চিকিৎসার জন্য আসন্ন বাজেটে বরাদ্দের দাবি জানান হয়। এ সময় গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সাদেকুর রহমান শামিম, কে এম মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।

শ্রমিক নেতারা বলেন, একের পর এক কালাকানুন এবং আইনের বিধিবিধান করার মাধ্যমে শ্রমিকদের অধিকার এবং সুযোগ-সুবিধা হরণ করা হচ্ছে। এখনো অধিকাংশ শ্রমিক মে দিবসের সবেতন ছুটি পায় না। শ্রম আইন অনুসারে সুযোগ সুবিধা, চাকুরি ও কর্মস্থলের নিরাপত্তা এবং অবাধে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত। বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য, বাড়ি ভাড়া ও আবাসন সংকটে শ্রমিকরা বিপর্যস্ত। নারী শ্রমিকরা বৈষম্য ও যৌন হয়রানির শিকার। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে দালালদের খপ্পর থেকে মুক্ত করে, শ্রেণি দৃষ্টিভঙ্গী সম্পন্ন স্বাধীন ও বিপ্লবী ধারায় আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান নেতারা।

জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা বলেন, দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা শতকরা ৮৫%। এরা তাদের আয়ের অর্থ দিয়ে শুধু নিজেরাই বাঁচে না, গ্রামীণ অর্থনীতিকেও সচল রাখে। কিন্তু দিনে দিনে তারা বেকার হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে চলেছে লে-অফ, ছাঁটাই ও মজুরি কর্তন। অনেক কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের মালিক শ্রমিক-কর্মচারিদের মজুরি-বেতন ঠিকমত পরিশোধ করে নাই। নেতারা শ্রমিকদের পরিবারের জীবন বাঁচাতে খাদ্য ও নগদ আর্থিক সহায়তা সহ তাদের জীবিকার টেকসই সমাধান করার দাবি জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App