×

জাতীয়

মুনিয়ার আত্মহত্যায় বড় প্ররোচনা আছে বলে আশঙ্কা পুলিশের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২১, ০৭:৫৫ পিএম

বড় ধরনের প্ররোচনা আছে বলে আশংকা করছে পুলিশ। সে কারণেই মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা নেয় পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতে স্বপ্রণোদিত ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে পুলিশ কাজ করেছে বলে তিনি জানান।

২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় গিয়ে মোসারাতের ঝুলন্ত মরদেহ নামায় ও বিছানায় শুইয়ে দেয় পুলিশ। বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারে বলে মোসারাত তাঁর পরিবারকে জানিয়েছিলেন। এই ঘটনায় ওই রাতেই মোসারাতের বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলা করেন। এতে বসুন্ধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করা হয়।

মোসরাতের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আসামি প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে পুলিশের অভিমত জানতে চাওয়া হলে পুলিশ উপকমিশনার বলেন, ফ্ল্যাট থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর ভুক্তভোগী তরুণীর বোন পুলিশকে জানানোয় উৎসাহী ছিলেন না, তাঁরা মামলা করতেও অতটা ইচ্ছুক ছিলেন না। বাড়ির মালিক পুলিশকে জানান। গুলশানের ওই ফ্ল্যাটে দেয়ালে টাঙানো মোসরাতের সঙ্গে আনভীরের ছবি আছে। সেখানে কয়েকটি ডায়েরিও পায় পুলিশ। এগুলোতে ‘সুইসাইডাল নোটের’ মতো অনেক কিছু লেখা। এসব থেকে পুলিশের অনুমান, একজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণী মাত্র ২১ বছর বয়সে কোনো কারণ বা প্ররোচনা ছাড়া আত্মহত্যা করতে পারে না। সে রাতেই পুলিশ প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহ করে এবং তাৎক্ষণিক সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলা হয়। ওই রাতে তিনিসহ, গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার, সহকারী কমিশনার, গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সব কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছিলেন।

আসামি কোথায় জানতে চাইলে উপকমিশনার বলেন, অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আসামি বাংলাদেশে আছেন। তিনি দুটি পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। ওই দুই পাসপোর্ট ব্যবহার করে দেশত্যাগের কোনো রেকর্ড নেই।

আত্মহত্যায় প্ররোচনার তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে কি না, জানতে চাইলে সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, তাঁরা ২০২০-২১ সাল পর্যন্ত লেখা ডায়েরি উদ্ধার করেছেন। ওই ডায়েরিতে ধারাবাহিকভাবে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত লিখেছেন মোসারাত। একটি পৃষ্ঠায় তিনি বড় ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে লিখেছেন। কিন্তু তাতে কোনো তারিখ ছিল না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটা মুনিয়া লিখেছেন ২৬ এপ্রিল এবং এতে আত্মহত্যার ইঙ্গিত ছিল। ডায়েরির একটি জায়গায় মুনিয়া তারিখ না দেওয়া পৃষ্ঠাগুলো পড়ার অনুরোধ করেছেন, কোনোভাবেই যেন ওই পৃষ্ঠাগুলো কেউ এড়িয়ে না যায় সে কথাও বলেছেন। ছয়টি ডায়েরিতেই মোসারাত তাঁদের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে লিখেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর টাকা–পয়সার লেনদেনসংক্রান্ত একটি অডিও পাওয়া যায়। ওই অডিও পরীক্ষা–নিরীক্ষার আওতায় আনবে পুলিশ।

শেষ কার সঙ্গে মোসারাতের কথা হয়েছিল? ফোনটি সচল ছিল কি না, জানতে চাইলে সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, মোসারাত দুটি ফোন ব্যবহার করতেন। একটি ফোন মৃত্যুর পরও সচল ছিল। তবে শেষ কার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন, সে সম্পর্কে উপকমিশনার তথ্য দিতে রাজি হননি। কথা বলার কতক্ষণ পর মোসারাত আত্মহত্যা করেন, সে সম্পর্কেও পুলিশ কিছু বলেনি।

মামলার এজাহারে পিয়াসা ও পরে হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীর নাম এসেছে। তাঁদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ জানায়, মামলার তদন্তে যাঁর যাঁর নাম আসবে, প্রত্যেকের সঙ্গে পুলিশ কথা বলবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App