×

জাতীয়

তরুণীর আত্মহত্যা: বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে মামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২১, ১১:৫২ এএম

তরুণীর আত্মহত্যা: বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে মামলা

মোসারাত জাহান মুনিয়া

তরুণীর আত্মহত্যা: বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির বিরুদ্ধে মামলা

বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর

রাজধানীর গুলশানে বিলাশবহুল ফ্ল্যাটে কলেজ পড়ুয়া তরুণী মোসারাত জাহান মুনিয়া (২১) আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার রাতে গুলশান থানায় একটি আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা হয়েছে। এতে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী ওই কলেজছাত্রীর বোন নুসরাত জাহান।

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, মোসারাত জাহান মুনিয়ার বাড়ি কুমিল্লায়। তার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন নূসরাত জাহান বাদী হয়ে দেশের শীর্ষ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন।

পুলিশ জানায়, গুলশান দুই নম্বর এভিনিউয়ের ১২০ নম্বর সড়েকর ১৯ নম্বর প্লটের বি/৩ ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন মুনিয়া। তার পরিবারের সবাই কুমিল্লাতে নিজ বাড়িতে থাকেন। চলতি বছরের মার্চ মাসে এক লাখ টাকা মাসিক ভাড়ায় তিনি ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন। মুনিয়া মিরপুরের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবার নাম মৃত শফিকুর রহমান। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা সদরের দক্ষিণপাড়া উজির দিঘী এলাকায়।

তরুণীর বোনের করা মামলার বরাদ দিয়ে পুলিশ জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় গুলশান ২-এর ১২০ নম্বর সড়কে একটি ভবনের ফ্ল্যাটে গিয়ে নিহত তরুণীর বড় বোন দরজা বন্ধ পান। ধাক্কাধাক্কি করলেও দরজা খুলছিলেন না ওই তরুণী। এর কিছুক্ষণ আগে থেকে তার ফোনও বন্ধ ছিল। এরপর ফ্ল্যাট মালিকের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দিয়ে পুলিশ দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে।

[caption id="attachment_280914" align="alignnone" width="857"] বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর[/caption]

জানা গেছে, ২৩ এপ্রিল একটি ইফতার পার্টি হয় ওই বাসায়। ওই পার্টির ছবি ফেসবুকে আপলোড করার কারণে মেয়েটির সঙ্গে ওই শিল্পপতির মনোমালিন্য হয়। পরে মেয়েটি তার বোনকে ফোন করে জানান, যেকোনো মুহূর্তে তার যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে। এই ফোনের পর কুমিল্লা থেকে সোমবার বিকেলে ঢাকায় আসেন ওই তরুণীর বোন। তবে গুলশানের ফ্ল্যাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান তিনি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোবার ঘরে তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।

উপকমিশনার সুদীপ বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ হাতে এলে আনভীরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গুরুত্ব বিবেচেনায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্ত করছেন জানিয়ে উপকমিশনার বলেন, তরুণীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আসবে।

এক প্রশ্নের জবাবে উপকমিশনার বলেন, চুক্তিপত্র অনুযায়ী ওই ফ্ল্যাটের মাসিক ভাড়া এক লাখ টাকা। এবং অগ্রিম দেয়া হয়েছে দুই লাখ টাকা। এরই মধ্যে দুই মাসের ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে।

এর আগে ২০০৬ সালের জুলাই মাসে বসুন্ধরার পরিচালক সাব্বির হত্যাকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। মুনিয়ার আত্মহত্যা মামলার আসামি আনভী ও তার ভাইকে ওই মামলায়ও আসামি করা হয়। সাব্বির হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে ২১ কোটি টাকা ঘুষ- লেনদেনের অভিযোগ উঠলে ২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক আবুল কাসেম রমনা থানায় এই মামলা করেন, যাতে তারেক রহমানসহ আটজনকে আসামি করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App