×

সম্পাদকীয়

নিমতলী চকবাজার ট্র্যাজেডি কী শিক্ষা দিল?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১২:০১ এএম

পুরান ঢাকায় আবারো রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ভোরে আরমানিটোলায় অগ্নিকাণ্ডে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। আহত হয়েছেন ১৭ জন। শর্ট সার্কিট থেকে লাগা আগুন কেমিক্যাল গোডাউনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। এর আগে আমরা দেখেছি নিমতলী ও চকবাজারে রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। এই দুটি ঘটনা থেকে কেউ কোনো শিক্ষা নেয়নি। কারণ দুটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর পুরান ঢাকায় জীবনধারায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। এই পুনরাবৃত্তি কি অনিবার্য ছিল? এবং আমরা কি ভবিষ্যতেও এমন অগ্নি-বিভীষিকার পুনরাবৃত্তির ঝুঁকি নিয়েই পুরান ঢাকার জীবনধারা একইভাবে চালিয়ে যাব? আরমানিটোলার মৃত্যের সংখ্যা কম হলেও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। এটিকে এড়িয়ে গেলে ভবিষ্যতে আবারো ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে আমাদের। পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এলাকায় বিপজ্জনক কেমিক্যালের শত শত কারখানা ও গুদাম রয়েছে এবং প্রায়ই কেমিক্যাল কারখানায় আগুন লেগে নানা দুর্ঘটনা ঘটে। তথ্যানুযায়ী, পুরান ঢাকায় প্রায় ২৫ হাজার রাসায়নিক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ আবাসিক বাড়িতে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগের ট্রেড লাইসেন্স শাখার দেয়া তথ্যানুযায়ী পুরান ঢাকায় মাত্র আড়াই হাজার কারখানার ট্রেড লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। ডিএসসিসির তথ্য পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ওই এলাকায় বাকি কারখানাগুলো অবৈধ। সালফার, পটাশ, ফসফরাস, সালফিউরিক এসিড, নাইট্রিক এসিড, ইথানল, মিথাইল, রেক্টিফায়েড স্পিরিট, তারপিনসহ নানা প্রকার গান পাউডার বিক্রি হচ্ছে খুব স্বাভাবিকভাবেই। চাল-ডাল, তেল-সাবানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ যেভাবে বিক্রি হচ্ছে তা রীতিমতো আতঙ্কিত হওয়ার মতো। নিমতলীর ঘটনার পর দাবি ওঠে, সেসব কারখানা ও গুদাম ওই এলাকা থেকে অবিলম্বে সরিয়ে নেয়ার। ৮০০ রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা পুরান ঢাকা থেকে কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে শেষ পর্যন্ত কাজটি আর হয়নি। সিটি করপোরেশন কেমিক্যালের গুদাম ও কারখানা সরানোর উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আরমানিটোলায় অগ্নিকাণ্ডের ভবনের গোডাউনে মজুত রাখা কেমিক্যালের কোনো লাইসেন্স ছিল না। এই ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সঠিক তদন্ত কাম্য। আহত যারা হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসায় যাতে কোনো ধরনের অবহেলা না হয় সেদিকে খেয়ালও রাখতে হবে। আবাসিক ভবনে কীভাবে রাসায়নিক গুদাম ভাড়া দিয়েছে- এর জন্য দায়ী ভবন মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App