×

মুক্তচিন্তা

প্রসঙ্গ : জীবন-জীবিকার জন্য বাজেট

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২১, ১২:০৬ এএম

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুস্থতার সংজ্ঞা দিয়েছেÑ Health is a state of complete physical, mental and social well-being and not merely the absence of disease or infirmity অর্থাৎ রোগবালাই মুক্ত হলেই শুধু নয়, শারীরিক বা দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক সবলতাই সুস্থতা। এর সঙ্গে আর্থিক সক্ষমতা যোগ করলে কেমন হয়? কেননা আর্থিক সামর্থ্যও তো সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। আর্থিক অসচ্ছলতা, দারিদ্র্য-দৈন্যতার দুশ্চিন্তা শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সবলতা অর্জনের পথে পয়লা নম্বরের প্রতিবন্ধকতা। এটা একজন ব্যক্তি বা ব্যষ্টির জন্য যেমন সত্য, ব্যষ্টির সমষ্টি পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির জন্যও প্রযোজ্য। একবিংশ শতাব্দীতে এ পর্যন্ত বৃহৎ বলে বিবেচিত করোনা ভাইরাস বৈশ্বিক বিচরণে যেভাবে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে তাতে পৃথিবীর তাবৎ নাগরিকের ব্যক্তিগত শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শান্তি ও সামাজিক সুরক্ষা সংকটের সম্মুখীন, আর এর জন্য বর্তমান কিংবা আসন্ন অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ। উচ্চবিত্তবাদে মধ্যবিত্তসহ অন্যান্য সবাই (৯৬ শতাংশের বেশি মানুষ) স্বাভাবিক জীবনযাপনে ও ধারণে প্রাণান্ত সংগ্রামে। এ পরিস্থিতিতে মহামারি করোনা মোকাবিলায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ঠাসা বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত এবং সমন্বয়হীন কর্মসূচি পালনের নামে সময়ক্ষেপণের সুযোগ নেই। যে কোনো যুদ্ধে জয়ী হতে হলে গতস্য শোচনা ও সমালোচনা নাস্তি, টিকে থাকার জন্য নির্দেশনামত যথা প্রস্তুতি সহকারে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়াই কর্তব্য। আর সে লক্ষ্যেই চলতি এবং আসন্ন বাজেটটি গতানুগতিকতার খোলস থেকে বেরিয়ে ‘মানুষ ও অর্থনীতি বাঁচাও’ বা ‘জীবন ও জীবিকার জন্য’ এ ধরনের দর্শনের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন সম্মত হওয়া উচিত হবে। এটা যেন শুধু কথামালার মধ্যে, বাক্য বাগিশতার মোড়কে বা মলাটে কাগুজে বাজেটে সীমিত কিংবা রূপান্তরিত না হয়। মানবসম্পদ বাঁচাতে তাৎক্ষণিক সহায়তা এ কথা না মেনে উপায় নেই যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মানুষ শারীরিকভাবে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বা হবে তার চেয়ে করোনাকালে কর্ম ও আয়-উপার্জনহীন হয়ে, অর্থনৈতিক অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে আর্থিক সংকটে তার শতসহস্রগুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যক্তি ও বিশ্ব অর্থনীতির জন্য করোনা অবশ্যই বড় হুমকি। স্বাস্থ্যবিধি পালনের স্বার্থে ও সুবিধার্থে শ্রমনির্ভর অনেক কাজ রোবটকে দিয়ে করানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে অনেক উন্নত বিশ^। এর ফলে আনস্কিলড ম্যানপাওয়ার আরো কাজ হারাবে। আইএমএফের অতি সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ ভয়াবহ আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে। মানবসম্পদ বাঁচানোর জন্য করোনার প্রাদুর্ভাবের ভয়ে, করোনা প্রতিরোধের উপায় হিসেবে লকডাউন/ছুটি/গৃহে অন্তরীণ হওয়ায় আয়-উপার্জনহীন হয়ে পড়া দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ, স্বল্প বেতনভুখ মানুষ, নিঃস্ব, সহায়, সম্বলহীন মানুষ সবাইকে খোরাকি পৌঁছাতে হবে, অব্যাহত রাখতে হবে যতদিন তারা স্বাভাবিক অর্থাৎ গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের কর্মচঞ্চল আয়-উপার্জনের অবস্থায় ফিরে না আসে। সবাইকে প্রয়োজন মতো খাদ্য খোরাকি নিয়মিত পৌঁছানোর ব্যবস্থাপনা হতে হবে নিñিদ্র ও দুর্নীতিমুক্ত। প্রথমদিকে উৎসাহী সহায়তাকারীদের ইতবিক্ষিপ্তভাবে খাদ্য ও নগদ অর্থ বিতরণে আগ্রহ দেখা গিয়েছিল, ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংস্থার পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা বিতরণের উদ্যোগ ছিল, কিন্তু এ তৎপরতাকে নিয়মিত ও টেকসই করতে খোরাকি ভাতা বা সামগ্রী বিতরণের কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। অনানুষ্ঠানিক খাতে ৭০ শতাংশ কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। আপদকালীন সময়ে তাদের শুধু খয়রাতি/খোরাকি না দিয়ে তাদের কাজ দিতে হবে। টার্গেট গ্রুপভুক্ত মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। সংকট কত দিন স্থায়ী হবে জানা না থাকায় আগামী ছয় মাস কিংবা এক বছরের পরিকল্পনা নিয়ে সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে। মধ্যবিত্ত, যারা হাত পাততে পারছে না, পারবে না, অথচ তাদের সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে তাদের জন্যও সমন্বয়ধর্মী পদক্ষেপ নিতে হবে। কঠোর কৃচ্ছ্র অবলম্বনের বিকল্প নেই। করোনাবার বলা হয়, কিন্তু বাজেটে অপ্রয়োজনীয় খরচ, মাথাভারি প্রশাসন বহনের খরচ বরাদ্দের পাশাপাশি তা নিয়ন্ত্রণেরও কঠোর আইনসঙ্গত নির্দেশনা ও পন্থা পদ্ধতি কাজে লাগাতে হবে। জাতীয় অর্থনীতিতে এতদিনের অর্জিত সাফল্য ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির অগ্রযাত্রাকে শুধু শ্লথ করছে না, করবে না, ক্ষেত্র বিশেষে পিছিয়ে দেবে এবং গোটা অর্থনীতিকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে ছাড়বে। এমতাবস্থায় অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে অন্তত পূর্বের অবস্থায় (ডিসেম্বর ২০১৯) ফিরতে সরকারি-বেসরকারি, ব্যক্তি ও সামষ্টিক খাতে সর্বত্র উন্নয়ন-অনুন্নয়ন বাজেটে ব্যয় সাশ্রয়ী হতে কঠোর কৃচ্ছ্র সাধনের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নিতে হবে এখন থেকেই। সব প্রকার অপ্রয়োজনীয়, অনুৎপাদনশীল খাতে সময়, সামর্থ্য, সমর্থন ও অর্থের অপচয়, অপব্যয় পরিহার করা আবশ্যক হবে। করোনা বিশ্বব্যাপী তার আক্রমণের দ্বারা, বড়-ছোট সব অর্থনীতিকে কুপোকাত করে এই সত্য জানান দিয়ে যাচ্ছে যে এখন থেকে যার যা আছে তাই দিয়ে তাকে চলতে হবে। পরমুখাপেক্ষী কিংবা পরনির্ভরশীল হওয়া বা থাকার সুযোগ হবে সীমিত। সুতরাং স্বনির্ভর আর্থিক স্বয়ম্ভরতা অর্জনের পথে আরো বেশি ‘হিসেবী’, আরো বেশি ‘সতর্ক’ ও সাবধানতা অবলম্বনকে জাতীয় চিন্তা-ভাবনা ও অভ্যাসের আওতায় আনতে হবে। স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি পদক্ষেপ অভ্যন্তরীণ বাজার চাঙ্গা রাখতে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। স্বাস্থ্য ও জীবিকা পরস্পরের হাত ধরে চলে। তাই করোনা মহামারি থেকে জনগণকে রক্ষায় স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ছোট-বড় ম্যানুফাকচারিং, আমদানি-রপ্তানি, ব্যবসা বিপণন, কৃষি (খাদ্য, সবজি, মাছ, মাংস) উৎপাদন, পরিবহন, পর্যটন, সেবা ও আর্থিক খাতে পর্যায়ক্রমে ক্ষুদ্র মাঝারি ও বৃহৎ উদ্যোক্তাদের করোনায় ক্ষয়ক্ষতির শুমার করে প্রথমত তাদের টিকে থাকা এবং করোনার প্রকোপ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যার যার কাজ জোরেশোরে শুরু করতে পারে সেজন্য প্রণোদনা প্যাকেজ আকারে নগদ সহায়তাসহ ট্যাক্স ট্যারিফ ফিসকাল ইনসেনটিভ ঘোষণা করা। গ্রুপভিত্তিক সহায়তা বিতরণ ও ইনসেটিভ প্রদানের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক বিলম্ব পরিহার, পক্ষপাতহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টি ও জবাবদিহির ব্যবস্থা সংবলিত নীতিমালা ও অনুশাসন অনুসরণ আবশ্যক হবে। নগদ সহায়তা প্রদান ও ইনসেনটিভ ঘোষণা বা প্রয়োগে বিলম্ব হলে উদ্দেশ্য সফল তো হবেই না বরং অর্থনীতি বেশি করে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা বিধান, সুশাসন কার্যকর ও নীতি-নৈতিকতার অধিষ্ঠান জোরদার করা বলার অপেক্ষা রাখে না বাংলাদেশের আর্থিক খাত করোনা পূর্বকাল থেকেই বেশ কিছু বশংবদ দুর্বলতায় সংক্রমিত। ব্যাংকিং খাতে বড় বড় লোপাট, বিদেশে অর্থপাচার, রাজস্ব ফাঁকি কিংবা অঢেল রেয়াত, কঠিন শর্তের দেশি-বিদেশি ঋণ গ্রহণ, প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হেতু অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি, রেন্ট সিংকিং, ক্ষত্রিক পর্যায়েও পদে পদে দুর্নীতি, নানান ফন্দি-ফিকিরে গণসম্পদ ও স্বার্থ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিবিধান প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর কার্যকর ভূমিকার অবর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছিল। ফলে সমাজে আয় বৈষম্য বৃদ্ধির মাত্রা সীমা অতিক্রান্ত হচ্ছে। করোনা-উত্তর পরিবেশে আয়-ব্যয় বণ্টন বৈষম্য বৃদ্ধির বিষয়টি সামাজিক সংহতি ও করোনায় ক্ষতি হেতু সবার বর্ধিত চাহিদা ও দাবি পূরণের পথে শৃঙ্খলা বিধানের ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই করোনা-উত্তরকালে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যেসব দেশে আয়-ব্যয় বৈষম্য পরিস্থিতি আগে থেকেই রোগাক্রান্ত সেসব দেশে গণঅসন্তোষ ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। বৈশ্বিক মন্দার প্রেক্ষাপটে নিজ নিজ দেশকেই তা মোকাবিলায় পারঙ্গম হতে হলে লুণ্ঠিত টাকা বা সম্পদ পুনরুদ্ধার ও বণ্টনে বৈষম্য/দুর্নীতি দমনের আবশ্যকতা দেখা দেবে। ফিসক্যাল মেজারমেন্ট ও ম্যানেজমেন্টে সংস্কারে মনোযোগ দিতে হবে। এখানে কালো টাকাকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার পথ থেকে সরে এসে, সবার স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে কালো টাকা উদ্ধার ও ফিরিয়ে আনার জন্য কঠোর ও কঠিন পদক্ষেপে থাকা সমীচীন হবে। ডবল স্ট্যান্ডার্ড তৈরির মাধ্যমে কোনোভাবেই সৎ উপার্জন ও নিয়মিত কর পরিশোধকারীর জন্য মানসিক বিড়ম্বনা তৈরির পদক্ষেপ নিলে তা হবে অধিকতর অনৈতিক। পণ্য ও সেবা উৎপাদন, আমদানি-রপ্তানি, সঞ্চয় ও বিনিয়োগ, বাজার ব্যবস্থাপনায় ‘নিজেরটা নিজে দেখ’ নীতি অবলম্বন প্রয়োজন হবে। করোনার বিশ্বব্যাপী বিচরণে ও মোটাতাজাদের সরু হওয়ার কারণে জাতীয় ও বিশ্ব অর্থনীতি ব্যবস্থাপনার চত্বর চৌহদ্দিতে এই উপলব্ধি পরিব্যপ্ত হচ্ছে বা হবে যে ‘পুঁজিবাদ’, ‘বিশ্বায়ন’ ও ‘মুক্তবাজার অর্থনীতি’র ধ্যান-ধারণা হালে পানি পাবে না। এখন ‘চাচা আপন বাঁচা’ নীতিতে অবগাহনের প্রয়োজন হবে। বঙ্গবন্ধু যেমনটি আহ্বান জানিয়েছিলেনÑ ‘তোমাদের যার যা আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়’। আমাদের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় সাফল্য আছে। একে আরো জোরদার করতে হবে। জাপানের মাত্র ২০ ভাগ জমি সমতল এবং মাত্র ১৩ ভাগে তারা শুধু ধান চাষ করতে পারে। গবেষণা দ্বারা এমন চাষ পদ্ধতি তারা উদ্ভাবন করেছে যে খাদ্যশস্য উৎপাদনে তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ। মৎস্য পশুসম্পদ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ম্ভরতার পথে। যেহেতু বাংলাদেশের রয়েছে উর্বর কৃষি জমি, জলাশয়, অধিক ফলনশীল শস্য উৎপাদনের অবকাঠামো, উদ্যম ও উদ্যোগ সেহেতু খাদ্যশস্য, সবজি, মৎস্য ও মাংস নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে করোনা-উত্তর পরিস্থিতিতে বহির্বিশ্বের বর্ধিত ও সৃজিত চাহিদা মেটানোতে বাংলাদেশ বরং এ খাতে রপ্তানির মহাসড়কে উঠতে পারবে। করোনা এই সুযোগ বাংলাদেশের জন্য এনে দেবে যদি এ খাতের প্রতি যত্নবান ও মনোযোগ দেয়া হয়। বাংলাদেশের মানবসম্পদ তৈরি পোশাক খাতে যে অবদান রাখছে তাতে ভ্যালু এডিশন আরো বাড়ানো সম্ভব হবে বাংলাদেশ যদি কাঁচামাল, মেশিনারিজ ও টেকনোলজিতে ব্যাক ওয়ার্ড লিংকেজ গড়ে তুলতে পারে। যে কোনোভাবে হোক ব্যাক ওয়ার্ড লিংকেজে গড়ে তুলতে মনোযোগী হতে হবে। বাংলাদেশের মানবসম্পদকে বাধ্যতামূলকভাবে ভোকেশনাল ট্রেনিং দিয়ে, কারিগরি উচ্চশিক্ষায় মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করে দেশের চাহিদা (উল্লেখ্য, বিদেশি কর্মীদের দ্বারা বার্ষিক গড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবসন হয় বাংলাদেশ থেকে) মেটানো সম্ভব হবে, প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ দেশে যে কোনো বৃত্তিমূলক পেশায় এবং বিদেশে ‘ভালো বেতনে’ কাজ পাবেন। মানবসম্পদে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের জন্য করোনা-উত্তর বিশ্ববাজারে সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে এ আশাবাদ ব্যক্ত করা যায়। করোনাকালে আমাদের বোধোদয় হচ্ছে সামনের দিনগুলোর নিয়ন্তা হবে ভার্চুয়াল যোগাযোগ সংস্কৃতির। ডিজিটাল প্রযুক্তি কর্মসূচিতে বাংলাদেশ সময়ের চেয়েও এগিয়ে আছে, এটি একটা বড় প্লাস পয়েন্ট। এই অবকাঠামোতেই বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তা উদ্ভাবক দেশে এবং বিদেশে ভার্চুয়াল অর্থনীতিতে সফলতার সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারবে। অতএব মনোযোগ প্রয়োজন এখানেও। সরকারি খাতের চেয়ে বেসরকারি খাতে (বিশেষ করে ব্যক্তি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প/কর্ম উদ্যোগে) বিনিয়োগের পাল্লা ভারি করতে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ নীতিমালায় সংস্কার ও নতুন নতুন পথ পন্থার সমাবেশ ঘটানো প্রয়োজন হবে। বেসরকারি বিনিয়োগই কর্মসৃজন, ভোক্তা সৃষ্টি ও পোষণ, পণ্য ও সেবা উৎপাদনের হাতিয়ার। ব্যাংক ঋণ প্রবাহ সরাসরি ক্ষুদ্র মাঝারিদের কাছে বিনা মাশুলে যাওয়া-আসা করতে পারে, বেল আউট ‘ইনসেনটিভ’ প্রনোদনা সুযোগ-সুবিধা শুধু বড়রা বা মধ্যস্বত্বভোগীরা হাতিয়ে না নিতে পারে আর আইনকানুনের খড়গ শুধু প্রান্ত ও পান্থজনের বেলায় না হয় সে বিধান বা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা বা হওয়া লাগবে। ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : কলাম লেখক, সাবেক সচিব ও সাবেক চেয়ারম্যান- এনবিআর। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App