×

জাতীয়

কৃষকের ধান কাটতে কাস্তে হাতে নিলেন শিক্ষকরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২১, ১১:২০ পিএম

কৃষকের ধান কাটতে কাস্তে হাতে নিলেন শিক্ষকরা

বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গলে কৃষকদের ধা কেটে দিয়েছেন শিক্ষকরা।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভারী বৃষ্টিপাত ও হাওর অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তাই দ্রুত পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য কৃষি বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন থেকে ঘোষণা দিলে শ্রীমঙ্গলের সাধারণ কৃষকরা অনেকটা দুশ্চিন্তায় পড়েন। এ অবস্থায় শ্রীমঙ্গলের প্রাথমিক স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় শ্রীমঙ্গল প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার উদ্যোগ নেয় ধান কাটার। তারা তাদের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে লিখে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকালে হাইল হাওরে ধান কাটতে যান।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের হাইল হাওর সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইউএনও এর নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক হাতে কাস্তে নিয়ে ধান কাটছেন। এ সময় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহর তরফদার জানান, স্বেচ্ছাশ্রমে তাদের এই ধান কাটার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেইজে দেওয়া ইউএনও এর আহ্বানে সারা দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার প্রখর রোদ উপেক্ষা করে কৃষকদের ধান কেটে দিচ্ছেন।

তিনি জানান, শিক্ষকরা তা করছেন বিপুল উৎসাহ নিয়ে এবং ধান কাটার গতিও সাধারণ কৃষকের ন্যায়। দুই ঘন্টায় তারা কয়েক কিয়ার ধান কেটে দেন। তিনি জানান, এ সময় তাদের সাথে ধান কাটেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। টানা দুই ঘন্টা একটানা ধান কেটেছেন। শুধু প্রাথমিক শিক্ষকদের সাথে শুধু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়, এসময় মাঠে উপস্থিত থেকে ধান কাটেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেছার উদ্দীন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটিও।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মুনালিসা সুইটি জানান, এ মৌসুমে উপজেলার ৯ হাজার ৬ শত ৫২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাওর অঞ্চলের নিচু জায়গায় ৩ হাজার ৭শত ২৭ হেক্টর জমি রয়েছে। যে জমিগুলো মূলত ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে ইতোমধ্যে হাওরের প্রায় ৪০ ভাগ ধান কাটা হয়েগেছে বলে জানান তিনি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, চলতি সপ্তাহে সিলেট অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত ও হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে শ্রীমঙ্গল হাইল হাওরে প্রায় ৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে। হঠাৎ যদি ভারী বৃষ্টিপাত হয় তাহলে এই পাকা ধানগুলো পানির নিচে পড়ে নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভবনা রয়েছে। তাই তিনি কৃষি অফিসের সাথে আলোচনা করে ফেসবুকে স্বেচ্ছায়শ্রমে ধান কেটে দেয়ার ঘোষণা দিলে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার এগিয়ে আসে।

তিনি জানান, প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার ছাড়াও ধান কেটে দেয়ার জন্য দল বেঁধে আরও অনেক সংগঠন এগিয়ে আসছে। তিনি ধান কেটে দিতে এগিয়ে আসা সংগঠনগুলোকে একেক দিন একেক জায়গায় ধান কেটে দেওয়ার অনুরোধ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App