×

মুক্তচিন্তা

করোনায় শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২১, ১২:০২ এএম

করোনায় শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি

করোনার কারণে বিশ্ববাসীকে অন্তহীন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। মহামারি থেকে কবে পুরোপুরি পরিত্রাণ মিলবে তা কারো জানা নেই। করোনার কারণে দেশে প্রায় ১৪ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান বন্ধ রয়েছে। থমকে আছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা কার্যক্রম। শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে অনলাইনে ও দূরশিক্ষণ পদ্ধতির পাঠদান চলছে। স্কুল-কলেজে অভ্যন্তরীণ কিছু পরীক্ষাও নেয়া হচ্ছে অনলাইনে। কিন্তু তাতে শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্দেশ্য পুরোপুরি পূরণ হচ্ছে না। দফায় দফায় পিছিয়ে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ। সব মিলিয়ে পৌনে ৪ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি ও সুদূরপ্রসারী। এ অবস্থায় সার্বিক শিক্ষা পুনরুদ্ধারে সুচিন্তিত পরিকল্পনা নেয়া দরকার। এ খাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন দেশের দৃষ্টান্ত এবং আমাদের অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সম্প্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ছুটি ২২ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে অনলাইনে ও দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে বিকল্প পাঠদান শুরু করা হলেও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে সব শিক্ষার্থীর কাছে তা পৌঁছাচ্ছে না। স্কুল শিক্ষকদের মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মধ্যে নিয়ে আসার নানা রকম উদ্যোগ থাকলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী দূরশিক্ষণ কার্যক্রমের বাইরে থেকে যাচ্ছে। করোনার কারণে অনেক শিক্ষার্থী আর স্কুলে নাও ফিরতে পারে। এছাড়া দারিদ্র্যের কারণে অনেক শিক্ষার্থীকে বাবা-মায়ের সঙ্গে কাজে ভিড়ে যেতে হতে পারে। বস্তুত করোনায় শিক্ষা, শিক্ষার্থী ও সমাজের ওপর নানা ধরনের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়া; শিশুশ্রম, বাল্যবিবাহ এবং শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়া। এসব রোধে যথাসময়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া না হলে আমাদের অনেক অর্জন মøান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মনে হচ্ছে, মহামারি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসতে আরো বেশ কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। এ অবস্থায় দেশের সব শিক্ষার্থীকে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসতে হবে, নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট দেয়ার মাধ্যমে পাঠ কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। একই সঙ্গে তাদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখার জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় যখন যে পদ্ধতিতেই শিক্ষা প্রদান করা হোক সুস্থতা অর্থাৎ ‘জীবন আগে এই নীতিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা বহুল আলোচিত। তারা যাতে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে, সেজন্যও নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ। করোনায় আরেক বড় ক্ষতিগ্রস্ত খাত হলো উচ্চশিক্ষা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পর্যায়ে অধ্যয়নরত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী কর্মজীবনে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকলেও করোনার কারণে তারা আটকে গেছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলোয়ও শত শত পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়েছে। করোনায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক থেকে দেড় বছরের সেশনজট তৈরি হয়েছে। এছাড়া প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই বন্ধ রয়েছে গবেষণা কার্যক্রম। মহামারির কারণে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রের ক্ষতি পূরণে যেসব উদ্যোগ নেয়া হবে, তাতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়েও গুরুত্ব দিতে হবে।

তারেক আল মুনতাছির : শিক্ষার্থী,ওমরগণি এমইএস কলেজ, চট্টগ্রাম। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App