×

সারাদেশ

করোনায় আক্রান্তদের জন্য পুলিশের মানবিক অক্সিজন ব্যাংক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২১, ১০:০৫ পিএম

করোনায় আক্রান্তদের জন্য পুলিশের মানবিক অক্সিজন ব্যাংক

নোয়াখালী পুলিশের উদ্যোগে কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক। ছবি: ভোরের কাগজ

করোনা আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে অক্সিজেনের অভাবে দিশেহারা যখন করোনা আক্রান্ত রোগীর স্বজনরা আর তখনই করোনা আক্রান্ত এসব সাধারণ মানুষদের কথা বিবেচনা করে এগিয়ে আসেন নোয়াখালী জেলার মানবিক পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।

চোখের সামনে করোনা আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে মৃত্যুর যন্ত্রণা দেখে সহ্য করতে পারলেন না মানবিক পুলিশ হিসেবে পরিচিত ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক এসএম কামরুল হাসান, আর উদ্যোগ নেন বিনা মূল্যে অক্সিজেন সরবরাহের। তখনই তার এ উদ্যোগকে কাজে লাগিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।

প্রাথমিকভাবে ১০টি  অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে চালু করেন নোয়াখালী পুলিশ কোভিড অক্সিজেন ব্যাংক। বর্তমানে এ কোভিড অক্সিজেন ব্যাংকে রয়েছে ৪৫টির মতো অক্সিজেন সিলিন্ডার। ক্রমান্বয়ে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করার আশ্বাস দিয়েছেন নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন। উদ্দেশ্য আর কোন শ্বাসকষ্ট রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে যেন মারা যেতে না পারে।

ভুক্তভোগী রাসেল চৌধুরী জানান, আমার আত্মীয় করোনা আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছিলেন তখন ফেসবুকে নোয়াখালী পুলিশের অক্সিজেন ব্যাংকের নাম্বারে রাত দুই টায় ফোন দিলে সঙ্গে সঙ্গে তারা অক্সিজেন নেওয়ার জন্যই আমাদেরকে আসতে বলেন। ওই রাতে আমরা জরুরী সেবা নিতে সেখানে গেলে কোন ধরনের অর্থ ছাড়াই আমাদেরকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রদান করে জেলা পুলিশ। পরবর্তীতে অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার এর ফলে আমার আত্মীয় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে। সেই থেকে আমি চিন্তা করলাম আমি যেমন উপকার পেয়েছি তেমনি অন্য সাধারণ মানুষ ও যেন এ উপকার পেয়ে থাকে সে জন্য আমি এই অক্সিজেন ব্যাংকের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে বর্তমানে কাজ করছি।

অক্সিজেন ব্যাংক এর তত্ত্বাবধায়ক এস এম কামরুল হাসান বলেন, হাসপাতালের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে মৃত্যু পথযাত্রী করোনা রোগীরা যখন দিশেহারা হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছে না তখন নিরুপায় হয়ে বাড়ি ফিরে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এমন রোগীরদের কথা বিবেচনা করে দিন কিংবা রাতে শুধু একটি মোবাইল কল দিলেই কোন প্রকার অর্থ ছাড়াই আমরা পৌঁছে দিচ্ছি অক্সিজেনের সিলিন্ডার। বর্তমানে আমাদের এ সেবা জেলার গন্ডি পেরিয়ে এখন পাশবর্তী জেলা লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লার রোগীরাও এ অক্সিজেন সেবা পাচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, প্রথমে আমরা ১০টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে আমাদের ৪৫টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। এখানে কোন প্রকার অর্থ ছাড়াই পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংক থেকে রোগীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার সেবা পায়ে থাকেন।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান,  মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সাধারণ মানুষ যখন শ্বাসকষ্টজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করেছেন। তখন আমাদের পুলিশের পক্ষ থেকে মানবিক বিষয়টি চিন্তা করে একটি অক্সিজেন ব্যাংক চালু করি। আমরা এ অক্সিজেন ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যে কোন সাধারণ মানুষকে এই অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করে যাচ্ছি। আমারা আশা করি আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আর কোন সাধারণ মানুষ যেন মৃত্যুবরণ না করে, এ জন্যই আমরা এই কোভিড অক্সিজেন ব্যাংকটি চালু করেছি।  আমাদের এই অক্সিজেন ব্যাংকটি বর্তমানে শুধু নোয়াখালী জেলা নয় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এটি একটি অনুকরণীয় হয়ে উঠছে। এই অক্সিজেন ব্যাংকটিকে আরও সমৃদ্ধ করার বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App