×

মুক্তচিন্তা

লকডাউনে শ্রমজীবী মানুষ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২১, ১২:০৫ এএম

লকডাউনে শ্রমজীবী মানুষ
হঠাৎ করে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। সরকার ধাপে ধাপে লকডাউন বাড়িয়ে সংক্রমণ এবং মৃত্যু কমিয়ে আনার দৃশ্যত একটি কার্যকরী পরিকল্পনার দিকে ওঠে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এবারের করোনার প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ধরনও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। মূলত বর্তমান করোনার ধরনটি প্রায় ৮০ শতাংশ আফ্রিকান হওয়ায় এর আক্রমণের ধরনও পাল্টে গেছে, এটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে মানুষকে সময় দিচ্ছে কম, ফলে মৃত্যুর হার দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে মানুষের জীবন বাঁচাতে মূলত কঠোর লকডাউনে যাওয়া ছাড়া সরকারের হাতে আর কোনো উপায় না থাকলেও কিছু ক্ষেত্র দেখা যাচ্ছে অনেকেই লকডাউন মানতে চাইছেন না, এই লকডাউন না মানার পক্ষের বেশিরভাগ মানুষই গরিব শ্রমজীবী। এরা সাধারণত দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ। প্রতিদিন কাজ না করলে এদের অন্ন জোটে না। লকডাউনের ফলে দেশের এক বিশাল গরিব শ্রমজীবী মানুষ বেশ অসহায় হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় লকডাউন চলাকালীন এসব গরিব শ্রমজীবী মানুষের অন্তত দুবেলা খেয়ে বেঁচে থাকার মতো অন্নের সংস্থান করা খুবই জরুরি। করোনার সংক্রমণের প্রথম দিকে অর্থাৎ করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় আমরা সরকারকে প্রচুর সাহায্য-সহযোগিতা করতে দেখেছি, সম্ভবত একনাগাড়ে লকডাউন থাকায় সরকার এ সহায়তা দিয়েছে। বর্তমানে স্বল্প পরিসরে লকডাউন দেয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে সে ধরনের বেশি সহায়তা দেখা যাচ্ছে না, ফলে গরিব এবং শ্রমজীবী মানুষ পড়েছে বিপাকে। গ্রামীণ পর্যায়ে কিছু শ্রমজীবী মানুষ এখনো ক্ষেতে-খামারে কাজ করে তাদের জীবিকা চালিয়ে গেলেও শহরের গরিব শ্রমজীবীরা তাও পারছে না। এ বিষয়ে সরকারের উচিত হবে এসব গরিব শ্রমজীবী মানুষকে দ্রুত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া, কারণ এরা এদের পরিবার-পরিজনের জন্য অন্নের সংস্থান করতে অনেক সময় লকডাউন ভাঙতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক সময় মৃত্যু ভয়ের চেয়ে পেটের ক্ষুধা নিবারণের দায় অনেকটা বড় হয়ে দেখা দেয়, কারো পরিবারে যখন ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা থাকে। প্রকৃতপক্ষে লকডাউন চলাকালীন এসব গরিব শ্রমজীবী মানুষকে সরকার চাইলে অনেকভাবে সহায়তা করতে পারে, তাদের জন্য এককালীন অনুদানের ব্যবস্থা করতে পারে কিংবা ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে তাদের সব ধরনের সহায়তা করতে পারে। প্রকৃতপক্ষ দেশে করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুকে কমাতে যেমন কঠোর লকডাউনের প্রয়োজন রয়েছে তেমনি দেশের গরিব ও শ্রমজীবী মানুষদেরও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। এসব গরিব এবং শ্রমজীবী মানুষের অন্নের ব্যবস্থা না করে লকডাউন কার্যকর করার চিন্তা করা মানে গরিবদের মাথায় একটা বিরাট চিন্তার বোঝা চাপিয়ে দেয়া, যার কারণে তারা লকডাউনের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে কাজে যেতে বাধ্য হয়। এতে করে এদের মধ্যে অশান্তিও বাড়ে। মাঝেমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও এদের ভুল বোঝাবুঝি হয়। আমরা প্রত্যাশা করব সরকার লকডাউন চলাকালীন দেশের গরিব এবং শ্রমজীবী মানুষদের কথা চিন্তা করে তাদের বিষয়ে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে। রতন কুমার তুরী শিক্ষক এবং লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App