×

সারাদেশ

আসন্ন বাজেটে মোবাইল ও ইন্টারনেটে কর রেয়াতের দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২১, ০৪:২৬ পিএম

আসন্ন বাজেটে মোবাইল ও ইন্টারনেটে কর রেয়াতের দাবি

ফাইল ছবি

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং করোনাকালীন সময়ে মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের অপরিহার্যতা বিবেচনা করে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ও ইন্টারনেটে কর কমানোর বা প্রয়োজনে রেয়াতের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

বুধবার (২১ এপ্রিল) অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে সংগঠনের ফেসবুক পেইজ থেকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এসব দাবি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে গ্রাহকদের পর প্রস্তাব নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

লিখিত বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনা মহামারীর মধ্যে জীবনযাত্রাকে সচল রাখতে একমাত্র নির্ভরযোগ্য ভরসার মাধ্যম হচ্ছে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা। তাই এ সেবার বাজেট জাতির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জিডিপির প্রায় বর্তমানে ৭% অর্জিত হয়। এর পাশাপাশি যদি আমরা খাতসংশ্লিষ্ট ইকমার্স, টেলিমেডিসিন সামগ্রিক হিসাব করি সফটওয়্যার আমদানি-রপ্তানিসহ যোগ করলে দাঁড়াবে জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ এতে কোন সন্দেহ নেই। একহাতে গ্রাহকদের বিনিয়োগ সবচাইতে অগ্রগামী তাই আসন্ন বাজেটে গ্রাহকদের চাহিদা ও আকাঙ্খা দুটোই বাজেটে পরিলক্ষিত হবে বলে আমরা আশা করি।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে গ্রাহকরা তাদের অর্থ বিনিয়োগ করে আজ করে চলেছে এক ডিজিটাল বাংলাদেশ। আর সরকারের দূরদর্শী পরিকল্পনা ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ফলে কোভিড-১৯ দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব কম হয়েছে। বৈশ্বিক জিডিপি ২০২০ সালে ৪.৪ শতাংশ কমে গেলেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২৪ শতাংশ। তারই ধারাবাহিকতায় কোভিড-১৯ এর বর্তমান সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি মাথায় রেখে একটি যুগোপযোগী বাজেট তৈরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ও প্রসার নিশ্চিত করতে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাত অনস্বীকার্য ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে মুঠোফোন গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে এবং মোবাইল ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি ৩২ লাখ। ২০০৮ সালে যেখানে মাত্র ৮ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হতো এখন করোনা মহামারীর মধ্যে তা দাঁড়িয়েছে ২২০০ জিবিপিএস। কাজেই ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আগামী অর্থবছরের বাজেটের কথা বিবেচনায় নিয়ে কর কমানো, রেয়াত দেয়াসহ বেশকিছু সংস্কার অবশ্যক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মোবাইল অপারেটরদের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রায় ১০০ শতাংশ মোবাইল নেটওয়ার্ক কভারেজ রয়েছে। কিন্তু একক গ্রাহক বিবেচনায় তা ৫৪ শতাংশ মানুষ মোবাইল সেবা ব্যবহার করছে। এখনো মোবাইল সেবার বাইরে রয়েছে আরও ৪৬ শতাংশ গ্রাহক। এর অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করা হয় উচ্চ কর হার।

নতুন সিম সংযোগ ক্রয়ের ক্ষেত্রে এখন সিম প্রতি ২০০ টাকা ভ্যাট প্রযোজ্য। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনায় ইনটেক্স মোবাইল সেবা গ্রহণের পথে একটি বড় অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। এসব ট্যাক্স প্রত্যাহার করা না হলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে মোবাইল সেবা ব্যবহারের গতি সঞ্চার এর আশা করা যায় না।

তিনি জানান, বাংলাদেশ কর্পোরেট কর হার সবচাইতে বেশি যেমন ভারতে ২২ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ২৮ শতাংশ, নেপালে ৩০ শতাংশ, মালয়েশিয়ায় ২৪ শতাংশ এমনকি আফগানিস্থানে ২০ শতাংশ। কর্পোরেট কর কমাতে আমরা এই জন্যই সরকারের কাছে আহবান জানাচ্ছি যে এই কর্পোরেট পরও গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা হয় পরোক্ষভাবে।

দেশে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদানের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। কিন্তু ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রার্থী ও সরবরাহের ক্ষেত্রে রয়েছে অনেক প্রতিবন্ধক কর হার। নানাবিধ হার বিদ্যমান থাকায় গ্রাহকরা উচ্চ গতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদিও লক্ষ করা যায় ভ্যাট ১৫ শতাংশ। বাস্তবে ইন্টারনেটের সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পর সম্পৃক্ত থাকায় পর অনেক বেশি। যেমন- ইন্টারনেট মডেম, ইন্টারনেট ইন্টারফেস কার্ড, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সুইচ, হাব, রাউটার, সার্ভার ব্যাটারি সহ সকল ইন্টারনেট ইকুইপমেন্টের বর্তমান আরোপিত কর ১০ শতাংশ। আমরা এই কর শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সরকারকে বিনীত অনুরোধ করেছি।

এছাড়া মোবাইল হ্যান্ডসেট এ উৎপাদন উৎসাহিত করতে বর্তমানে ৫% হার বিদ্যমান রয়েছে তা আগামীতেও বহাল রাখতে সুপারিশ করছি। সেই সাথে আমদানির ক্ষেত্রে ফরহাদ ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫% করা হয়েছে যার পরিপ্রেক্ষিতে সামগ্রিকভাবে সর্বমোট আমদানির পর দাঁড়ায় ৫৭%। আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে কম মূল্যে হ্যান্ডসেট সরবরাহ করতে শর্তসাপেক্ষে অপারেটরদের সংযুক্ত সহ এই গরমে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে সুপারিশ করেছে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App