×

জাতীয়

বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার বিচারবিভাগীয় তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২১, ০৩:২৬ পিএম

বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার বিচারবিভাগীয় তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি

বাঁশখালীতে গুলিকরে শ্রমিক হত্যার বিচারবিভাগীয় তদন্ত, দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি স্কপের। ছবি সংগৃহীত

বাঁশখালীতে গুলি করে শ্রমিক হত্যার বিচারবিভাগীয় তদন্ত, দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্থদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেবার দাবি জানিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ। একই সঙ্গে শ্রমিক হয়রানি বন্ধের দাবিও জানান নেতারা। এসব দাবি পূরণের জন্য আগামীকাল ২১ এপ্রিল দেশব্যাপী সকল শ্রমজীবী মানুষদের সমন্বয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় স্কপের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানান হয়েছে।

সোমবার বিকালে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ -স্কপ এর কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় স্কপ যুগ্ম সমন্বয়কারী শহিদুল্লাহ চৌধুরী এর সভাপতিত্বে জুম প্লাটফরমে ভার্চুয়ালি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন স্কপনেতা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন, রাজেকুজ্জামান রতন, কামরুল আহসান, চৌধুরী আশিকুল আলম, নাইমুল আহসান জুয়েল, শাকিল আক্তার চৌধুরী, রিপন চৌধুরি, শামিম আরা, আহসান হাবিব বুলবুল, আবুল কালাম আজাদ, ফিরোজ হোসেন প্রমুখ। সেখানে এসব দাবি উত্থাপিত হয়।

স্কপ নেতারা বলেন, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় অবস্থিত এস. আলম  গ্রুপের মালিকানাধীন কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং রোজার মধ্যে ৮ ঘন্টা কর্মদিবস বাস্তবায়নসহ ১০দফা দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের উপর কোন রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে পাঁচজন শ্রমিককে হত্যা, অর্ধশত শ্রমিককে আহত করে।

তৎপরবর্তীতে কোন তদন্ত ছাড়ায় তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত শ্রমিকদের জন্য জেলা প্রশাসনের নাম মাত্র  ক্ষতি পূরণের  ঘোষণা, শ্রমিকদের দায়ী করে পুলিশ সুপারের বক্তব্য, গুলিবর্ষণ কারীদের গ্রেপ্তার না করে উল্টো কয়েক হাজার শ্রমিক ও গ্রামবাসির নামে মামলা দায়ের করার ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করে স্কপ নেতারা বলেন, এটাকে ঠান্ডা মাথায় হত্যাকান্ড এবং হত্যাকারিদের রক্ষায় ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করলে তা অতুক্তি হবেনা। নেতারা বলেন কর্মঘন্টা, সাপ্তাহিক ছুটি, বেতন ভাতা পরিশোধ, শিল্প সম্পর্ক সংশ্লিষ্ট  আইন বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতাও এই ঘটনার জন্য দায়ি। তাই প্রশাসনিক বা পুলিশের তদন্ত কমিটি নয়, বিচার বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি গণ তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

দেশের প্রকৃত মালিক শ্রমজীবী মানুষদের প্রতি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের যে দায়িত্বহীন উদ্ধত মনোভাব গড়ে উঠেছে তা পরিবর্তনে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা সংগঠিত হওয়ার জন্য দায়ী প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া জরূরী। তাই সঠিক তদন্ত ও এমন দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত স্কপ বিক্ষোভ, সমাবেশ, স্বরাষ্ট্রও শ্রম মন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশসহ ধারাবাহিক কর্মসূচী পালন করবে, রাজপথে থাকবে। গতকালের সভা থেকে দৈনিক কর্মঘন্টা সংশ্লিষ্ট শ্রম আইনের ধারা সমূহ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে শ্রম মন্ত্রণালয়ের মজুরি বোর্ড শাখার জারিকৃত প্রজ্ঞাপন বাতিলের আহবান জানানো হয়।

তারা বলেন, শ্রমিকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় না নিয়ে শুধু মালিকের মুনাফা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব হতে পারেনা, করোনা উচ্চ সংক্রমনের সময়ে এই প্রজ্ঞাপন শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরো বাড়াবে বলে নেতারা ঐক্যমত পোষণ করেন। সভা থেকে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এবং লক-ডাউনের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সংক্ষিপ্ত পরিসরে ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধ্বসের অষ্টম বার্ষিকী ‘গার্মেন্টসশ্রমিক শোক দিবস’ এবং  ১লা মে ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস’ এর কর্মসূচী পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

স্কপ নেতারা বাঁশখালীর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, কর্তৃপক্ষ-নিরাপত্তারক্ষী-পুলিশসহ শ্রমিক হত্যার জন্য দায়িদের বিচার, শ্রমিক হয়রানি বন্ধ, নিহত-আহতদের  যথাযথ ক্ষতিপূরনের দাবিতে কাল বুধবার (২১ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেন এবং উক্ত বিক্ষোভ কর্মসূচী সফল করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং সারা দেশের স্কপভুক্ত সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দ কে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App