×

জাতীয়

থেমে নেই গাঁজার চালান, এক দিনেই উদ্ধার ২ মণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২১, ১০:১৪ এএম

থেমে নেই গাঁজার চালান, এক দিনেই উদ্ধার ২ মণ

চালকের সিটের পেছনে থাকা একটি সুইচ চাপ দিলেইে পুরো পাতাটান উল্টে যায়, আর সেখানে দেখা মেলে ২৮ টি প্যাকেট ভরতি গাঁজা। ছবি: ভোরের কাগজ

করোনার দ্বিতীয় প্রভাব বিস্তার রোধে সরকারের কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যেও থেমে নেই মাদকের বিস্তার। প্রতিনিয়তই ধরা পড়ছে গাঁজার চালান। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতেও মাদক কারবারীদের চেষ্টার অন্ত নেই। নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করছে তারা। বিশেষ করে মাদক পরিবহনকে তারা নানাভাবে পরিবর্তন করে তাদের ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। এমনকি সীমান্তের ওপার থেকে কারীগর এনে মাদক পরিবহনের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে তারা। ফলে মাদক শনাক্তে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। এক দিনেই ডিবি উদ্ধার করেছে ২ মণ গাঁজা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তদন্তে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। গত শনিবার সবজি পরিবহনের কথা বলে বের হওয়া একটি পিকআপ থামিয়ে অনেক তল্লাশি চালালেও কোন মাদকের সন্ধান পায়নি ডিবি তেজগাঁও বিভাগ। তবে তল্লাশি চালিয়ে গলদঘর্ম হওয়ার পর হঠাৎ পাটাতানের দিকে স্বাভাবিকের চেয়ে খানিকটা বেশী উচু দেখায় সন্দেহ হয় অভিযানকারীদের। পরে চালককে অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর সে স্বীকার করে মাদকের কথা। চালকের সিটের পেছনে থাকা একটি সুইচ চাপ দিলেইে পুরো পাতাটান উল্টে যায়। আর সেখানে দেখা মেলে ২৮ টি প্যাকেটের। যেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ৫৫ কেজি গাঁজা। এছাড়াও ফিল্মি স্টাইলে একজন হেলমেট ধারীকে পিকআপের সঙ্গে দেখা যায়। পুলিশসহ অন্যান্য ঝামেলা দেখলে আগেই সতর্ক করে মাদকের চালানটি পাহাড়া দিয়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়াই ছিল তার কাজ। তবে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় সে। হেলমেটধারী মোটর সাইকেল চালককে খুঁজছে পুলিশ।

এ বিষয়ে অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ডিবি তেজগাঁও বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মুজিব আহম্মদ পাটওয়ারী ভোরের কাগজকে বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল মাদক ব্যবসায়ী একটি পিকআপ ভ্যানে গাঁজা নিয়ে কুমিল্লা থেকে রামপুরার দিকে আসছে। এমতাবস্থায় রামপুরা থানার বনশ্রী মেইন রোডের সামনে রাস্তার উপর চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি তল্লাশি কার্যক্রম শুরু করা হয়। তল্লাশীকালে ডেমরা থেকে রামপুরাগামী আগত একটি রেজিঃ নম্বর বিহীন পিকআপ গাড়ি থামানোর জন্য সিগন্যাল দিলে না থামিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে চালক মিলন বখতিয়ার ওরফে চুন্নু বখতিয়ারসহ (২২) একজনকে আটক করা হয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তার নাম প্রকাশ করা হলো না। প্রথমে কিছু না পেলেও পরে পিকআপ ভ্যানের ভিতরে বিশেষ কায়দায় তৈরী পাটাতনের নীচে একটি গোপন চেম্বারের সন্ধান পাওয়া যায়। যা গাড়ির ড্যাস বোর্ড থেকে বিশেষ ইলেকট্রিক সুইচের মাধ্যমে খোলা ও বন্ধ করা যেত।

পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সীন্তের ওপার থেকে মেকানিক এনে মাদক পাচারের জন্য এমন পদ্ধতি করে তারা। এমন বেশ কয়েকটি গাড়ি রয়েছে তাদের। মূলত ভারতের সীমান্ত দিয়ে ওপারের মেকানিকরা এমনটা করে থাকে। তবে হেলমেট পরিহিত মোটরসাইকেল চালকটি মূলহোতা। তাকে পাওয়া গেলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসলে গাঁজা দেশে উৎপাদন হয় না। ভারত থেকে আসে। আর গাজা পরিবহনের রুটও বাংলাদেশ না। দেশেই গাঁজার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এককেজি খুচরা গাঁজা বিক্রি হয় ২৫-৩০ হাজার টাকায়।

উল্লেখ্য গ্রেপ্তারকৃতরা কুমিল্লা জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গাজা সংগ্রহ করে রাজধানী হয়ে ময়মনসিংহের ভালুকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে শুধু গত শনিবারই ডিএমপির গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের বিমান বন্দর জোনাল টিমের এসি মো. কায়সার রিজভী কোরায়েশী রাজধানীর বংশাল থেকে ২৫ কেজি গাঁজাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App