×

জাতীয়

লকডাউন মানছে না মানুষ, রাজধানীতে যানজট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২১, ১১:৪১ এএম

লকডাউন মানছে না মানুষ, রাজধানীতে যানজট

ফাইল ছবি

লকডাউনের চতুর্থ দিনে রাজধানী ঢাকার সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ির রাজত্ব। করোনা নিয়ন্ত্রণে মানুষকে ঘরে রাখতে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। অথচ সকাল থেকেই ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হয়ে রাস্তা দখলে রেখেছে মানুষ।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের মতোই লেগে আছে যানজট। নেই শুধু গণপরিবহন। গাড়ির পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে কার কাছে মুভমেন্ট পাস আছে আর কে কোন কারণে বের হয়েছে তা পরীক্ষা করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। এক এক করে গাড়ি পরীক্ষা করতে গেলেও বেড় যায় যানজট।

লকডাউনের মধ্যেই মিরপুর এলাকায় রিকশা চালকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। নগরীর সোনারগাঁ হোটেলের সামনের রাস্তায় টিকিট বিড়ম্বনায় পড়ে প্রবাসীরা সড়কে অবস্থান নিয়েছে। গত শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর সড়কগুলো ফাঁকা থাকলেও লকডাউনের চতুর্থ দিনে আজ সকাল থেকেই আবারও রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। নানান অজুহাতে লোকজন প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, রিকশা ও পায়ে হেঁটে রাস্তায় বের হয়। এদের মধ্যে কেউ কেউ সত্যিকারের প্রয়োজনে রাস্তায় বের হলেও অনেকেই ঘরে বসে না থাকতে পেরে রাস্তায় বের হয়েছেন বলে জানা গেছে। লোকজনের এহেন চাপের কারণে রাস্তাগুলো ব্যস্ত হয়ে যায়। যানবাহনের চাপে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর কাকলি, বনানী, বাড্ডা, রামপুরা, মগবাজার, বাংলামোটর, পুরানা পল্টন এলাকার রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। শত শত যানবাহনকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে।

নগরীর প্রতিটি সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট থাকায় দায়িত্বরত সদস্যরা সব ধরনের যানবাহনের মুভমেন্ট পাস দেখতে চায়। বনানী ক্রসিং এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে সব যানবাহনকে থামিয়ে যাত্রী এবং গাড়ির মুভমেন্ট পাস চেক করা হয়। একসঙ্গে অনেক গাড়ি এসে চেকপোস্টে থামে। এরপর এক এক করে পুলিশ সদস্যরা মুভমেন্ট পাস চেক করতে থাকে। মুভমেন্ট পাস চেক করার ধীর গতির কারণে এই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট একপর্যায়ে কাকলি পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

এদিকে আজও মিনি ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে লোকজনকে ঢাকা ছাড়তে এবং ঢাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল, বাবুবাজার, আব্দুল্লাহপুর এলাকায় সকাল থেকেই লকডাউন উপেক্ষা করে এভাবে লোকজনকে ঢাকা ছাড়তে এবং ঢাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এক একটি পিকআপ ভ্যানে ও মিনি ট্রাক ১০জন ১৫ জনকে স্বাস্থ্যবিধির বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে। যাত্রাবাড়ীতে পুলিশ এসব যাত্রীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। মুভমেন্ট পাস না থাকায় অনেক যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়।

এদিকে লকডাউনের মধ্যে আজ মিরপুর বেড়িবাঁধে পালপাড়া এলাকায় রিকশাচালকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। লকডাউনের মধ্যে রিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়ার দাবিতে সকালে তারা সড়ক অবরোধ করে। স্থানীয় ৫ শতাধিক রিকশাচালক বাঁশ দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। তারা জানায়, লকডাউনের মধ্যে প্রাইভেটকার মোটরসাইকেল চলতে পারলে রিকশা কেন চলতে পারবে না। রিকশাচালকরর গরিব মানুষ। রিকশা না চালালে তাদের পরিবারসহ না খেয়ে থাকতে হয়। এ কারণে লকডাউনের মধ্যে রিকশার আবার চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।

বেড়িবাঁধ সড়ক অবরোধের কারণে বিয়ে বাড়ি থেকে গাবতলী পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সড়ক পালপাড়ার উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অবরোধের খবর পেয়ে সকাল ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রিকশাচালকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পুলিশ বাঁশের ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়ার পরে বেড়িবাদ সড়কে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

অপরদিকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের ভিড়ে রাজধানীর ব্যস্ততম সোনারগাঁ হোটেলের সামনের রাস্তায় মানুষের ভিড় ও যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

প্রবাসী নজরুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোনারগাঁ হোটেল কম্পাউন্ডের ভেতর সৌদি এয়ারলাইন্সের অফিস রয়েছে। সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যগামী বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা এই এজেন্সি থেকেই টিকিট ক্রয় করে থাকেন। সৌদি আরবসহ পাঁচটি দেশের আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞায় সরকারের ঘোষণার পর আজ সকাল থেকেই লোকজন সোনারগাঁ হোটেলের সামনে এসে ভিড় জমায়। তারা টিকিটের জন্য সৌদি এয়ারলাইন্সের অফিসে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মীরা তাদেরকে প্রথমে ঢুকতে দেয়নি। পরে জানানো হয়, সৌদি এয়ারলাইনসের অফিস বন্ধ রয়েছে। তখন আর লোকজনকে হোটেল কম্পাউন্ডের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে শতশত লোক বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ে সোনারগাঁ হোটেলের সামনের রাস্তায় অবস্থান নেয়। এর ফলে সেখানেও লোকজনের ভিড় বেড়ে যায় এবং যানজটের সৃষ্টি হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App