×

সম্পাদকীয়

মৃত্যু হার কমাতে লকডাউন বাস্তবায়ন করুন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২১, ১২:১০ এএম

কোভিড সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ‘কঠোর লকডাউন’ ব্যবস্থার তৃতীয় দিন চলমান। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে রাজধানীবাসী ঘরে থাকতে নারাজ। পুলিশ প্রশাসন ধরে-বেঁধে মানুষকে ঘরে রাখছে। দেশের দুঃসময়ে মানুষের এমন আচরণ সত্যিই দুঃখজনক। রাজধানীবাসী লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা ভেঙেই গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি মানুষকে রাস্তায় যাতায়াত করতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে। লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে না পারলে সামনে হয়তো মৃত্যুর হার আরো বেশি দেখতে হবে। লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদেরও এখনই সচেতন হতে হবে। মহামারি রূপ নেয়া করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১৪-২১ এপ্রিল পর্যন্ত ৮ দিনের জন্য নতুন করে বিধিনিষেধ (লকডাউন) ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময় গণপরিবহনসহ নিত্যপণ্য, ওষুধ, খাবার দোকান বাদে সব ধরনের দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধ থাকবে। অবশ্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা (বিশেষ গার্মেন্ট) খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আমরা বুঝতে পারছি, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সত্ত্বেও পোশাক কারখানা, দোকানপাট খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু এটা কতটা যুক্তিসঙ্গত সেটা ভাবার বিষয়। আমাদের দেশের আক্রান্তের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে রপ্তানি খাতের কারখানাগুলো খোলার কথা বলা হলেও এখন শিল্প অঞ্চলের প্রায় সব কারখানাই খোলা। আংশিকভাবে কিছু কিছু বড় কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মানলেও অধিকাংশ কারখানাই কোনো নিয়ম-নীতি মানছে না। এতে করে কারখানাগুলোতে দিন দিন বাড়ছে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা। শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন, লোক দেখানোর নামে কারখানা গেটে স্বাস্থ্যবিধি লিখে রাখলেও কারখানার ভেতর শ্রমিকদের বসার ক্ষেত্রে নিরাপদ দূরত্ব রাখছে না। মাস্ক নেই, নেই পিপিই। এমন অবস্থা যদি হয় কারখানাগুলোর চিত্রÑ তাতে শঙ্কা বেড়ে যাবে স্বাভাবিক। বাংলাদেশে করোনা মহামারি ইউরোপ-আমেরিকার মতো ব্যাপক সংক্রমণ ও প্রাণঘাতী রূপ নিলে দেশের সামাজিক বাস্তবতা ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবে আতঙ্কিত হতে হয়। আমরা বলব এক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা ও পদক্ষেপ থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশকে আরো সতর্ক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিদিন আমরা মৃত্যুর খবর পাচ্ছি। এ মৃত্যুর মিছিল কোথায় গিয়ে শেষ হবে, তা আমরা এ মুহূর্তে বলতে পারব না। জীবন রক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষতি ন্যূনতম মাত্রায় রাখাÑ এই উভয় কূল রক্ষার চ্যালেঞ্জে সবাইকে বিচক্ষণতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, নিয়মিত মেঝে পরিষ্কার করা, পুরো কর্মস্থল পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা, হাত ধোয়া এবং স্যানিটাইজেশনের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ সরবরাহ করা এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে বিনামূল্যে কর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) সরবরাহ করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App