×

জাতীয়

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১১:০১ এএম

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে

লকডাউনের প্রথমদিন ছুটি থাকায় দ্বিতীয় দিনে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ছবি: ভোরের কাগজ

লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে

লকডাউনে বিমানবন্দর সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট। ছবি: ভোরের কাগজ

সর্বাত্মক লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রতিটি সড়কে মানুষ ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। পহেলা বৈশাখে ছুটির পর আজ শিল্প-কারখানা ও অফিস খোলা থাকায় সড়কে যানবাহেনর সমাগম দেখা গেছে। সব সড়কেই পুলিশ সদস্যদের লকডাউনের প্রথম দিনের মতোই দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

তবে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সর্বাত্মক বিধিনিষেধের বাইরে থাকা অনেকেই কর্মস্থল ও বাসায় যাতায়াতের পথে পুলিশের হয়রানির শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ সকালের দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকার রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। বেশিরভাগ অফিস-আদালত বন্ধ থাকলেও ব্যাংক, হাসপাতাল, পুজিবাজার, জরুরী সেবা প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা খোলা থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে আজ অফিস করতে হয়েছে। এ কারণে প্রতিদিনের মতো সকালেই তারা রাস্তায় নেমে আসে। তারা যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীরা নেওয়ার জন্য নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে সেগুলোকেই চলাচল করতে দেখা গেছে। যাদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়নি তারা রিক্সা কিংবা পায়ে হেঁটেই অফিসের দিকে রওনা হয়েছেন। যাত্রাবাড়ীর মত এমন দৃশ্য রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, মিরপুর ১ নাম্বার সহ বিভিন্ন এলাকায় লোকজনকে রাস্তায় দেখা গেছে।

সড়কে লোকজনের চলাচল বাড়ার কারণে যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। রাজধানীর সব রাস্তাতেই বিপুল সংখ্যক প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, রিক্সা চলছে। কিছু কিছু বাসও চলেছে। তবে এসব বাস সাধারণ যাত্রী পরিবহন করেনি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্মীদের আনা নেয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে চলাচলরত সব যানবাহন ও পথচারীদের বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হওয়ার কারণ জানতে চেয়েছে কর্তব্যরত পুলিশ। যুক্তিসঙ্গত কারণ না দেখালে এবং সঙ্গে পুলিশের দেয়া মুভমেন্ট পাস না থাকায় অনেক লোকজনকে ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে যারা এই রাস্তায় বের হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই লোকজনই ছিলেন মুভমেন্ট পাসধারী।

এদিকে নগরীর কোথাও কোথাও পুলিশের দায়িত্ব পালন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে যায়। লকডাউনের বিধি-নিষেধের বাইরে থাকা লোকজনকেও ঘুরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার রাতে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নার্সদের বহনকারী একটি বাসকে রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা আটকে দেয়। স্টাফ বাসটি হাসপাতাল থেকে নার্স ও কর্মীদের বাসায় পৌছে দেয়ার কাজে নিয়োজিত ছিল। কিন্তু পুলিশ বাসটি আটকে মুভমেন্ট পাস দেখতে চায়। মুভমেন্ট পাস না দেখানোর ফলে পুলিশ বাসটি বেশ কিছুক্ষণ আটকে রাখার পর আবার হাসপাতালের দিকে ফিরিয়ে দেয়। ফলে ওই হাসপাতালেই তারা রাত কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উত্তরার অপর একটি হাসপাতালে কয়েকজন চিকিৎসকও এ ধরনের বিড়ম্বনায় পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা সবাই নিজেদের অবস্থান পুলিশকে বোঝানোর পরেও পুলিশ মুভমেন্ট পাস ছাড়া ছাড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে।

আজ সকালে নাখালপাড়া থেকে তেজগাঁও শিল্প এলাকায় নিজ কর্মস্থলে যাওয়ার পথে অনেক শ্রমিক কেউ পুলিশের বাড়াবাড়ি মুখে পড়তে হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা তাদের কাছেও মুভমেন্ট পাস দেখতে চায়। পাস দেখাতে না পারায় ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

পেটের দায়ে রাস্তায় বের হওয়া রিকশাচালকদের পুলিশের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। নগরীর বিজয় স্মরণী মোড়ে অনেকগুলো রিকশাকে পুলিশ আটকের পর রাস্তায় পাশে উল্টে রাখে। নগরীর লালবাগ, আজিমপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় রিকশা আটক করে উল্টে রাখার ঘটনা ঘটেছে। মাঝপথে রিকশা আটকে দেওয়ায় অফিসগামী লোকজনকে পায়ে হেঁটেই অফিসে যেতে হয়েছে।

গতকাল ১৪ তারিখ থেকে সারাদেশে লকডাউন জারি করা হয়েছে। আটদিনের এই লকডাউনে ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। এর আগে সীমিত পরিসরে লকডাউন চলমান ছিল। এতে অফিস আদালত খোলা থাকলেও গণপরিবহনে যাত্রী নেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ ছিল। এতে ভোগান্তিতে পরতে হয়েছিল অফিসগামী, শ্রমজীবী মানুষের। সর্বত্মক লকডাউনে অফিস আদালত বন্ধ থাকলেও জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠঅনগুলো খোলা রয়েছে। রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যায় পরতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড ভাঙছে। সংক্রমণের হার বেড়েই চলছে। হাসপাতালের সেবা দেওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এমন পরিস্থিতিতে সরকার প্রয়োজনে লকডাউন আরও বাড়াতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App