×

জাতীয়

মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: নুরের সংগঠনের ৫৩ জন গ্রেপ্তার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১১:৩৩ এএম

মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: নুরের সংগঠনের ৫৩ জন গ্রেপ্তার

নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে মতিঝিলে বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল।

দেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশের ঘটনায় ছাত্র, যুব ও শ্রম অধিকার পরিষদের ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে ১০ জনের নাম মামলার এজাহারে নেই।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ছাত্র ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে দলটি।

ছাত্র, যুব ও শ্রম অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক বলেন, সব কটি মামলাই হয়রানিমূলক। গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তাঁদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল রাস্তায় নামলেই তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁরা জানিয়ে দেন, সভা-সমাবেশ তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং তাঁরা কর্মসূচি পালন করবেন। সে অনুযায়ী গত ২৫ মার্চ তাঁরা মতিঝিলে মিছিল নিয়ে যান। সেখান থেকেই তাঁদের ৩৮ জনকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়।

এক দিন পর ২৭ মার্চ ভাসানী অনুসারী পরিষদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং নতুন একটি মামলা দেওয়া হয়। সফরকে কেন্দ্র করে কমপক্ষে চারজন গুম হয়েছিলেন। তাঁদের একজন নাজমুস সাকিবকে ৮৪ ঘণ্টা আটকে রেখে পুলিশ ছেড়ে দেয়। বাকি তিনজনকে দুদিন আটকে রাখার পর গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এজাহারে নাম না থাকা গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার পরিষদের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া জাবেদ মায়া, যুব অধিকার পরিষদের মমিন আকন্দ, শ্রমিক অধিকার পরিষদের আসাদুজ্জামান নূর আসাদ, শিপন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ক্রীড়া সম্পাদক আরেফিন ফরহাদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিল উজ্জামান, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য ইব্রাহীম খোকন, ইউটিউবার সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও ‘উৎসুক’ ব্যক্তি শিপন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের একজন শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম। তাঁর ভাই শরিফুল ইসলাম আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আরিফুল চাকরি সূত্রে নোয়াখালীতে চলে যান। ওখানেই তাঁদের বাড়ি এবং ২৯ মার্চ তাঁর বিয়ে ছিল। মোদির সফরকে ঘিরে যখন ঢাকায় ডামাডোল চলছে, তখনো তিনি নোয়াখালীতে। বিয়ের দুদিন পর তিনি গাজীপুরে আসেন। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিনে আরও চারজন গ্রেপ্তার হন। তাঁদের একজন রোকেয়া জাবেদ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গত ২৫ মার্চ পল্টন ও শাহবাগ থানায় দুটি এবং ২৭ মার্চ শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়। পল্টন থানার মামলায় হত্যাচেষ্টা, ‘মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র’ নিয়ে দাঙ্গা ঘটানো, বেআইনি সমাবেশ, সরকারি কর্মচারীকে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করা হয় ৫১ জনের নামে। এর বাইরে শাহবাগ থানায় ‘আসামি’ ছিনতাইয়ের অভিযোগে ১১ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় মতিঝিলের মামলায় গ্রেপ্তার আসামি আবুল কালাম আজাদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তোলা হয়। শাহবাগ থানার অপর মামলায় অভিযোগ ছিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বাসে আগুন দিতে উদ্যত হওয়া’।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, হয়রানির যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সেটা অসত্য। মতিঝিলের শাপলা চত্বরে তারা যেভাবে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাকে মধ্যযুগীয় বর্বরতা বলা যায়। যারা এসব করেছে, তাদের বড় অংশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং জামায়াত–শিবিরের কর্মী। অপরাধে জড়িত থাকার নিশ্চিত তথ্য পেয়েই তাদের ধরা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App