×

সারাদেশ

অবরোধ ও লকডাউনে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ঘরবন্দি জেলেরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২১, ০৭:২৩ পিএম

অবরোধ ও লকডাউনে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ঘরবন্দি জেলেরা

লকডাউনে জাল মেরামতের কাজ করছেন জেলেরা। ছবি: ভোরের কাগজ

অবরোধ ও লকডাউনে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ঘরবন্দি জেলেরা
অবরোধ ও লকডাউনে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ঘরবন্দি জেলেরা

মহামারি করোনাভাইরাস ও সরকার ঘোষিত লকডাউনে থমকে আছে দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া কর্মঠ মানুষের ভাগ্যের চাকা। জেলে ও কৃষকসহ অন্যান্য কর্মফেরত দিনমজুরেরা ঘরে বসে অলস সময় পাড় করছে। এসব দিন মজুরেরা কাজে যোগ দেওয়ার সুযোগ না থাকায় ঘরবন্দি জীবন কাটালেও এখন পর্যন্ত তারা কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা পায়নি বলে জানা গেছে।

তবে সারাদেশের ন্যায় চরফ্যাশনের মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী উপকূলের ১৯০ কিলোমিটার এলাকা মৎস্য অভয়াশ্রমে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সকল প্রকারের মাছ ধরা বা বেঁচাকেনা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। জেলেরা মার্চ থেকে শুরু করে চলতি এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত অবরোধের আওতায় থাকায় প্রকৃত কার্ডধারী অনেক জেলেই পায়নি সরকারি বরাদ্দকৃত চাল।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী এ অঞ্চলে ৪০ হাজার ২৬৪ জন জেলে রয়েছে। কার্ডধারী জেলে রয়েছেন ২১ হাজার ২১৫ এবং নতুন নিবন্ধনে (চলমান) জেলে রয়েছেন ১৫ হাজার ২৯০ জন। প্রত্যেক কার্ডধারী জেলে ২ মাসে ৮০ কেজি করে মোট ১ হাজার ৫ শত ২২ দশমিক ৬৪ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। তবে ১৯ হাজার ৩৩ জন কার্ডধারী জেলে এ পুনর্বাসনের চাল পেয়েছেন।

চাল না পেয়ে খালি বস্তা হাতে নিয়ে হতাশায় বাড়ি ফিরেছেন কার্ডধারী এবং কার্ড ছাড়া হাজারো জেলে।

সরকারি হিসেবে ৪০ হাজার জেলের প্রায় ৮০ হাজার পরিবার থাকলেও বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী চরফ্যাশনের উপকূলে জেলে রয়েছে প্রায় ১ লাখের মতো। এমন দাবি করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো।

উপজেলার ঘোষেরহাট গ্রামের ইব্রাহীম মাঝি বলেন, সরকারি তালিকায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের রাজনৈতিক সমর্থক এবং পরিচিত স্বজনেরা স্থান বেশি পাওয়ায় প্রকৃত জেলেরা বঞ্চিত রয়ে গেছে জেলে পুনর্বাসনের বরাদ্দ থেকে। উপজেলার মাদ্রাজ, হাজারীগঞ্জ, এওয়াজপুর, নীলকোমল ও নুরাবাদ ইউনিয়নের একাধিক জেলে বলেন, এ অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ১ লাখের মতো জেলে থাকলেও জেলে পুনর্বাসন কার্ড দেওয়া হয়েছে মাত্র ২১ হাজার জেলেকে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৩৩ জন জেলে পেয়েছে সরকারি বরাদ্দ। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, বাকি জেলেরা কোথায় এবং কার কাছে গেলে পরিবারের খাদ্যের বরাদ্দ পাবে।

তবে ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, গত ৪ মার্চ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ইউপি নির্বাচনী তফসীল ঘোষণা হলে ওই ৫টি ইউনিয়নে চাল বিতরণ কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ থাকলেও বর্তমানে তা বিতরণ করা হচ্ছে। এ উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৩৩ জন জেলে পুনর্বাসনে ১ হাজার ৫ শত ২২ দশমিক ৬৪ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার বলেন, চরফ্যাশনে ২১ হাজার ২১৫ জন কার্ডধারী জেলে রয়েছেন। বর্তমানে নতুন করে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। আরও ১৫ হাজার ২৯০ জন নতুন জেলেকে কার্ড দেওয়া হচ্ছে। তবে চরফ্যাশনের নদী ও সাগর উপকূলে বিভিন্ন জেলা থেকে মৎস্য শিকারে আসা অনেক জেলেই রয়েছে। এ এলাকায় জেলে কার্ডধারী এবং কার্ড ছাড়া প্রায় ১ লাখ জেলে থাকলেও সবাইকে জেলে পুনর্বাসনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App