×

জাতীয়

লকডাউনে চিকিৎসকদেরও হলো জরিমানা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২১, ১১:৫৯ পিএম

করোনা প্রতিরোধে চলমান সর্বাত্মক লকডাউনে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। এই সময়ে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসকদের বাইরে বের হতে বাধা নেই, মুভমেন্ট পাসও লাগবে না বলে জানিয়েছিলেন আইজিপি বেনজীর আহমেদ। তবে লকডাউনের প্রথম দিনেই রাজধানীতে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে আটকেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজন চিকিৎসককে ৩ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

এফডিআরএসের যুগ্ম মহাসচিব রাহাত আনোয়ার চৌধুরী বুধবার (১৪ এপ্রিল) রাতে গণমাধ্যমকে জানান, লকডাউনের প্রথম দিন বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকরা হয়রানির শিকার হয়েছেন। যদিও প্রজ্ঞাপনে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের লকডাউনের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।

এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকার কি মেনে নেবে আমি হাসপাতালে না গেলে? যদি ঘোরাঘুরি করতে যায় তাহলে আটকালে ঠিক আছে। কিন্তু আমি কাজ করতে যাচ্ছি। আমার কার্ড দেখাচ্ছি। এরপরও হয়রানি করা হয় তাহলে তো দুঃখজনক।

রাহাত আনোয়ার বলেন, আমার ধারণা অতি উৎসাহী কেউ কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমাদের এক চিকিৎসককে জাহাঙ্গীর গেট এলাকায় গালাগালি করা হয়েছে।

রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হওয়ায় স্কয়ার হাসপাতালের এক চিকিৎসককে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

স্কয়ার হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে কর্মরত চিকিৎসক নাজমুল হক গণমাধ্যমকে জানান, সপ্তাহে তিনদিন তিনি হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। তার বাবাও করোনাভাইরাস আক্রান্ত। এ কারণে গত কয়েকদিন গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ থেকে অফিস করছেন। বুধবারও নিজের গাড়িতে করে অফিসে যাচ্ছিলেন।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের সামনে চেকপোস্টে আমাকে পুলিশ সদস্যরা আটকায়। আমি জানি চিকিৎসকরা চলাচল করতে পারবেন। এ কারণে আমার আইডি কার্ড দেখাই। তারপরও আমার গাড়ির নামে ৩ হাজার টাকা জরিমানা লিখে দেয়।

এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউসিজি) অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, পরিচয় দেওয়ার পরও তার নামে মামলা দেওয়া উচিত হয়নি। যা হয়েছে ঠিক হয়নি, মহা-অন্যায় হয়েছে।

কর্মস্থলে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধা ও ভোগান্তিতে পড়ে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ক্ষোভ জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কৃষ্ণা হালদার নামে এক চিকিৎসক লিখেছেন, ‍গত রাতে কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার ‍উদ্দেশে ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার পিক-আপ করার সময় কারওয়ান বাজার সিগন্যালে ড্রাইভার আইডি কার্ড দেখানোর পরও পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করেছে। বারবার চেষ্টা করেও তিনি মুভমেন্ট পাস বের করতে পারেননি।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) কাজ করা নার্সরা বিপাকে পড়েন একদম সকালে। হাসপাতালটির আইসিইউর দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক শাহজাদ হোসেন মাসুম লিখেছেন, ‘‍আমার আইসিইউর নার্সদের বহনকারী অধিদফতর থেকে স্টিকারযুক্ত গাড়ি টঙ্গী থেকে আসার সময় আটকে রাখে পুলিশ এবং জানায় মুভমেন্ট পাস ছাড়া যেতে দেবে না। দুই ঘণ্টা আটকে থাকার পর তারা হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক ইফতেখারকে ফার্মগেটে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তিনি রাতের ডিউটি সেরে বাসায় ফিরছিলেন। পরে সাত কিলোমিটার হেঁটে রামপুরার বাসায় পৌঁছান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App