লকডাউনের আগে ব্যাংক ও বুথে টাকা তোলার হিড়িক
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২১, ১২:৪৮ পিএম
মতিঝিলে ব্যাংকে টাকা তুলতে গ্রাহকদের লম্বা লাইন। ফাইল ছবি
দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউনে বুধবার থেকে ব্যাংকগুলোও বন্ধ থাকবে। সে কথা মাথায় রেখে আগেই টাকা তুলে রাখতে ব্যাংকগুলোতে ভিড় করছেন গ্রহকরা। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) ব্যাংক লেনদেনের শেষ দিনে দেখা গেছে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়। রাজধানীর বেশির ভাগ ব্যাংকেই দেখা গেছে বাইরে লম্বা লাইন। লাইন রয়েছে এটিএম বুথগুলোতেও। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে তাগিদ দিচ্ছেন সবগুলো ব্যাংকই।
রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল, দিলকুশা দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকের উপচে পড়া ভিড়। ব্যাংকাররা বলছেন, সাত দিন বন্ধের খবরে আজকে স্বাভাবিক দিনের তুলনায় গ্রাহকের অনেক চাপ। তবে টাকা জমা দেওয়ার চেয়ে উত্তোলন বেশি করছেন গ্রাহকরা।
মতিঝিলে সব কটি ব্যাংকের সামনেই সকালে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে থেকেই ছিল লম্বা লাইন। সকাল ১০টার দিকে কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, দেড় ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে গ্রাহকদের বেশির ভাগের মুখে মাস্ক পরতে দেখা গেছে।
জনতা ব্যাংকের দিলকুশা শাখায় টাকা তুলতে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক গ্রাহক বলেন, ‘ব্যাংক বন্ধ থাকবে বলে টাকা তুলতে এসেছি। ৪০ মিনিট ধরে ব্যাংকের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ভেতরে একবার গিয়ে দেখে এসেছি অনেক ভিড়। আরও কতক্ষণ লাগবে, বুঝতে পারছি না।’
কারওয়ান বাজারেও একই চিত্র চোখে পড়ে। প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংকসহ প্রায় সব কটি ব্যাংকের ভেতরে ও বাইরে গ্রাহকের ভিড়। এমনকি বুথের সামনেও গ্রাহক উপস্থিতি অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি দেখা গেছে।
মোহাম্মদপুরে টাউনহলেও ব্যাংকগুলোতে ভিড় দেখা গেছে। পূবালী ব্যাংকের বাইরে ফুটপাতে গ্রাহকের লম্বা সারি চোখে পড়ে। গুলশানেও ছিল একই চিত্র। সকাল আটটা থেকেই ব্যাংকগুলোর সামনে মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সকাল নয়টার দিকে গুলশান ১–এ সিটি ব্যাংকের বাইরে প্রায় ৪৩ জন গ্রাহককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ব্র্যাক ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের সামনেও একই অবস্থা দেখা গেছে।
বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের মতিঝিল শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, সাত দিন বন্ধ থাকবে তাই আজকে গ্রাহকের অনেক চাপ। টাকা উত্তোলন বেশি করছে। সকাল থেকেই কর্মকর্তারা গ্রাহকদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩টা পর্যন্ত লেনদেন হবে। ব্যাংক খেলা থাকবে ৫টা পর্যন্ত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের ক্যাশ কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা পোস্টকে জানান, গ্রাহকের অনেক ভিড়, লেনদেনও বেশি হচ্ছে। স্বাভাবিক দিনের চেয়ে আজকে লেনদেন বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ সাত দিন ব্যাংক বন্ধ। মানুষ প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলন করে রাখছেন।
আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ব্যাংকের লেনদেন চলবে। সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন শুরুর আগে চাপ বাড়তে পারে, এ কারণে গতকাল সোমবার রাতে ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমা বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
আগামী ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল ব্যাংক বন্ধ থাকবে। এ সময়ে ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথ থেকে দিনে এক লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ উত্তোলন করা যাবে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এ দিন রাতে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নিজ ব্যাংকের বুথ ও অন্য ব্যাংকের বুথ থেকে একই সীমা প্রযোজ্য হবে।