×

জাতীয়

লকডাউনের আগে বাজারে উপচে পড়া ভিড়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৪৬ পিএম

লকডাউনের আগে বাজারে উপচে পড়া ভিড়

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। ফাইল ছবি

করোনা সসংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আগামীকাল বুধবার থেকে সারাদেশে কড়া লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে পাড়া-মহল্লায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংও করা হচ্ছে। আজ চাঁদ দেখা গেলে কাল থেকে শুরু হচ্ছে রমজান। এই অবস্থায় নিত্যপণ্য কিনতে বাজারে ভিড় করেছেন ক্রেতারা। মহল্লার বাজার থেকে শুরু করে সর্বত্র ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বুধবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীতে সকাল থেকে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল যাত্রাবাড়ী ও কারওয়ান বাজারে। এই সময় সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে পাইকারি আড়তদাররা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। শুধু সাধারণ ক্রেতা নয়, লকডাউনে পণ্য সরবর খুচরা ক্রেতাদেরই মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ছিল প্রায় অসম্ভব। ভিড়ের মধ্যে গাদাগাদি করেই দরদাম ও কেনাকাটা করছেন সবাই।

কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের কারণে মূলত বিক্রির বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সরবরাহ ভালো থাকায় সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। সবজি রেখে দিলে নষ্ট হয়ে যায়। কিছু জিনিস রেখে দিলে পরে বিক্রি করা যায়। সবজির বেলায় তা হয় না। তাছাড়া কাল থেকে লকডাউন। আজ বাজারে অনেক খুচরা ক্রেতা আসেন। যারা বেশি করে সবজি কিনছেন। কিন্তু কাল কার কাছে বিক্রি করব। রেখে দিলে নষ্ট হবে। তাই বিক্রেতারা কম দামেই সবজি ছেড়ে দিচ্ছেন।

বাজারে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে বেগুন ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। খুচরায় ৫ টাকা বেড়েছে টমেটোর দামও। ভালো টমেটার কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকায়। আর কাঁচা মরিচের কেজি ৪৫ থেকে ৬০ টাকা। শসার কেজি ৩৮ থেকে ৪৫।পাইাকারিতে লম্বা বেগুনের পাল্লা (৫ কেজি) ১২০ থেকে ১৩৫ টাকায়, গোল বেগুনের পাল্লা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, মরিচের পাল্লা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, (কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা) চ্যাপ্টা টমেটার পাল্লা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, লম্বা টমেটার পাল্লা ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি পাল্লা শসা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, প্রথম লক ডাউনের আগেই অনেকে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এতে দাম বেড়ে গিয়েছিল। তখন মাসের শুরুতে সবার কাছে টাকাও ছিল বেশি। অনেক ক্রেতারই বাজার করা হয়ে গেছে। তখন যারা কেনেন নি তারা এখন কিনছেন। তবে গত দুই তিন দিনেও অনেকে বাজার করেছেন।

আগে থেকেই চড়া চালের বাজারে নতুন করে দাম বাড়েনি। এর মধ্যে কেজিপ্রতি মোটা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, ২৮ চাল ৫৫-৫৬ টাকা, মাঝারি মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, ভাল মিনিকেট ৬৪ থেকে ৬৫ টাকায় এবং ভাল নাজির ৬৬-৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মুদিপণ্যের মধ্যে আগের সপ্তাহে বেড়েছিল রসুন ও আদার দাম। ছোলা খুচরা বাজারে ৫ টাকা বেড়েছে। প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। ডালের মধ্যে আমদানি করা মাঝারি আকারের মসুর ডাল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, দেশি মসুর ডাল ৫ টাকা কমে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকা, মুগডাল ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি রসুনের কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, আমদানি করা রসুন ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, দেশি আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, আমদানি করা আদা ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, প্যাকেট আটার কেজি ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, চিনি ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, কোম্পানি ও মান ভেদে লবণ ২৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মসলার মধ্যে জিরা ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা, মান ভেদে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেড়ে ছোট এলাচ ২৪০০ থেকে ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের মতোই প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১২৫ থেকে ১৩০, খোলা পাম অয়েল ১১০ থেকে ১১৫, সয়াবিনের এক লিটারের বোতল ১৪০, পাঁচ লিটারের বোতল ৬৪০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

খুচরা বাজারে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে দাম কিছুটা কমলেও বাড়তি বিক্রির চাপে বেড়েছে মুরগি ও পেঁয়াজের দাম। মুরগরি কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা এবং পেঁয়াজে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। খুচরায় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪২ টাকা এবং ভারতের পেঁয়াজ ৩৬ থেকে ৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সাপ্তাহেও দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং ভারতের পেঁয়াজ ৩২ থেকে ৩৪ টাকায় বিক্রি হয়। দাম বেড়েছে পাইকারি বাজারেও। প্রতি পাল্লায় ১০ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App