তীর না থাকা সমুদ্রে চক্রাকারে ঘুরছে স্রোত!
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২১, ০১:০০ পিএম
সারগ্যাসো সাগর
সমুদ্র থাকলে তার কোনো তীর নেই। কি অবিশ্বাস্য তো? তবে সত্যিই এমন সাগরের অস্তিত্ব রয়েছে। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে গেলেই তা দেখতে পাবেন। তীর না থাকা এই অদ্ভুত সাগরটির নাম সারগ্যাসো সাগর। সাগরটির দৈর্ঘ্য হলো ৩২০০ কিলোমিটার এবং প্রস্থে এটি প্রায় ১১০০ কিলোমিটার।
সারগ্যাসো সাগরটিকে নানা দিক থেকে ঘিরে আছে আটলান্টিক মহাসাগরের গালফ স্ট্রিম, আটলান্টিক কারেন্ট, ক্যানারি কারেন্ট এবং নর্থ-ইকুয়েটোরিয়াল কারেন্ট নামক এই চার ধরনের স্রোত।
এই চারটি স্রোত চক্রাকারে ঘুরে চলেছে সারগ্যাসো সাগরটির চারপাশে। এর ফলে সারগ্যাসো সাগরটি শান্ত অঞ্চল। অসংখ্য উপন্যাস ও গল্পে সারগ্যাসো সাগর সম্পর্কে জানা যায়। পর্তুগিজরা সাগরটির নাম রেখেছিলো সারগ্যাসো। এর পেছনে আবার কাহিনী রয়েছে।
সারগ্যাসো সাগরের বুকে তারা দেখেছিল সারগাসম নামে সামুদ্রিক শৈবালটি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। তবে যে সাগরটি কোনো কোনো জায়গায় আবার ভয়ানক। সাগরটির কোনো কোনো জায়গায় শৈবালের স্তর এতোই পুরুভাবে রয়েছে যে, সেখান দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারে না।
আবার অন্যদিকে, জলের স্রোত না থাকায় স্রোতের সাহায্যও পায় না জাহাজগুলি। ওইসব জায়গা দিয়ে জাহাজ চালাতে গেলে জাহাজের প্রপেলারে শ্যাওলা জড়িয়ে প্রপেলার বন্ধ হয়ে যেতে পারে অনেক সময়েই। ফলে একই জায়গায় অনির্দিষ্টকালের জন্যে আটকে যায় জাহাজগুলি।
একটি গল্প আছে, একবার একটি ইউরোপীয় জাহাজ প্রচুর ঘোড়া নিয়ে সারগ্যাসো সাগরে চলে আসে। সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বিক্রির উদ্দেশ্যে। তবে সারগ্যাসো সাগরে ঢোকার পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল জাহাজের গতি। জাহাজের ওজন কমিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য সব ঘোড়া জলে ফেলে দিতে বাধ্য হয়েছিল ওই নাবিকরা।
সারগ্যাসো সাগরটিকে চারদিক থেকে ঘিরে রাখা জলের স্রোতই বয়ে আনছে এই শৈবাল। জলের রং ঘন নীল ও এতটাই স্বচ্ছ যে উজ্জ্বল দিনে জলের নীচে ২০০ ফুট পর্যন্ত দৃষ্টি চলে যায়। তবে মানুষের জন্যেই আজ দূষিত হয়ে উঠেছে সারগ্যাসো সাগর।