×

খেলা

আশার কথা শুনিয়ে দেশ ছাড়ল টাইগাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২১, ১০:৩২ পিএম

আশার কথা শুনিয়ে দেশ ছাড়ল টাইগাররা

টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক

টেস্ট চ্যাম্পিয়ন শিপের দুই ম্যাচের সিরিজ খেলতে সোমবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১২টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভাড়া করা উড়ো জাহাজে লঙ্কার উদ্দেশে উড়াল দিয়েছে টাইগাররা। তিন ঘণ্টার যাত্রা শেষে কলম্বো পৌঁছে তারা। সেখান থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় নিগোম্বোতে। এখানে তিন দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে গোটা দলকে। রুম কোয়ারেন্টাইন পর্ব শেষে আগামী ১৫ ও ১৬ এপ্রিল সীমিত পরিসরে অনুশীলন করবে বাংলাদেশ দল। এরপর ১৭ থেকে ১৮ এপ্রিল হবে নিজেদের মধ্যকার দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। এই ম্যাচে সবার অবস্থা পর্যালোচনা করে ঘোষণা করা হবে টেস্ট সিরিজের মূল স্কোয়াড।

টাইগারদের জন্য ১৯ ও ২০ এপ্রিল থাকছে দুই দিন অনুশীলনের সুযোগ। অনুশীলন শেষে ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হবে মূল সিরিজের লড়াই। পরে দ্বিতীয় ম্যাচ হবে ২৯ এপ্রিল থেকে। দুটি ম্যাচই হবে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে। সিরিজ শেষে ৪ মে দেশে ফিরে আসবে বাংলাদেশ দল। ভারত, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সব ম্যাচ হেরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ টেবিলে শূন্য পয়েন্ট টাইগারদের। তবুও এই সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী মুমিনুল হকরা।

কলম্বোর উদ্দেশে যাত্রার আগে বিমানবন্দরে বাংলাদেশ দলের টিম লিডার খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস, শ্রীলঙ্কায় জেতার সামর্থ্য রয়েছে বাংলাদেশ দলের। এর পেছনে কারণ হিসেবে চেনা কন্ডিশন, ভালো উইকেটের কথা উল্লেখ করেছেন সুজন। অতীত পরিসংখ্যানও কথা বলছে সুজনের পক্ষে। ২০১৩ সালের শ্রীলঙ্কা সফরে একটি টেস্ট ড্র করেছিল বাংলাদেশ। পরে ২০১৭ সালের নিজেদের শততম টেস্টে পেয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ।

ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবারো জয়ের আশা সুজনের। তবে ঘরের মাঠে সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের কথাও মাথায় রেখেছেন বাংলাদেশের টিম লিডার। সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি আর করতে চান না তিনি। সুজন বলেছেন, ‘অবশ্যই আমরা চাই জিততে। আমরা ওখানে সেরা ক্রিকেট খেলতে চাই। যে দল ভালো খেলবে তারাই জিতবে। পাঁচ দিনের খেলা এ কারণে সেশন বাই সেশন ধরে এগোতে হবে। চট্টগ্রাম টেস্টে (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) আমরা চার দিন এগিয়ে থেকেও হেরে গেছি, এমনটা করতে চাই না। লম্বা সময় মনোযোগ ধরে রাখতে চাই। কন্ডিশনটা আমরা জানি, ওখানে এখন গরম থাকে বেশি। উইকেটটা ভালো থাকে। নিজেদের কন্ডিশনে শ্রীলঙ্কা বেশ শক্ত প্রতিপক্ষ, কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি আমরা স্কিলের দিক থেকে পিছিয়ে নেই। আমরা যদি আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারি, প্রক্রিয়াটা ঠিক রাখতে পারি, তবে আশা করি ভালো করব।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘যদিও আমরা শেষ টেস্ট ভালো করিনি। তবে আমরা জানি আমাদের সামর্থ্য আছে। আমরা নিউজিল্যান্ডে ভালো খেলতে পারিনি, কিন্তু শ্রীলঙ্কায় আলাদা পরিবেশে খেলব। আগেও খেলেছি, সেখানকার কন্ডিশনটা আমরা জানি। আমরা চেষ্টা করব আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে।

এবার নিয়ে ৭ বার লঙ্কা সফরে গিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এর আগে ৬ বার শ্রীলঙ্কা সফরে ১২টি টেস্টের মধ্যে ২০১৩ সালে একটি ড্র আর ২০১৭ সালে শত তম টেস্ট জয় ছাড়া সবকটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর তৃতীয় বিদেশ সফরে ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। ৬ সেপ্টেম্বর কলম্বোতে একমাত্র টেস্টে লঙ্কানদের কাছে ইনিংস ও ১৩৭ রানে হেরে যায় নাইমুর রহমান দুর্জয়ের দল। বড় হারের তিক্ততা পেলেও প্রাপ্তিও আছে। এ টেস্টেই সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে সেঞ্চুরি করেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ২১২ বলে ১১৪ রানের ইনিংসটি স্মরণীয় হয়ে আছে দেশের ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে। পরের বছর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আবারো শ্রীলঙ্কায় যায় বাংলাদেশ। দুই টেস্টের ভেন্যুই ছিল কলম্বো। এর মধ্যে ২১ জুলাই প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ১৯৬ রানে হারের পর দ্বিতীয় টেস্টে টাইগারদের হার ২৮৮ রানে। তিন বছর পর ২০০৫ সালে তৃতীয় বারের মতো শ্রীলঙ্কা সফরে যায় বাংলাদেশ। দুই টেস্টের ভেন্যু এবারো কলম্বো।

হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে সে সিরিজের দুটিতেই বাংলাদেশ হারে ইনিংস ব্যবধানে। ১২ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের হার ইনিংস ও ৯৬ রানে। পরের টেস্টে টাইগারদের হার ইনিংস ও ৬৯ রানে। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর কালেভদ্রে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে বাংলাদেশ দলের। এর মধ্যে ২০০৭ সালে মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা সফরে যায় টাইগাররা। কলম্বোতে দুই টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর ক্যান্ডিতে শেষ টেস্টেও ইনিংস ও ১৯৩ রানে হারে বাংলাদেশ। হোয়াইটওয়াশের তিক্ততা নিয়ে দেশে ফিরে মোহাম্মদ আশরাফুলের দল।

৫ বছর পর ২০১৩ সালে পঞ্চম বারের মতো শ্রীলঙ্কা সফরে যায় বাংলাদেশ দল। ২০১৩ সালের ৮ মার্চ গলে প্রথম টেস্ট খেলে টাইগাররা। শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম বারের মতো ড্রয়ের দেখা পায় মুশফিকুর রহিমের দল। টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। সে টেস্টে মোহাম্মদ আশরাফুল করেছিলেন ১৯০ রান। গলে ড্র করার পর কলম্বোতে দ্বিতীয় টেস্টে আবারো সেই পুরনো ছন্দে বাংলাদেশ। ৭ উইকেটের হার নিয়ে দেশে ফিরে। ২০১৭ সালে টেস্ট ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেয় বাংলাদেশ। মার্চে ষষ্ঠ বারের মতো শ্রীলঙ্কায় যায় বাংলাদেশ। ৭ মার্চ গলে প্রথম টেস্টে ২৫৯ রানে হারের পর দ্বিতীয় টেস্টে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। কলম্বোতে শত তম টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। সাকিবের সেঞ্চুরিতে লঙ্কানদের মাটিতে আসে প্রথম জয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App