×

জাতীয়

বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদে শান্তিরক্ষাই বড় চ্যালেঞ্জ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২১, ১১:১৮ পিএম

বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদে শান্তিরক্ষাই বড় চ্যালেঞ্জ

ঢাকা সেনানিবাসে মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে ‘আর্মি চিফ’স কনক্লেভ’ শীর্ষক সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ও বাংলাদেশ ভারতের সেনা প্রধানসহ দেশি-বিদেশি অতিথিরা। ছবি: আইএসপিআর

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, শুধু সংঘাতপূর্ণ এলাকায় নয়, বাংলাদেশ চায় পুরো বিশ্বেই শান্তির সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ুক। রবিবার (১১ এপ্রিল) সকালে সেনা সদরে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আয়োজনে প্রতিবেশী তিন দেশের সমন্বয়ে দেশে চলমান ‘শান্তির অগ্রসেনা’ অনুশীলন উপলক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন, ভারতের সেনাপ্রধানসহ ভুটানের ডেপুটি চিফ অব অপারেশন এবং শান্তিরক্ষা মিশনের দুজন ফোর্স কমান্ডার। বহুজাতিক এই সেমিনারে বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের সময়ে শান্তিরক্ষাই বড় চ্যালেঞ্জ।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে বলে তিনি দৃঢ় চিত্তে জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান বিশ্বে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সংঘাতগুলো আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিরোধের চেয়ে তীব্রতর হয়ে উঠছে। তিনি তার বক্তব্যে কয়েকটি সমস্যার উপর আলোকপাত করে বলেন, বর্তমান সংঘাতগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহার পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রা যুক্ত হয়েছে, প্রযুক্তির অস্ত্রায়নে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বিরূপ ভূমিকা রয়েছে এবং চলমান বৈশ্বিক মহামারীর কারণে শান্তিরক্ষার প্রকৃতি রূপান্তরিত হয়েছে। এই নজিরবিহীন বৈশ্বিক মহামারীর ফলে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অর্থবহ পারস্পরিক সহযোগিতা, নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জরুরি অবস্থার উন্নয়ন খুবই জরুরি বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল আজিজ বলেন, ২০২২ সাল নাগাদ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নারী সদস্য আরো বাড়াবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, অরাষ্ট্রীয় শক্তির উত্থান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, রাজনৈতিক সংকট এবং পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত অবস্থানের কারণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অপারেশন ক্রমশই চ্যালেঞ্জিং এবং জটিল হয়ে পড়ছে। তাঁর মতে বর্তমান সময়ে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে শান্তিরক্ষা মিশনগুলো পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বেসামরিক নাগরিকদের জীবন রক্ষার জন্য শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে প্রথাগত কৌশলগুলো সংশোধনের উপর প্রাধান্য দেন। বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শান্তিরক্ষীদের সক্ষমতা বাড়ানো কমিউনিটি-বেজড ইনফর্মেশন শেয়ারিং, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, জাতিসংঘ সনদের পরিমার্জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো তৈরির উপর জোর দেন জেনারেল আজিজ।

ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নাভারানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের উদীয়মান চ্যালেঞ্জ এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার কিভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোকে অত্যন্ত কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং করে তুলার বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, কিভাবে যুদ্ধাঞ্চলগুলোতে সংঘাতের গতি প্রকৃতি ভিন্ন বলয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সে বিষয়ে ভাবতে হবে। সশস্ত্র দলগুলো কীভাবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে সে বিষয়গুলোও তিনি তার বক্তব্যে উপস্থাপন করেন। বর্তমানে শান্তিরক্ষীরা কি ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে তা তুলে ধরে এই চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবেলায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, জাতিসংঘের মতবাদে নমনীয়তা, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, যথোপযুক্ত লজিস্টিকস সহায়তা নিশ্চিতকরণ এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাজেট বাজেট বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App