×

সারাদেশ

শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফাহমিদ খুন, ঘাতক ভাই পলাতক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২১, ০৪:৫০ পিএম

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার জামালপুর সীমান্ত এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফাহমিদ মণ্ডল (৪০) খুন হয়েছেন। সৎ ভাই মিলন মণ্ডল তাকে গলা কেটে হত্যা করেন। রবিবার (১১ এপ্রিল) সকালে জামালপুর সীমান্তের একটি চায়ের দোকানে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। পুলিশ নিহত ফাহমিদের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। ঘাতক সৎ ভাই মিলন পলাতক রয়েছেন। তাকে ধরতে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চলছে। নিহত ফাহমিদ মণ্ডল ও ঘাতক মিলন মণ্ডল জামালপুর সীমান্তের আব্দুস সাত্তার ওরফে নান্দু ডাকাতের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, দৌলতপুর সীমান্তের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফাহমিদ মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে মাদকের কারবার চালিয়ে আসছিলেন। ২০০৭ সালে র‍্যাবের তাড়া খেয়ে বাড়ির পার্শ্ববর্তী সীমানা দিয়ে ভারতে পালাতে গিয়ে তিনি বিএসএফের হাতে আটক হন। টানা ১২ বছর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি কারাগারে বন্দি ছিলেন ফাহমিদ। এক যুগ পর কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ২০১৯ সালের মার্চে দেশে ফেরেন। এরপর ফের মাদক ব্যবসায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন। এছাড়া নারীঘটিত নানা অভিযোগও রয়েছে ফাহমিদের বিরুদ্ধে। তার অত্যাচারের ভয়ে এলাকার মেয়েরা ঠিকমতো ঘর থেকে বেরোনোরও সাহস পেতো না। এমনকি সম্প্রতি সৎ ভাই মিলন মণ্ডলের সদ্য বিয়ে হওয়া কন্যার দিকেও কুনজর পড়ে ফাহমিদের। এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে মিলন সৎ ভাই ফাহমিদকে খুন করেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল ৮টার দিকে ফাহমিদ মণ্ডল বাড়ির পাশে ভাগজোত সীমান্ত এলাকার এনামুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এসময় আরো চার থেকে পাঁচজন সেখানে চায়ের আড্ডায় ছিলেন। একপর্যায়ে সৎ ভাই মিলন মণ্ডল সেখানে উপস্থিত হয়ে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে পেছন থেকে ফাহমিদের গলার ডান দিকে সজোরে কোপ দেন। এক কোপেই গলার বেশিরভাগ অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরে আরেকটি কোপ দিয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু নিশ্চিত করার পর লাথি মেরে ফাহমিদকে চেয়ার থেকে নিচে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান মিলন।

এ হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দৌলতপুর- ভেড়ামারা সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত, দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহুরুল আলম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহাদাৎ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেন। এসময় পুলিশ নিহত ফাহমিদ মণ্ডলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

এদিকে সীমান্তের এই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর হত্যার ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করলেও অনেকের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়েছে। নারীলিপ্সু ফাহমিদের যৌন অত্যাচারের কারণে বাড়িঘরের জানালা খুলে রাখারও উপায় ছিল না বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহাদাৎ হোসেন জানান, নিহত শীর্ষস্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ফাহমিদ মণ্ডলের বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকটি মামলা রয়েছে। ঘাতক সৎ ভাই মিলন মণ্ডলের বিরুদ্ধেও মাদক সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। মেয়েঘটিত ও জমিজমা সম্পর্কিত পারিবারিক পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়। এছাড়া হত্যার পেছনে মাদকের বিষয়ও থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে তদন্ত করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App