×

জাতীয়

বাজেটে গুরুত্ব পাবে স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত : অর্থমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২১, ০৭:২১ পিএম

আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের সম্পদকে যথাযথভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের মাঝে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি গ্রামীণ অবকাঠমো, কৃষি খাতও প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

রবিবার (১১ এপ্রিল) অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় (ভার্চুয়ালি) সভা শেষে সাংবাদিকদের এ সব কথা জানান অর্থমন্ত্রী।

সভায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান, ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম. সাইদুজ্জামান, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. আতিউর রহমান, সাবেক সিনিয়র অর্থসচিব ড. মোহাম্মদ তারেক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার, নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ. মনসুর, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.আবুল বারকাত, সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএম আকাশসহ দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে পরবর্তী বাজেটে প্রণয়নে তাদের পরামর্শ দেন।

সভা শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে। তার আগে বিভিন্ন পেশাজীবীদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনার অংশ হিসেবে দেশের স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাদের সব পরামর্শ আমরা রেকর্ড করেছি। এরপর যারা বাজেট প্রণয়ন করছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে অর্থনীতিবিদদের পরামর্শগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। গত বছরও করোনাভাইরাসের মধ্যে বাজেট প্রণয়ন করতে হয়েছে। এ বছরও একই অবস্থা। করোনাভাইরাস একটা আন্তর্জাতিক সমস্যা। এ সময় শুধু দেশিয় বিবেচনায় কিছু করা সম্ভব নয়। কাজেই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সব সময় দেশের সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তার ওপর জোর দিয়ে আসছেন। তার নির্দেশে আমরা জনকল্যানমুখী বাজেট প্রণয়নে চেষ্টা করছি। যেসব খাত সরাসরি জনগণের স্বার্থের সঙ্গে জড়িত আগামী বাজেটে সেসব খাতের ওপর জোর দেওয়া হবে। বিশেষ করে গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ নজর থাকবে। যাতে জনগনের হাতে টাকা-পয়সা যেতে পারে। কারণ আমরা একটি ব্যতিক্রম সময়ে বাজেট প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা তাদের আলোচনায় এসব বিষয় তুলে ধরেছেন। তারা জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নের ওপর বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী বাজেটে এসব খাতে বরাদ্দ বাড়বে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সভায় আমাদের আয়কর আদায়ের হার বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় আমাদের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও অনেক কম। যেসব পণ্যের ওপর যে হারে ট্যাক্স আদায় করা উচিত আমাদের এখানে সে হারে আদায় হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রেই ট্যাক্স মওকুফ করা হয়ে থাকে। যেমন সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে এ ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। আমারা চেষ্টা করছি ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাড়ানোর জন্য। সভায় সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, অর্থনীতিবিদরা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ সম্পর্কে প্রশংসা করেছেন। তবে এই প্যাকেজ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি যেসব খাত প্রণোদনা সুবিধা পায়নি সেগুলোকেও প্যাকেজের আওতায় আনার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

আগামী বাজেটে করপোরেট ট্যাক্স কামনো প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে করপোরেট ট্যাক্স কমিয়ে আনা হচ্ছে। চলতি বাজেটে এটা কমানো হয়েছে, আগামী বাজেটেও বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। বর্তমান বৈশ্বয়িক বিপর্যয়ে দেশিয় শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবটাই করা হবে। দেশে কালো টাকা বলে কিছু নেই। আছে অপ্রদর্শিত অর্থ। এটা ঘোষণা দিয়ে নিয়ম অনুযায়ী তা সাদা করার নিয়ম এখনো আছে। এই অর্থ বিশেষ করে জায়গা-জমি বা এ ধরনের সম্পত্তি ক্রয়ে বিনিয়োগ করা হয়। জমি রেজিষ্ট্রেশনে বেশি দামে কিনে কম দাম দেখিয়ে কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। এটা বন্ধ করার জন্য ডিজিটাইলেশন করার কাজ চলছে। এটা পুরোপুরি হয়ে গেলে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ হবে।

লকডাউনের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে আছেন। আগেও তাদের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছেন। এবারও হয়তো সেভাবে সাহায্য করবেন। প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে নির্দেশনা দেবেন আমরা সেভাবেই কাজ করব বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App