‘যেখানে স্পর্শে স্পর্শ মেলে’ , সেখানেই শান্তির পরশ। কিন্তু এই করোনা কালে স্পর্শ কি সত্যিই নিরাপদ? মোটেই নয়। মহামারী এই কালে প্রিয়জনকে স্পর্শ করে আশ্বাস দিতে না পারলে আর কি-ই বা করার থাকে? মানুষের চিরন্তন আবেগের এই নরম অনুভূতির কথা ঠিকই উপলদ্ধি করতে পেয়েছিলেন ব্রাজিলের এক নার্স। তাই তিনি ছোঁয়া বাঁচিয়ে রাখার প্রায় প্রয়োজনীয় শর্তের মাঝেও করোনা রোগীদের ‘স্পর্শসুখ’দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করেছেন কৃত্রিম ‘করতল’। যা ব্যবহারে মনে হবে, প্রিয়জনের ছোঁয়া আপনার সঙ্গেই রয়েছে। তার এই আবিষ্কার ইতিমধ্যেই ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সকলেই তার প্রশংসায় মুখর। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।

বছর ঘুরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আবারও হানা দিয়েছে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ। এর ব্যতিক্রম নয় ব্রাজিলও। এখানেও প্রতিদিন বেড়েই চলেছে কোভিড রোগীর সংখ্যা। হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে ভিড়। এমনই এক হাসপাতালের কর্মী ওই মহিলা। মহামারী থেকে ছোঁয়া বা স্পর্শ বাঁচাতে রোগীর পরিজনদের চোখের দেখাটুকুও করতে দেওয়া হচ্ছে না। শরীরের পাশাপাশি মনের জোরও তাই কমেছে করোনা যুদ্ধে শামিল রোগীদের। এই অবস্থায় নার্সের ভাবনায় এল স্পর্শানুভূতির নতুন ধারনা। করোনা আক্রান্তদের প্রত্যেকের হাতে তিনি তুলে দিয়েছেন দু’টি করে কৃত্রিম করতল। যাতে মনে হয় দু’হাতে তাদের হাতটি জড়িয়ে রেখেছে কেউ। হোক না কৃত্রিম, তাতেই রোগীরা স্বস্তি পাচ্ছেন, কমছে যন্ত্রণা।

কীভাবে তিনি তৈরি করলেন এই কৃত্রিম করতল? স্রেফ একজোড়া রবারের গ্লাভস আর উষ্ণ পানিতেই সমস্যার সমাধান। গ্লাভসের মধ্যে ওই পানি ভরে তাকে হাতের তালুর মতো করে বানানো হয়েছে। সেই গ্লাভস জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রোগীর আঙুলের ফাকে। তাতেই রোগীরা টের পাচ্ছেন, নরম, উষ্ণ হাতের ছোঁয়া। সম্প্রতি ব্রাজিলের এক সাংবাদিক টুইট করে বিষয়টি সামনে এনেছেন। তারপর তা সাড়া জাগিয়েছে ব্যাপকভাবে। সকলে তার এই প্রয়াস দেখে উচ্ছ্বসিত, ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তাকে। বলা হচ্ছে, কৃত্রিম হলেও এই সংকটকালে বাস্তবের কিছুটা ছোঁয়া দিয়ে রোগীদের দ্রুত সুস্থ করে তুলতে ব্রাজিলীয় নার্সের এই পদক্ষেপ অতুলনীয়।