জীবন রক্ষা এখন বড় চ্যালেঞ্জ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ১২:১৫ এএম
দেশে দ্বিতীয়বার করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে চলায় চলাফেরার বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব নির্দেশনা ভেঙে পড়ছে। রাজধানীবাসীও ঘরে থাকা মানছে না। মাস্ক ছাড়াই অফিস, আদালত, বাজার, গণপরিবহনে চলাফেরা করছে মানুষ। সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমতাবস্থায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ বিপর্যয় নামতে পারে। পোশাক কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট, শপিংমল চালু রাখার কারণে সড়কে মানুষের চলাচল বেড়ে গেছে। জানা গেছে, এপ্রিলের শুরু থেকে করোনা সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। আগামী দুই সপ্তাহে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে অনেক বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গত কয়েকদিনে যেভাবে প্রতিদিন রোগী শনাক্ত হচ্ছে তাতে গতবারের পিকের (জুন-জুলাই) চেয়েও পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সত্ত্বেও পোশাক কারখানা, দোকানপাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত অর্থনীতির ক্ষতি এড়ানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু এটা কতটা যুক্তিযুক্ত সেটা ভাবার বিষয়। দেশের আক্রান্তের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহের দিকে যাচ্ছে। তবে করোনা থেকে মানুষকে বাঁচাতে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেবেন বলে গতকাল প্রধানমন্ত্রী পুনরায় অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এর আগে করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ২৯ মার্চ যে ১৮ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল, তাতে দোকানপাট-শপিংমল ও গণপরিবহন বন্ধের নির্দেশনা ছিল। এ নির্দেশনা কিছু দোকান মালিক শ্রমিক মানছে না। রাজধানীর নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে দোকান খোলা রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন দোকান মালিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এমন অবস্থায় গতকাল থেকে দোকানপাট খুলে দিয়েছে সরকার। তবে তাদের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের চিত্র ছিল একেবারেই নাজুক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৭৪ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত দেশে মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ৯ হাজার। আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি ও মৃত্যুর প্রধান কারণ হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব না মানা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার সামাজিক দূরত্বের বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করছে। অথচ আমরা কী করছি? কী করে গার্মেন্ট মালিকরা এটা চিন্তা করলেন, শত শত কর্মী পাশাপাশি বসে একসঙ্গে কাজ করবে? বাংলাদেশে করোনা মহামারি ইউরোপ-আমেরিকার মতো ব্যাপক সংক্রমণ ও প্রাণঘাতী রূপ নিলে দেশের সামাজিক বাস্তবতা ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবে আতঙ্কিত হতে হয়। আমরা বলব বাংলাদেশকে আরো সতর্ক ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জীবন রক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষতি ন্যূনতম মাত্রায় রাখাÑ এই উভয় কূল রক্ষার চ্যালেঞ্জে সবাইকে বিচক্ষণতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।