×

জাতীয়

বিএনপি দমনে মরিয়া সরকার : মির্জা ফখরুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২১, ০৪:১৪ পিএম

সরকার মহামারী করোনা মোকাবেলা নয় বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর । বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে বিএনপি মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফরিদপুরের সালথায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও ইতোমধ্যে ২১ জন গ্রেফতার এবং হয়রানি-নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারসহ গ্রেপ্তারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি ও সালথায় স্বাভাবিক শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানান।

তিনি বলেন, ফরিদপুরের সালথায় গত ৫ এপ্রিল করোনা মোকাবেলায় সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় একজন পদস্থ সরকারী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার কর্মচারী কর্তৃক একজন দোকান কর্মচারীকে নির্মমভাবে নির্যাতনের প্রতিবাদে স্থানীয় জনসাধারন ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। জনসাধারণের বিক্ষোভ দমন করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ ও একজনকে হত্যার পর উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে উল্টো বিএনপি এবং এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার সাধারণ মানুষকে আসামী করে মিথ্যা মামলা দায়ের প্রমাণ করে সরকার মহামারী করোনা মোকাবেলা নয়, বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সালথায় চার হাজার জনকে অজ্ঞাত রেখে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার ৮৮ জনের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে সালথায় পুলিশি গ্রেফতারি অভিযানের কারণে সারা এলাকা মানুষশুণ্য হয়ে গেছে। সেখানে ভয়, আতঙ্ক ও বিভীষিকাময় পরিবেশ বিরাজ করছে। গ্রেপ্তাতারের নামে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে নিরীহ মানুষকে হয়রানী ও নির্যাতন করা হচ্ছে। সালথার ঘটনার সঙ্গে বিএনপি কোনভাবে জড়িত না থাকলেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, অথচ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে-সালথার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের উস্কানি ছিল।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকারের উদাসীনতা, ব্যর্থতায় বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে গত বছরের তুলনায় করোনা ভাইরাস মহামারী এখন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্বের বছরের মতোই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে সরকার। পরিস্থিতির ভয়াবহতা রোধে সরকার কোন চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে গত ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য দেশে লকডাউন জারি করেছে। সরকার ঘোষিত লকডাউনের বিরুদ্ধে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। প্রকৃত অর্থে লকডাউন বলতে যা বোঝায় রাস্তাঘাটে তার কোন সামান্যতম চিত্রও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কেবলমাত্র দেশের বড় বড় মার্কেট, শপিং মল ছাড়া সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ীসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।

ফখরুল বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের বাস্তব ভিত্তিক ও পরিকল্পিত কোন পদক্ষেপ নেই। ফলে সরকার লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হচ্ছে। জোরপূর্বক নির্যাতন-নিপীড়ণ চালিয়ে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এখন জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে সরকার। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতাও নেই তাদের। ১২ বছরের অধিক কাল ভয়াবহ দুঃশাসনের জন্য জনগণের নিকট সরকারকে জবাবদিহি করতেই হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App