×

পুরনো খবর

বাড়ছে সংক্রমণ, কমছে সচেতনতা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২১, ১২:১৫ এএম

বাড়ছে সংক্রমণ, কমছে সচেতনতা
বৈশ্বিক মহামারি করোনা নামক ভাইরাসটি এখন একটি আতঙ্কের নাম। অতি শক্তিশালী এই ভাইরাসটির সংক্রমণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে স্থবিরতা সৃষ্টি করেছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে। সর্বপ্রথম চীনের উহুান নামক প্রদেশে ভাইরাসটির সূচনা হলেও পর্যায়ক্রমে তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশগুলোতে তাণ্ডব চালিয়েছে। তারপর এশিয়ার দেশগুলোতেও কমবেশি ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায়ও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ভাইরাসটি তাণ্ডব চালিয়েছে। যার প্রভাবে দেশের অর্থনীতিতে স্থবিরতা, শিক্ষা ব্যবস্থায় অচলাবস্থা এবং মানুষের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও কমবেশি অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে আমাদের দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ওপর এক ধরনের মানসিক সমস্যা বিরাজ করেছিল। বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ ব্যাপক। তার চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি শহরের রাস্তাঘাটে, গণপরিবহনে, বিভিন্ন জনসমাগমে এবং গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে। সেখানে মাস্কের ব্যবহার নেই ক্রেতা এবং বিক্রেতার মাঝে। গণপরিবহনে গাড়ির চালক, হেলপার এবং যাত্রীদের মাঝে সিংহভাগ মাস্কবিহীন যাতায়াত করতেছেন। আর যদি মাস্ক ব্যবহার করেন তাও সংখ্যায় নগণ্য। মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বেশকিছু নির্দেশনা জারি করে, যা আমাদের দেশে বাস্তবায়ন করাটা দুরূহ ব্যাপার। তারপর ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ এখন শুধু ব্যানার এবং কাগজে কলমে। দেশের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোতে এমনটা বাস্তবায়ন খুবই কঠিন। গত ৫ এপ্রিল বাংলাদেশের সংক্রমণের চিত্র পর্যালোচনা করলে বলা যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৫২ জন, আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৭৫ জন এবং মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩০ হাজার ২৩৯ জনের, যা পূর্বের তুলনায় অধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলা যায়। এমন পরিস্থিতি দেখে সরকার দেশে ১ সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেন। যাতে সতর্কতামূলক চলাফেরা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। বাংলাদেশে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা অধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মারা যাচ্ছেন শিশু, যুবক এবং বৃদ্ধ মানুষ। শীতকালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহ চিত্রের কথা বিভিন্ন বিশ্লেষকরা উল্লেখ করলেও শীতে এতটা তাণ্ডব চালাতে পারেনি। তবে এ বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে এসে আরো শক্তিশালী হচ্ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা। এদিকে জনসাধারণের স্বাস্থ্যবিধি পালনের ক্ষেত্রে অবহেলা, অসচেতনার চিত্র আমাদের দৃশ্যমান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সচেতনতার মাপকাঠি কতটুকু? আমরা কি সচেতনতার মাধ্যমে আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারব? হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব মানতেছি কতটুকু?ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি আমাদের দেশে এমনটা বাস্তবায়ন করা খুবই দুষ্কর। দৈনন্দিন জীবনে আমরা উপেক্ষা করতেছি স্বাস্থ্যবিধি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৪১তম বিসিএস (প্রিলি) এবং ২০২০-২১ সেশনের মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা স্বাস্থ্যবিধি মেনে নেয়া হলেও পরীক্ষার কেন্দ্রের বাইরের চিত্র ছিল ভিন্ন। পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে গাদাগাদি করে সাক্ষাৎ করতে দেখা গেছে। এতে কি বলা যায় বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ কমবে? দেশের বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা স্বাস্থ্যবিধি মোটেই মানছেন না। গণপরিবহনগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে। এতে করে স্বাস্থ্য সুরক্ষার পরিবর্তে স্বাস্থ্যের অবনতি হবে বলা যায়।সারাদেশে সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছেন। যার সময়সীমা হচ্ছে ৫-১২ এপ্রিল পর্যন্ত। এতে বন্ধ থাকবে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী ট্রেন এবং নৌযান। অভ্যন্তরীণ পথে বন্ধ থাকবে বিমান চলাচল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। খোলা থাকবে জরুরি সেবা দেয় এমন প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, নিত্যপণ্যের দোকান, পণ্যবাহী যানবাহন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প কলকারখানা চালু থাকবে। উল্লেখ্য, আমাদের দেশে জনসাধারণের সচেতনতাই নির্দেশ করে আমরা করোনা মোকাবিলায় কতটুকু প্রস্তুত? সুতরাং এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতার বিকল্প নেই। তবেই রক্ষা পাবে দেশের মানুষ, দূরীভূত হবে ভাইরাস। পাবো সুুন্দর একটি দেশ, সুুন্দর একটি পৃথিবী। মো. আকিব হোসাইন শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App