×

সম্পাদকীয়

রায় দ্রুত কার্যকর হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২১, ১২:০৭ এএম

ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার দুই বছর পার হলো। ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে গেলে হল থেকে ডেকে পাশের ভবনের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় তাকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার চেষ্টা চালায়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। অগ্নিসন্ত্রাসের এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। ওই বছর ২৮ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাহসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। মাত্র ৬১ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ করে ৬২ কর্মদিবসে রায় দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় অভিযুক্ত ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন। রায়ে তৎকালীন পুলিশের এসপি ও ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ ৪ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। পরে মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি খালাস চেয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সচিত্র ঘটনাপ্রবাহ ব্যবহার করা হয় মামলার রায়ে। দীর্ঘ দেড় বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও রায় কার্যকর না হওয়ায় নুসরাতের স্বজনদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর থেকে রাফির কণ্ঠে ছিল প্রতিবাদ ও সাহসী এক নারীর প্রতিচ্ছবি। সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় থেকে তিনি তার ওপর বর্বরোচিত হামলার বর্ণনা দিয়েছেন। ইস্পাতকঠিন কণ্ঠে বলেছেন, অপরাধীরা যেন কোনোভাবেই ছাড় না পায়। আদালত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, নুসরাতের চাওয়া পূরণ হয়েছে, তার আত্মা শান্তি পেয়েছে। এই রায়ে বিচার ব্যবস্থায় দেশের মানুষের নতুন করে আস্থার জায়গা মজবুত হয়েছে। কারণ নুসরাতের করুণ মৃত্যুতে লজ্জার সাগরে ডুবেছিল জাতি। অকাল মৃত্যু হয়েছে একটি স্বপ্নের। শিক্ষায়তনও যে একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেলেন তিনি। এ দায় আমাদের সবার। রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে জাতি কিছুটা হলেও দায় থেকে মুক্তি পাবে। রায়ের দেড় বছর পরও সাজা কার্যকর না হওয়া অপ্রত্যাশিত। জরুরি ভিত্তিতে উচ্চ আদালতের আপিল শুনানি শেষে দ্রুত সাজা কার্যকর করা হোক। আমরা আশা করব এ রায় যেন উচ্চ আদালতেও বহাল থাকে এবং দ্রুত আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। ভয়ংকর অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই দেশের মানুষ ও নুসরাতের পরিবার-পরিজন স্বস্তি বোধ করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App